|
|
|
|
শশীর প্রস্তাবে সায় পরিবারের |
তরুণীর নামে আইনের নামকরণ চায় না কেন্দ্র
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ধর্ষিতার পরিবারের তরফে কোনও আপত্তি নেই ঠিকই। কিন্তু ধর্ষণ-বিরোধী আইনের নামকরণ ধর্ষিতা তরুণীর নামে করার কোনও পরিকল্পনা কেন্দ্রীয় সরকারের নেই।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে শুরু করে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব একটা বিষয়ে একমত যে, ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধি বা কার্যবিধিতে কোনও ব্যক্তির নামে আইন প্রণয়ন করার কোনও ব্যবস্থা নেই।
গত কাল কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ প্রতিমন্ত্রী শশী তারুর প্রস্তাব করেছিলেন, পরিবারের আপত্তি না থাকলে ধর্ষিতা তরুণীর নাম প্রকাশ করা হোক ও তার নামে ধর্ষণ-বিরোধী আইনের নামকরণ করে তাকে সম্মান জানানো হোক। এ দিন ধর্ষিতার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁদের মেয়ের নামে ধর্ষণ-বিরোধী আইনের নামকরণ হলে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। উত্তরপ্রদেশের বালিয়াতে গ্রামের বাড়িতে বসে তরুণীর বাবা ও ভাই দু’জনেই জানিয়েছেন, যদি সরকার ধর্ষণ-বিরোধী আইনের নামকরণ করে, তা হলে তাঁদের বাড়ির মেয়ের জন্য তা সম্মানেরই হবে। সেক্ষেত্রে গোটা পরিবারের পরিচয় প্রকাশিত হয়ে পড়বে জেনেও সম্মতি দিচ্ছেন তাঁরা। |
স্মরণে
গণধর্ষিতা তরুণীর স্মৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য। বুধবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই |
তারুরের প্রস্তাবে ধর্ষিতার পরিবার এই ভাবে সায় দেওয়ায় বাস্তবে কেন্দ্রীয় সরকারের অস্বস্তি আরও বেড়েছে। আপাত ভাবে তারুরের প্রস্তাবটি শুনতে ভাল। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন মহল থেকেও এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানানো হচ্ছে। ফলে এখন যদি সরকার মেয়েটির নামে আইনের নামকরণ না করে, তা হলে তারও সমালোচনা হবে। সরকারের তরফে তাই এখন যুক্তি দিয়ে বোঝাতে হচ্ছে, এ ব্যাপারে কেন্দ্রের সীমাবদ্ধতা কোথায়। মার্কিন আইন-ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্ট আইনের প্রণেতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন নামে নামকরণের রীতি প্রচলিত রয়েছে ঠিকই। গত কাল কিরণ বেদী সেই উদাহরণটা দিয়েওছিলেন। কিন্তু ভারতে সেই রীতি নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, “এখন যদি মেয়েটির নামে আইনের নামকরণ করা হয়, তা হলে তো কাল মায়াবতী দাবি করতে পারেন, পদোন্নতিতে সংরক্ষণ আইনের নামকরণ তাঁর নামে করা হোক!”
গত কাল শশী তারুরের মন্তব্য থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছিল কংগ্রেস। আজ এক ধাপ এগিয়ে শশীর প্রস্তাব খারিজ করার পাশাপাশি তাঁকে সতর্কও করেছে হাইকমান্ড। কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, খামোখা প্রকাশ্যে মন্তব্য করে দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন শশী। কংগ্রেস মুখপাত্র রশিদ অলভির বক্তব্য, “শশী তারুর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য। তিনি এই পরামর্শ সরকারের মধ্যে দিতে পারতেন। তা না করে প্রকাশ্যে মত দেওয়া ঠিক হয়নি।” এর আগেও দুমদাম মন্তব্য করে একাধিক বার সরকারকে বিপাকে ফেলেছেন শশী। তাঁকে কটাক্ষ করে মন্ত্রিসভার এক সদস্য তাই এ দিন বলেন, “যার হয় না নয়ে, তাঁর হয় না নব্বইয়ে।” ওই মন্ত্রীর কথায়, এ দেশের রাজনীতি সম্পর্কে এখনও সম্যক ধারণা তৈরি হয়নি তারুরের।
নামকরণ নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে সরকার আপাতত আইন প্রণয়নের ব্যাপারেই জোর দিতে চাইছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কর্তাদের বক্তব্য, ওই তরুণীর গণধর্ষণের ঘটনাকে সামনে রেখেই আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জে এস বর্মার নেতৃত্বে কমিটি তৈরি হয়েছে। যৌন নির্যাতন বিরোধী আইনের ফাঁকফোকর বন্ধ করার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রক। দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির জন্য আদালতে ই-চার্জশিট পেশ করা হবে। আগামিকাল থেকে মামলার শুনানি শুরু হচ্ছে। |
|
|
|
|
|