মাত্র ১৫৭ জনের আপত্তিতে কাজ আটকে গিয়েছে কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর। রেল মন্ত্রকের বক্তব্য, এই ১৫৭ জনের মধ্যে অধিকাংশই জমির মূল মালিক নন, ভাড়াটে।
সেন্ট্রাল স্টেশনকে কেন্দ্র করে বর্তমান মেট্রোর (উত্তর-দক্ষিণে) সঙ্গে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর যে যোগাযোগ গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল এখন তার রূপায়ণ নিয়ে তৈরি হয়েছে বড়সড় প্রশ্ন। বিষয়টি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার ও রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর মধ্যে টানাপোড়েনও রয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত মামলা থেকে সরে এসেছে রাজ্য সরকার। ফলে, প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
রেল মন্ত্রক জানিয়েছে, সেন্ট্রাল স্টেশনের সামনে ১.৫৯৯ একর জমি অধিগ্রহণ করার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। জমির অধিকাংশ মূল মালিক ক্ষতিপূরণের অর্থ নিয়েছেন। প্রধানত কিছু ভাড়াটেই সমস্যা তৈরি করেন। তাঁরা জায়গা ছাড়তে রাজি ছিলেন না। তাঁদের জন্য লু সান সরণিতে একটি ছয় তলা বিকল্প বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয়।
রেলের দাবি, ওই ভাড়াটেরা দর কষাকষির পরে লু সান সরণির বাড়িতে চলে যেতে রাজিও হয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্য সরকার নতুন পথে মেট্রো যাওয়ার কথা ঘোষণা করতেই তাঁরা ফের বেঁকে বসেন। বিষয়টি আদালতে যায়। ওই মামলা থেকেই হাত গুটিয়ে নিয়েছে রাজ্য। কলকাতা হাইকোর্টও মামলা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে, বাধ্য হয়ে হাইকোর্টে নতুন আবেদন জানিয়েছে রেল।
এক সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় প্রকল্প ছিল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। কিন্তু তৃণমূল ইউপিএ সরকার ছেড়ে বেরিয়ে আসার পরে প্রকল্প নিয়ে রাজ্য কার্যত প্রতিহিংসাপরায়ণ মনোভাব নিচ্ছে বলে দাবি অধীরবাবুর। রেল জানিয়েছে, কাজ আটকে থাকায় প্রতি দিন তাদের খরচ বাড়ছে ৪০ লক্ষ কোটি টাকা করে। অধীরবাবুর বক্তব্য, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো রূপায়িত হলে রাজ্যের মানুষই উপকৃত হবেন। চাইলে প্রকল্প রূপায়ণের কৃতিত্বও নিক রাজ্য। তাতে কেন্দ্রের কোনও আপত্তি নেই। অহেতুক জেদাজেদি করলে ২০১৫ সালের মধ্যে প্রথম পর্বের কাজ শেষ করা কঠিন হবে। সে ক্ষেত্রে কলকাতাবাসীর কপালে দুর্গতি আছে। সেন্ট্রাল স্টেশন ছাড়াও একই ভাবে জমি সমস্যায় আটকে রয়েছে দত্তাবাদ ও বেঙ্গল কেমিক্যালের কাছে নির্মাণের কাজ। ওই দু’টি ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন অধীরবাবু। |