নিজস্ব সংবাদদাতা • আলিপুরদুয়ার |
আলু কেলেঙ্কারির ভুয়ো মাস্টার রোলে সই থাকা চাষিদের আঙুলের ছাপ ও সই সংগ্রহ করল পুলিশ। বুধবার আলিপুরদুয়ার মহকুমা আদালতে পুলিশের আবেদনের ভিক্তিতে চাষিদের সই সংগ্রহের নির্দেশ দেন বিচারক। সেখানেই চাষিদের আঙ্গুলের ছাপ ও সই সংগ্রহ করা হয়। মাস্টার রোলে সই থাকা অত্যাবশকীয় পণ্য সরবরাহকারী দফতরের এক আধিকারিকের জবানবন্দি নেওয়া হয়। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে সরকারি আইনজীবী মহম্মদ রফি জানান, জলপাইগুড়ি নবদিগন্ত পরিষেবা সমবায় সমিতি ২০১০ সালে চাষিদের থেকে আলু কেনার নামে আর্থিক দুর্নীতি করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, “আলু কেনার মাস্টার রোলে আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের যে সমস্ত চাষির সই ও আঙ্গুলের ছাপ সেগুলি আসল কি না তা বিশেষজ্ঞদের দিয়ে মিলিয়ে দেখার জন্য তদন্তকারী পুলিশ অফিসার আদালতে আবেদন করেন। সেই ভিত্তিতেই পোরোরপার গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ও কয়েকজন চাষির সই, আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহের নির্দেশ দেন বিচারক।” ২৩ ডিসেম্বর ধৃত সমবায়ের ম্যানেজার তাপস নন্দীর সই নেওয়া হয়।
অত্যাবশকীয় পণ্য সরবরাহকারী দফতরের এক আধিকারিক অনুজ কুমার রায় জানান, নিয়ম মত আলু কেনার সময় তাঁর ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার দুটি জেলার দায়িত্বে থাকায় কবে আলিপুরদুয়ারে আলু কেনা হয়েছে তা তিনি জানতে পারেননি। নবদিগন্ত সমবায়ের তরফে মাস্টার রোলের সাথে আলুর বন্ডের কাগজ পেশ করায় সব ঠিক আছে ভেবে তিনি মাস্টার রোলে সই করেন। আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের পোরোরপার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রঞ্জন রায় বলেন, “২০১০ সালে এলাকায় সরকারি ভাবে চাষিদের থেকে আলু কেনা হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে তা ঠিক নয়। তাতে আমাকে প্রধান হিসেবে দেখিয়ে সই রয়েছে। সেই সময় আমি প্রধান ছিলাম না। আমার সই জাল করা হয়েছে।” এদিন আদালতে তপসিখাতা এলাকার বাসিন্দা রমেশ রায়, কার্তিক দেবনাথ সুজিত রায়, স্বপন রায়, যতন রায় ও রাজমোহন রায়ের সইয়ের নুমনা নেওয়া হয়। তাঁরা প্রত্যেকে জানান, ওই বছর তাঁরা সরকারের কাছে কোনও আলু বিক্রি করেননি। তাঁদের সই জাল করা হয়েছে। আভিযোগকারী অলোক রায় জানান, ২০১০ সালে অত্যাধিক আলুর ফলন হওয়ায় অত্যাবশকীয় পণ্য সরবরাহকারী দফতর জলপাইগুড়ির নবদিগন্ত পরিষেবা সমবায় সমিতিকে আলু কেনার দায়িত্ব দেয়। আলু কেনার জন্য জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক নবদিগন্ত সমবায়কে কয়েক লক্ষ টাকা ঋন দেয়। সেই সময় ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা গোবিন্দ রায় ওই ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁরা আলু কেনার ভুয়ো মাষ্টার রোল পেশ করেন বলে অভিযোগ। থানায় অভিযোগ জাননোর পর থেকে আভিযুক্ত গোবিন্দ রায় ও তাঁর স্ত্রী পলাতক রয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। |