শতবর্ষে বিজ্ঞান কংগ্রেস
ব্যবস্থাপনার ত্রুটিতে
সভাস্থল হট্টমেলার দেশ
ছোটদের বিজ্ঞান কংগ্রেসের উদ্বোধনে বসার জায়গা পেল না ছোটরাই। শুধু তাই নয়, অনুষ্ঠানের মূল অতিথি তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের সই চাইতে গিয়ে রীতিমতো পুলিশের গলাধাক্কাও জুটল তাঁদের। আর কালামের বক্তৃতায় দর্শকাসন থেকে ভেসে এল শিসের আওয়াজ।
ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের দ্বিতীয় দিনে এটা অব্যবস্থার খণ্ডচিত্র মাত্র। বিজ্ঞান কংগ্রেস সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার, উদ্বোধনের দিন থেকেই অনুষ্ঠান ঘিরে নানা ঝামেলায় নাজেহাল হয়েছেন সংগঠকেরা। ভিন্ রাজ্য থেকে আসা বহু প্রতিনিধিই ঠিকমতো থাকার জায়গা পাননি। খাবার বা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার বাস নিয়েও অভিযোগ করেছেন তাঁরা। প্রতিনিধিরাই বলছেন, ব্যবস্থাপনার জন্য কন্ট্রোল রুম খুলেছেন আয়োজকেরা। কিন্তু তাতে অধিকাংশ সময়ই ফাঁকা চেয়ার ছাড়া অন্য কিছুর দেখা মেলেনি। তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির অনুষ্ঠান।
কী হয়েছিল সেখানে?
নতুনের দূত শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল
কালামের বক্তৃতা শোনার ভিড়। শুক্রবার সল্টলেকে। —নিজস্ব চিত্র
সকাল থেকেই নীল-সাদা কাপড়ে মোড়া অনুষ্ঠানস্থলে হাজির ছিল খুদে গবেষকেরা। যদিও অনেকেরই বসার জায়গা ছিল না। প্রবীণ বিজ্ঞানী পৌঁছনোর পর দর্শকরা চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘জায়গা নেই’। দেখা গেল, বড়রা বসে রইলেন চেয়ারে আর ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়েই কালামের বক্তৃতা শুনল ছোটরা। কালাম যখন মঞ্চে উঠলেন তখনও মঞ্চের পিছনে প্রধান অতিথি হিসেবে লেখা তাঁর নামের উপর থেকে স্টিকার তোলা হয়নি! কিছু ক্ষণের মধ্যেই অবশ্য সে কাজ শেষ করা হয়।
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা চলার সময় মাঝেমাঝেই উঠে এল হাসির ফোয়ারা। অবস্থা সামাল দিতে শেষ পর্যন্ত উদ্যোগী হলেন কালাম নিজেই। বললেন, “অসম্ভবকে কল্পনা করার সাহস যাঁরা দেখিয়েছেন, মানুষের সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়েছেন তাঁরাই। ইতিহাসই তার প্রমাণ দিয়েছে।” ছোটদের বললেন সত্যেন্দ্রনাথ বসু, সি ভি রমন, হোমি ভাবার মতো বিজ্ঞানীদের কথা। উঠে এল ইশ্বর কণা বা হিগস-বোসনের মতো ভারী বিষয়ও।
অনুষ্ঠান শেষ হতেই ফের বিশৃঙ্খল হয়ে উঠল সভাস্থল। কালাম মঞ্চে থাকার সময়ই অনেক দর্শক উঠে পড়লেন মঞ্চে। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ বা সই সংগ্রহে ব্যস্ত। এক মহিলা পুলিশ অফিসার রীতিমতো মারমুখী মেজাজে সরিয়ে দিচ্ছিলেন ছোটদের। জনতার মাঝ থেকে প্রায় টেনে কালামকে সভাস্থলের বাইরে নিয়ে যায় পুলিশ। যা দেখে এক অধ্যাপক বললেন, “ এটা জনসভা বা বিজ্ঞান কংগ্রেস, তা বোঝার উপায় নেই।” যদিও এই ভিড়কে ভাল ইঙ্গিত মনে করছেন বিজ্ঞান কংগ্রেসের কর্তারা। বিজ্ঞান কংগ্রেসের আঞ্চলিক সম্পাদক ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় বলেন, অন্য বছরে বিজ্ঞান কংগ্রেসের অধিবেশন প্রায় ফাঁকাই থাকে। সেখানে এ বছর শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এত লোক জড়ো হওয়াটা একটা ভাল ইঙ্গিত।
আয়োজনে অব্যবস্থার কারণ কী?
বিজ্ঞান কংগ্রেস সূত্রের খবর, এ বছর অধিবেশন শুরুর দিন হাজার পাঁচেক রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। যা কর্তারা আন্দাজই করতে পারেননি। যার ফলে তড়িঘড়ি সেই প্রতিনিধিদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতে গিয়ে নাজেহাল হয়েছেন আয়োজকেরা। অনেকেরই প্রশ্ন, এই অব্যবস্থার কথা কেন আন্দাজ করতে পারলেন না আয়োজকেরা? বিজ্ঞান কংগ্রেসের এক কর্তা বলেন, ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশনের দিন বলা ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও অনেকে পরে এসে হাজির হয়েছেন। তাঁর কথায়, “কেউ যদি নিয়ম না মেনে হাজির হন, তা হলে কী করা যাবে?” সংগঠকেরা ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে কড়া হলেন না কেন? ধ্রুবজ্যোতিবাবু বলেন, “ভিন্ রাজ্য থেকে বহু ছাত্র-ছাত্রী এসেছেন। তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়াটা অমানবিক হত।’’
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.