|
|
|
|
|
লিয়েন্ডার অনাস্থা দেখানোয়
আমি কিন্তু সরেছিলাম
জয়দীপ মুখোপাধ্যায় |
|
দেখতে দেখতে আরও একটা বছর কেটে গেল। লেখার শুরুতে তাই সবাইকেই নতুন বছরের শুভেচ্ছা।
গত বছর লন্ডন অলিম্পিকের আগে থেকেই ভারতীয় টেনিসমহল একের পর এক টানাপোড়েন দেখেছে। দুঃখজনক সেই পরিস্থিতি নিয়ে নতুন কিছু বলতে আর ইচ্ছে করছে না। আশা ছিল, নতুন বছরে যাবতীয় ঝামেলা মিটিয়ে ভারতীয় টেনিসে ‘মিলে সুর মেরা তুমহারা’-র সুর শোনা যাবে। কিন্তু কোথায় কী? বছরের প্রথম দিনই আনন্দবাজারে পড়লাম, ঝামেলা মেটা দূরে থাক, আরও বেড়ে গিয়েছে।
লিয়েন্ডার পেজ-মহেশ ভূপতি দ্বৈরথে এ বার নতুন মুখ সোমদেব দেববর্মন। শুনলাম ভারতীয় টেনিস কর্তাদের সোমদেব জানিয়ে দিয়েছে, লিয়েন্ডারের অধীনে সে আর খেলতে চায় না। শুনলাম সোমদেবের সঙ্গে আরও সাতজন টেনিস প্লেয়ার জোট বেঁধেছে এই ইস্যুতে। সংবাদমাধ্যমের দৌলতে আরও জানতে পারলাম, খেলোয়াড়দের দাবি মূলত তিনটে।
১) সাপোর্ট স্টাফ সরানো।
২) ভারতীয় টেনিস সংস্থা এবং প্লেয়ারদের মধ্যে আর্থিক পুরস্কার যে ৫০-৫০ শেয়ারে ভাগাভাগি হয়, সেটা বাড়ানো।
৩) ডেভিস কাপ টাই কোথায় হবে সে ব্যাপারে প্লেয়ারদের মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া। |
|
ক্ষুব্ধ অধিনায়ক এস পি মিশ্র। |
কলম ধরতে গিয়ে কে ঠিক কে ভুল সেই কচকচিতে ঢুকতে চাইছি না। তবে এটা বলতে চাই, খেলোয়াড়দের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার ব্যাপারটা একটু ভেবে দেখা যেতে পারে। কেন? একটু পিছিয়ে যাচ্ছি। ২০০১ সাল। আমি তখন ভারতীয় ডেভিস কাপ দলের কোচ। লিয়েন্ডার সে দিন আমাকে কোচ হিসাবে চায়নি। আমি তা শোনার পরেই সঙ্গে সঙ্গে আর কে খন্নাকে গিয়ে বলেছিলাম, খেলোয়াড়দের মতামতকেই প্রাধান্য দেওয়া দরকার। লি যখন আমাকে চাইছে না, আমি সরে যাচ্ছি।
আজ যখন খেলোয়াড়রা দলের নন-প্লেয়িং ক্যাপ্টেন এস মিশ্র, কোচ নন্দন বাল এবং লিয়েন্ডারের পছন্দের ফিজিও সঞ্জয়কে সরাতে বলছে, তখন এত কিন্তু-কিন্তু কেন? মিশ্রকে আমি খুব ভালো করে চিনি। আমাদের সময় রিজার্ভ প্লেয়ার ছিল। ভদ্র, বিনয়ী লোক। কিন্তু আমি মনে করি ওর বয়স হয়েছে। ওর জায়গায় অপেক্ষাকৃত কম বয়সি কাউকে কোচ করার কথা ভাবা যেতেই পারে।
সে রকমই সঞ্জয় দলের অস্থায়ী ফিজিও। কাজেই সোমদেবরা যদি স্থায়ী ফিজিওর দাবি তুলে থাকে, তা হলে তাতে দোষের কিছু দেখতে পাচ্ছি না। এ বার আসি কোচ নন্দন বালের প্রসঙ্গে। ভারতীয় টেনিস মহলের হাঁড়ির খবর যারা রাখেন, তাঁরা সকলেই জানেন নন্দন প্রতি পদক্ষেপে কী ভাবে দলের কোন খেলোয়াড়ের পরামর্শ মেনে চলে। কারা ওর চক্ষুশূল। অশান্তির দিনে নাম বলে আর ঝঞ্ঝাট বাড়াতে চাই না। তবে আবার বলছি, এ ক্ষেত্রেও খেলোয়াড়দের কথাই শোনা উচিত।
আর্থিক পুরস্কার ভাগাভাগি করার ব্যাপারে একটা কথা বলব, এই ব্যাপারটা নিয়ে খেলোয়াড়রা যদি ভারতীয় টেনিস কর্তাদের বিরুদ্ধে চাপ এবং ব্ল্যাকমেলের খেলা শুরু করে, তা হলে ভুল করবে। কারণ, দেশের হয়ে খেলাটা ওদের কর্তব্য। আলোচনার মাধ্যমে এ ক্ষেত্রে সমাধানের রাস্তা বেরোতেই পারে।
এ বার আসি টাই কোথায় হবে সে ব্যাপারে খেলোয়াড়দের দাবির ব্যাপারে। এ ব্যাপারে খেলোয়াড়রা কোন সারফেসে খেলবে তা জানাতেই পারে। ওদের মতামত মানা উচিত বলেই আমি মনে করি। কিন্তু কোথায় খেলা হবে সেটায় ওদের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। সব শেষে একটা কথাই বলব। এ বছর ফেব্রুয়ারির শুরুতে এশিয়া-ওশিয়ানিয়া গ্রুপের টাই দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে। যা হওয়ার কথা দিল্লিতে। মোদ্দা কথাটা কিন্তু সেই টাই জেতাটা। তার আগে এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি কিছুটা ঠান্ডা হবে, সেই আশায় রইলাম। |
|
|
|
|
|