শিকেয় রক্ষণাবেক্ষণ, অভিযোগ
নথিতেই নেই জলপাইগুড়ির ৫ সেতুর নাম
রকারি নথিতে অস্তিত্বই নেই জলপাইগুড়ি শহরের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুর। করলা ও ধরলা নদীর ওপরে থাকা ওই পাঁচটি সেতু কোন দফতরের দায়িত্বে রয়েছে, জানে না জেলা প্রশাসন। সরকারি ভাবে কোনও নির্দিষ্ট দফতরের কাছে দায়িত্ব না থাকায়, সেতুগুলির রক্ষণাবেক্ষণও দীর্ঘদিন ধরে হয় না। ফলে, সেতুগুলি আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রেই জানানো হয়েছে।
গত রবিবার শহরের সেনপাড়া ও হাসপাতাল পাড়ার সংযোগকারী ধরলা নদীর একটি সেতু ভেঙে পড়ে। ভেঙে যাওয়া সেতুটি কোন দফতরের আওতায় রয়েছে তার খোঁজ শুরু হতেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য। প্রশাসনিক খোঁজ খবরে জানা গিয়েছে, শহরের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুর দায়িত্ব কোন দফতরের কাছে, তার কোনও সরকারি তথ্য নেই। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “বিষয়টি সবে নজরে এসেছে। কয়েকটি সেতু খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে রয়েছে, পুরসভা ও পূর্ত দফতরের সঙ্গে কথা বলে দ্রূত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বাকি সেতুগুলিকে কী ভাবে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের আওতায় আনা যায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
১৯৬৮ সালের বন্যার পরে শহরের বুক চিরে যাওয়া করলা নদীর ওপরে তৈরি হয় সুভাষ সেতু। শহরের প্রশাসনিক সড়ক বলে পরিচিত পোস্ট অফিস মোড় থেকে জেলা শাসকের দফতরের যাওয়ার রাস্তাতে সেতুটি রয়েছে। সরকারি নথিতে সেতুটি পূর্ত দফতর তৈরি করেছে বলে শুধু উল্লেখ্য করা রয়েছে, তবে বর্তমানে সেতুটি কোন দফতরের তা প্রশাসনের কাছেই অজানা।
পূর্ত দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, তৎকালীন ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড সেতুটি তৈরি করে, পূর্ত দফতর নির্মাণ সংস্থা হিসেবে কাজ করে। তবে সেতুটির দায়িত্ব তাদের নয়। তবে কার হাতে রয়েছে সেতুটির দায়িত্ব। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ সূত্রে জানানো হয়েছে, সেতুটি তাদের দায়িত্বে রয়েছে এমন কোনও নথি তাদের কাছে নেই। পুরসভাও জানিয়েছে, সেতুর দায়িত্ব সরকারি ভাবে তাদের কাছে নেই। তারফলে নির্মাণের পরে তিন দশকেরও বেশি সময় কেটে গেলেও কোন দফতরই সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ করে নি। বছর দেড়েক আগে সেতুর রেলিঙের একটি বড় অংশ ভেঙে পড়লেও মেরামত করা হয়নি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, যে কোনও ধরনের যানবাহন চলাচল করার সময়েই সেতুটি বিপজ্জনক ভাবে দুলতে থাকে। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি দীপ্তি দত্ত বলেন, “শহরে আমাদের বেশ কিছু রাস্তা রয়েছে, তবে নির্দিষ্ট করে কোনও সেতু জেলা পরিষদের হাতে রয়েছে এমন তথ্য নেই।”
তবে শুধু সুভাষ সেতুই নয়, দিনবাজার লাগোয়া করলা সেতু, মাসকলাইবাড়ি করলা সেতু, করলার শাখানদী ধরলার ওপরে ওয়াকারগঞ্জ এবং রায়কত পাড়ার সেতুগুলিরও একই দশা। পূর্ত দফতর, জেলা পরিষদ, পুরসভা সকলেই জানিয়েছে সেতুগুলি তাদের দায়িত্বে নেই। প্রায় দু তিন দশক আগে তৈরি সেতুগুলির সবকটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে, সেতুতে তৈরি হয়েছে একাধিক ফাটল। সেতুগুলিতে যান চলাচলেরও কোন নিয়ন্ত্রণও নেই বলে অভিযোগ। যারফলে ধরা সেতুর মত যে কোনওদিন এই সেতুগুলিও ভেঙে পড়ার আশঙ্কা বাসিন্দাদের।
পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “অনাথ শিশুদের যেমন অবস্থা হয়, সেতুগুলিরও তেমন দশা। শহরে ঢোকার পথে শান্তিপাড়ার দুটি সেতুও একই অবস্থায় ছিল, পুরসভাই উদ্যোগ নিয়ে সেগুলি সংস্কার করছে। প্রশাসনের কাছে এর আগে দফায় দফায় সেতুগুলির বিষয়ে জানানও হয়েছে। তবে এবার জেলা শাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে, যৌথভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.