হিন্দি ছবির চ্যানেল দেখা নিয়ে গোলমালে পড়শি কিশোরকে হাঁসুয়ায় কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রের বিরুদ্ধে। বুধবার বিকেলে মালদহের রতুয়ার চড়কি এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। নিহত কিশোরের দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে। অভিযুক্ত বছর দশেকের এক বালক এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পুলিশি সূত্রে জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত বালকের কাকার বাড়িতে প্রতিদিন অনেকে জড়ো হয়ে টিভি দেখত। এ দিনও আসর বসে। অভিযুক্তের হাতেই রিমোর্ট ছিল। পড়শি কিশোর বারবার টিভিতে অন্য হিন্দি ছবির চ্যানেল দেখার জেদ করে বলে জানা গিয়েছে। শিশু কিশোরদের মধ্যে ওই দু’জনই বয়সে বড় ছিল। চ্যানেল দেখা নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি বেধে যায়, এমনকী শুরু হয় হাতাহাতিও। সে সময়ে অভিযুক্ত বালক তার কাকার শোয়ার ঘর থেকে একটি হাঁসুয়া এনে কিশোরের বুকে ও পেটে এলোপাথাড়ি কোপ মারে। কিশোরটি লুটিয়ে পড়তেই অভিযুক্ত বালক পালিয়ে যায় বলে জানা গিয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই কিশোরের মৃত্যু হয়। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “দুজনেই অপ্রাপ্তবয়স্ক। টিভি দেখা নিয়ে বিবাদে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।” অভিযুক্ত বালকের কাকার বাড়িতে এই ঘটনাটি ঘটলেও তিনি ঘটনার সময়ে বাড়িতে ছিলেন না বলে জানিয়েছেন। তার পুত্রবধূ পাশের ঘরে শুয়েছিলেন। ঘটনাটি জানতে পেরেই তিনি আর্তনাদ শুরু করেন। চিৎকার শুনে পড়শিদের সঙ্গে ছুটে আসেন মৃত কিশোরের বাবাও। অভিযুক্ত বালক স্থানীয় স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়লেও নিহত কিশোর স্কুলে পড়ত না বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। দুই পরিবারের মধ্যে সুসর্ম্পক ছিল বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন। নিহতের বাবা বলেন, “ছয় ভাইবোনের মধ্যে দুই ছেলে ছিল। বড় ছেলেটা বছর পাঁচেক আগে ভুগে মারা গেল। ছোটটা এই ভাবে মরবে ভাবিনি। পুলিশে অভিযোগ করেছি। আমার ছেলেকে যে এ ভাবে মারল তার শাস্তি চাই।” অন্যদিকে অভিযুক্ত বালকের বাবা এই দিন বলেন, “ছেলে এ রকম করতে পারে ভাবতেই পারছি না। ঘটনার পর থেকে ওকে আর খুঁজে পাচ্ছি না। ভয় পেয়ে কোথায় চলে গেল জানি না।” এ ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকা জুড়েই। এই প্রসঙ্গে চাঁদমণি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের প্রধান আসফাতুর রহমান, গ্রাম পঞ্চায়েতের স্থানীয় কংগ্রেস সদস্য ইউসুফ বলেন, “এটা একটা মর্মান্তিক ঘটনা। কী ভাবে যে এই ঘটনা ঘটল তা আমরা ভাবতেই পারছি না।” যাঁর বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে, অভিযুক্ত বালকের সেই কাকা এই দিন বলেন, “প্রতিদিনই পাড়ার ছেলেরা টিভি দেখত। কখনও যে এমন পরিনতি হবে ভাবিনি।” |