|
|
|
|
বড় হিংসা এড়াল অসমের চা বাগান, ধৃত এক কর্তা
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
ফের অশান্ত অসমের চা বাগান। নগাঁও জেলার আমসই চা বাগানে এক চৌকিদারকে প্রহারের প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ বাগান শ্রমিকেরা কারখানায় আগুন লাগানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। ঘটনার সূত্রপাত কাল রাতে। শ্রমিকদের অভিযোগ, বাগানের সহকারী ম্যানেজার পঙ্কজেশ গুরাইপ কাল রাতে তাঁর বাংলোর চৌকিদার দুর্গেশ্বর তাঁতিকে বেধড়ক মারধর করেন। দুর্গেশ্বরকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। ঘটনাটি জানাজানি হতেই আজ সকালে বাগান শ্রমিকরা বাগান কর্তাদের বাংলো ঘেরাও করেন। চা পাতা কারখানায় আগুন লাগানোরও চেষ্টা হয়। তবে সময়মতো পুলিশ এসে পড়ায় বড় রকমের হিংসাত্মক কাণ্ড এড়ানো গিয়েছে। বেঁচে গিয়েছে কারখানাটিও। গুরাইপকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এলাকায় উত্তেজনা থাকলেও পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।
অসমে চা বাগানগুলিতে শ্রমিকদের রোষ দিন দিন যে ভাবে হিংস্র আকার নিচ্ছে তাতে বাগান মালিকরা শুধু নয়, উদ্বিগ্ন পুলিশ ও প্রশাসনও। ২৬ ডিসেম্বর তিনসুকিয়ার কোনাপথার এলাকায় বাগান মালিক তথা এমকেবি (এশিয়া) প্রাইভেট লিমিটেডের কর্তা মৃদুল ভট্টাচার্য ও তাঁর স্ত্রী রীতা ভট্টাচার্যকে বাংলোর ভিতরে পুড়িয়ে মারা হয়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছিল, বাগানের দুই শ্রমিক অজিত ও সুরজ মুরাকে চুরির অভিযোগে গ্রেফতার, বেশ কিছু শ্রমিককে বাগান ছাড়ার নির্দেশ ও বড়দিনের উৎসব হতে না দেওয়ার ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়েই ওই ঘটনা ঘটে। কিন্তু পরে জানা যায়, কর্মচ্যুত বহিরাগত কয়েক জন শ্রমিকের দীর্ঘদিনের ষড়যন্ত্রের বলি হন ওই বৃদ্ধ দম্পতি। শুধু হত্যা করাই নয়, মৃদুলবাবুর দেহ ১২ টুকরো করে তাঁর মাংসও খায় হত্যাকারীরা। এরপর দেহ দু’টি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওই ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এ পর্যন্ত।
এর আগে গোলাঘাটের বাগান কর্তা রূপক গগৈ ও শোণিতপুরের সেপোই বাগানের সহকারী ও ডেপুটি ম্যানেজারকে পুড়িয়ে হত্যা করার ঘটনা দেখেছে রাজ্য। বাগান কর্তা তথা আইটিএর মতে, রাজ্যে চা শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলার জন্য একমাত্র স্বীকৃত সংগঠন হল চা মজদুর সঙ্ঘ। কিন্তু হালে ভুঁইফোড় বহু সংগঠন, বাগানগুলিতে ইউনিয়ন তৈরি করছে। সরকার, বাগান কর্তৃপক্ষ ও চা মজদুর সঙ্ঘের ঐক্যমত্যে স্থির হওয়া বোনাস, বেতন বা অন্যান্য সুযোগ সুবিধার বিরুদ্ধে শ্রমিকদের উস্কানি দিচ্ছে এরা। সেই সঙ্গে চা বাগানগুলিতে মাওবাদী প্রভাব বাড়ার কারণেও চিন্তিত পুলিশ-প্রশাসন। চেষ্টা চলছে এই সমস্যার সমাধান খোঁজার। |
|
|
|
|
|