রাজারহাটে ইকো-ট্যুরিজম পার্কের উদ্বোধনে এসে গঙ্গার সৌর্ন্দযায়নের কাজ ঢিমেতালে হওয়া নিয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মিলেনিয়াম পার্কের দুই অংশ সংযোগকারী সেতুর কাজ তত দিনেও শুরু না হওয়ায় কেএমডিএ-র আধিকারিকদের উপরে বেজায় চটেও যান তিনি। ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই কেএমডিএ এবং নগরোন্নয়ন দফতরকে অবিলম্বে কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর ওই নির্দেশের পরে সাত দিন না কাটতেই জরুরি বৈঠক করে কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত নিল নগরোন্নয়ন দফতর।
শুক্রবার মহাকরণে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এ বছরের মধ্যেই হাওড়া ব্রিজ থেকে প্রিন্সেপ ঘাট পর্যন্ত রাস্তা ও সেতু তৈরি করতে হবে। মিলেনিয়াম পার্কের দু’টি অংশ জোড়ার জন্য একটি সেতু তৈরি হবে। ফলে হাওড়া সেতু থেকে নেমে গঙ্গার ধার দিয়ে প্রিন্সেপ ঘাট পর্যন্ত যাওয়া যাবে। গঙ্গার ভাসমান রেস্তোরাঁর পাশ দিয়ে একটি সেতু তৈরি করা হবে। মিলেনিয়াম পার্কের পাশ দিয়ে রেললাইন গিয়েছে। সেখান থেকে একটি আন্ডারপাসও গড়া হবে। এ দিন মহাকরণে কলকাতা পুরসভা, বন্দর কর্তৃপক্ষ, রেল এবং নগরোন্নয়ন দফতরের সঙ্গে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। |
মহাকরণ সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের মধ্যেই সব ক’টি কাজ শেষ করা হবে। সেতু তৈরির টাকা দেবে কলকাতা পুরসভা এবং কেএমডিএ। আর্মেনিয়ান ঘাটের কাছে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এ দিনের বৈঠকে ছিলেন পুরসভার মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ইডেন উদ্যান থেকে মিলেনিয়াম পার্কে যাওয়ার জন্য একটি আন্ডারপাস বা উড়ালপুল তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে স্ট্র্যান্ড রোডের মতো ব্যস্ত রাস্তা পার হতে হবে না।” মিলেনিয়াম পার্কের দু’টি অংশের মধ্যে যাতায়াতের সেতু তৈরিতে খরচ হবে পাঁচ কোটি টাকা। এ ছাড়াও অন্যান্য কাজের জন্য মোট ২৭ কোটি টাকা খরচ হবে। যার বেশির ভাগ টাকাই দেবে কেএমডিএ। কিছু টাকা দেবে কলকাতা পুরসভা।
গঙ্গার ধারে বন্দরের বহু গুদাম আছে। সেগুলি অক্ষত রেখে কংক্রিটের রাস্তা গড়ে পার্কের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। হাওড়ার মল্লিকঘাট থেকে প্রিন্সেপ ঘাট পর্যন্ত চার কিলোমিটার রাস্তা গঙ্গার ধার দিয়ে যাবে। ফলে গঙ্গা ও গঙ্গাপাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে হাঁটতে পারবেন সবাই। কলকাতাকে লন্ডন করার যে পরিকল্পনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়েছেন, এই সৌন্দর্যায়ন তারই অঙ্গ। |