|
|
|
|
বেফাঁস মন্তব্য মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রীরও |
ধর্ষণে ভারত-ইন্ডিয়ায় ভেদ করে এ বার বিতর্কে জড়ালেন সঙ্ঘপ্রধান
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
দিল্লির গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল গোটা দেশ। কিন্তু লাগাম নেই নেতাদের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যে। নতুন বিতর্কে এ বারে গেরুয়া শিবির।
সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত ও মধ্যপ্রদেশের এক মন্ত্রীর মন্তব্যে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। সঙ্ঘ ও বিজেপি নেতৃত্ব ভাগবতকে আড়াল করলেও কোপ পড়েছে মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রীর উপর। দলের নির্দেশে তিনি অবশ্য মন্তব্য প্রত্যাহারও করে নিয়েছেন।
শিলচরের এক সভায় ‘ভারত’ ও ‘ইন্ডিয়া’র মধ্যে বিভাজন রেখা টেনে মোহন ভাগবত বলেন, “দেশের গ্রাম বা বনাঞ্চল এলাকায় গণধর্ষণ বা যৌন অপরাধের ঘটনা দেখা যায় না। শহরেই এর বাড়বাড়ন্ত।”
ভাগবতের মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের রেশ কাটার আগেই বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের শিল্পমন্ত্রী কৈলাস বিজয়বর্গীয় নয়া বিতর্ক বাধালেন। রামায়ণের উদ্ধৃতি দিয়ে ধর্ষণের মতো ঘটনার জন্য দায়ী করলেন মহিলাদেরই! বললেন, “মর্যাদা যখন লঙ্ঘন হয়, তখন সীতা-হরণ হয়। লক্ষ্মণরেখা সকলের জন্যই আঁকা রয়েছে। যিনিই সেই রেখা অতিক্রম করবেন, রাবণ তখনই সীতা-হরণ করে নিয়ে যাবে।” |
|
|
কৈলাস বিজয়বর্গীয় |
মোহন ভাগবত |
|
এর আগে দিল্লি গণধর্ষণের ঘটনাকে ঘিরে উত্তাল প্রতিবাদের মধ্যেই কংগ্রেসের অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, শশী তারুরের মতো নেতারা মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। এ বার গেরুয়া শিবিরও প্যাঁচে পড়ায় আসরে নামার সুযোগ ছাড়তে রাজি নয় কংগ্রেস। দলের নেতা দিগ্বিজয় সিংহ বলেন, “ভারত ও ইন্ডিয়ার মধ্যে কোনও ফারাকই নেই। সঙ্ঘের আদর্শ এর থেকেই বোঝা যায়।” তিনি জানান, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর উচিত ওই মন্ত্রীকে অবিলম্বে সরিয়ে দেওয়া। সিপিএমের বৃন্দা কারাট বলেন, “উনি ইন্ডিয়া বা ভারত কিছুই জানেন না। গ্রামীণ এলাকায় দলিত, আদিবাসীদের মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা সবথেকে বেশি। এ ধরনের মন্তব্য অপরাধীদের সাহস বাড়াবে।” জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রধান মমতা শর্মাও ভাগবতের সমালোচনা করেন।
বিজেপি এবং সঙ্ঘ নেতৃত্ব বুঝতে পেরেছেন, এ ধরনের মন্তব্য সমস্যা বাধিয়েছে। অনেকেই ঘরোয়া ভাবে বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকাই বাঞ্ছনীয়। দিল্লির ক্ষোভকে যখন কৌশলে কংগ্রেসের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি, তখন এ ধরনের মন্তব্যে অস্বস্তি বাড়ছে।
কিন্তু বিজেপিতে সঙ্ঘের দাপট এখনও অব্যাহত। তাই ভাগবতকে আড়াল করতে নেমে পড়েছেন সঙ্ঘ ও বিজেপি নেতারা। আর দূরত্ব তৈরির চেষ্টা হয়েছে কৈলাসের মন্তব্য থেকে। সঙ্ঘের মুখপাত্র রাম মাধবের বক্তব্য, “ভাগবতের মন্তব্য সঠিক প্রেক্ষাপটে দেখতে হবে। তিনি এই ঘৃণ্য অপরাধের ঘোরতর নিন্দা করেছেন। প্রয়োজনে এ ধরনের ঘটনায় দোষীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার কথাও বলেছেন। একই সঙ্গে ভারতীয় মূল্যবোধের প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন।” বিজেপি মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, “আরএসএসের মূল আদর্শেই মহিলাদের সম্মান, উন্নয়ন, নিরাপত্তার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রীর মন্তব্য যথাযথ নয়। তাঁকে মন্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে বলা হয়েছে।” |
|
|
|
|
|