ইউনাইটেড স্পোর্টস-১ (কার্লোস)
ডেম্পো-০ |
কল্যাণীতে ‘ফোলহা সেকা’!
পর্তুগিজ শব্দ ‘ফোলহা সেকা’-র বাংলা ‘ঝরা পাতা’। বিশ্বকাপ ফুটবলে ১৯৫৮ সালে যে বার পেলের আবির্ভাব, সেই বিশ্বকাপের সেরা ফুটবলার ছিলেন ব্রাজিলের মিডফিল্ডার ওয়ালদির পেরিরা। ফুটবল বিশ্ব যাঁকে চেনে ডিডি নামে। সেই ডিডি মারতেন ‘ফোলহা সেকা’ ফ্রি-কিক। শূন্য থেকে ঝরা পাতার মতো কাঁপতে কাঁপতে নেমে হঠাৎই অদ্ভুত বাঁক খেয়ে গোলে ঢুকে যেত।
শুক্রবার কল্যাণীতে আর্মান্দো কোলাসের ডেম্পোকে হারিয়ে দিল এ রকমই এক পাতা ঝরা ফ্রি-কিক। সাতোরির দলের হয়ে যা মারলেন তাঁর কোস্তারিকান বিশ্বকাপার কার্লোস হার্নান্ডেজ।
পাতা ঝরা ফ্রি-কিকের পেটেন্ট যার হাতে সেই ডিডি অনুশীলনে বেশি খাটতেন না। কার্লোসও সে রকম। হালে দলের ব্রাজিলীয় ফিজিক্যাল ইনস্ট্রাকটর গার্সিয়ার কথায় অনুশীলনে মতি ফিরেছে তাঁর। এ দিন ৮৯ মিনিটে বক্সের সামনে থেকে কার্লোসের সোয়ার্ভিং ফ্রি-কিকে গোলের পর গার্সিয়া মাতৃভাষা পর্তুগিজে যখন বলছেন, “নাদা হেসিস্তে আও ত্রাবালহো’ (পরিশ্রমের বিকল্প নেই) তখন দুষ্টুমিষ্টি হাসি কার্লোসের মুখে। ম্যাচের নায়ক খেলা শেষে বলছিলেন, “সল্টলেকে কৃত্রিম মাঠ। এখানে ঘাসের মাঠ পেলাম। সেখানে বল রেখে খেললে কী হতে পারে তা আমি জানি।” মর্যাদার ম্যাচ জিতে সতীর্থ র্যান্টি তখন বলছেন, “কার্লোসের অ্যাসেট ফ্রি-কিক।” আর তাঁদের গোলে দাঁড়িয়ে দলকে নির্ভরতা দেওয়ার কারিগর সংগ্রাম মুখোপাধ্যায় বললেন, “বেন্ড ইট লাইক বেকহ্যাম নয়। এটা কার্ল ইট লাইক কার্লোস।”
এ দিন দ্বিতীয়ার্ধে আর্মান্দোর দলকে নিয়ে প্রায় ছেলেখেলা করছিলেন কার্লোস, লালকমল, র্যান্টিরা। মহেশ গাওলিদের গোলকিপার শুভাশিস সক্রিয় না থাকলে অনেক আগেই গোল পেয়ে যেতেন র্যান্টি-কার্লোস জোড়া ফলা। ডাউন দ্য মিডল আক্রমণে তখন আর্মান্দোর দলকে সরষেফুল দেখাচ্ছেন শঙ্কর, আসিফরা। ৮৫ মিনিটে শঙ্করকে ফাউল করে লেফট ব্যাক দেবব্রত রায় লাল কার্ড দেখতেই ম্যাচে আরও জাঁকিয়ে বসা শুরু র্যান্টিদের। ডেম্পো কোচ গোলের কারণ হিসাবে কার্লোসের দক্ষতার চেয়েও তাঁর গোলকিপারের ব্যর্থতাকে বড় করে দেখালেন। তবে শুভাশিস মাঠ ছাড়ার আগে বলে গেলেন, “অন্যতম সেরা গোল। কার্লোসের কাছেই হারলাম।” এই ম্যাচ জিতে ১৩ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলে ছয় নম্বরে রইল ইউনাইটেড স্পোর্টস। সমসংখ্যক ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত দ্বিতীয় ডেম্পো।
ইউনাইটেড স্পোর্টস: সংগ্রাম, ধনচন্দ্র, বেলো, গৌরমাঙ্গী, দীপক, শঙ্কর, আসিফ, লালকমল, বিনীথ (লেস্টার), কার্লোস (ভিনসেন্ট), র্যান্টি। |