দুই দুষ্কৃতী গোষ্ঠীর বোমা, গুলির লড়াইয়ে রায়গঞ্জে বাসিন্দাদের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে রায়গঞ্জে নেতাজিপল্লি এলাকায়। একটি ছোট গাড়িতে ভাঙচুরের পাশাপাশি শূন্যে অন্তত পাঁচ রাউন্ড গুলি এবং কয়েকটি বোমাও ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আশা টকিজ মোড় থেকে একটি ছয়ঘরা পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি-সহ লাল সরকার নামের এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আটক করা হয়েছে দুষ্কৃতীদের একটি গাড়িও।
গত ২০ নভেম্বর রায়গঞ্জের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গুলি বোমার লড়াই হয়। তাতে জখম হন তৃণমূল নেতা ভোলা পাল। ভোলাবাবুর ভাই নেতাজিপল্লি বাসিন্দা শঙ্করবাবুর বাড়ির সামনেই মঙ্গলবার সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার পর নিরাপত্তার অভাববোধ করছেন শঙ্করবাবুর পরিবারের লোকেরা। শঙ্করবাবুর স্ত্রী নুপুরদেবী বলেন, “আমাদের বাড়িতে হামলার ছক হয়েছিল কি না তা পুলিশকে তদন্ত করে দেখতে বলেছি।”
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডেভিড ইভান লেপচা বলেন, “দুষ্কৃতীরা গাড়ি নিয়ে এক মদ ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে মদ কিনতে গিয়েছিল। মদ না পেয়ে গাড়ি নিয়ে ফেরার পথে বিপক্ষ গোষ্ঠীর দুষ্কৃতীরা তাদের গাড়ির ওপর হামলা চালায়। শঙ্করবাবুর বাড়িতে হামলা চালানোর প্রমাণ মেলেনি।” এএসপি জানান, ১০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের কয়েক জনের বিরুদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টা, তোলাবাজি-সহ একাধিক মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। রাতে ৮ জন ছোটগাড়ি ও দুটি বাইকে করে মোহনবাটি এলাকার একটি মদের দোকানে যায়। দোকানটি বন্ধ থাকায় তারা মদ ব্যবসায়ীর বাড়িতে যায়। কিন্তু সেখানে মদ না পেয়ে ফেরার সময়ে বিপক্ষ গোষ্ঠীর দুষ্কৃতীরা তাদের গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এর পরই দুই পক্ষের দুষ্কৃতীরা শূন্যে গুলি চালানোর পাশাপাশি কয়েকটি বোমা ছুড়ে পালিয়ে যায়।
তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অরিন্দম সরকার বলেন, “এক পক্ষের দুষ্কৃতীদের গাড়িতে অপর পক্ষের দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আইন শৃঙ্খলার অবনতি বরদাস্ত করা হবে না।” জেলা বামফ্রন্টের সচিব অপূর্ব পাল জানান, “আইন শৃঙ্খলা সামলাতে ব্যর্থ হওয়ায় কিছু দিন আগে রায়গঞ্জ থানার আইসি সমীর পালকে বদলি করা হয়েছে। বামফ্রন্টের বৈঠকে আলোচনা করে পুলিশের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামা হবে।” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “পুলিশের ধারাবাহিক ব্যর্থতার জেরে শহরে একের পর এক অপরাধের ঘটনা ঘটছে। রাজ্য সরকার কী করছে বোঝা যাচ্ছে না।” |