মহিলার সম্ভ্রমহানি রুখতে গিয়ে মৃত্যু যুবকের
নারীর সম্ভ্রমহানির চেষ্টার প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রাণ দিতে হল যুবককে। ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচি শহরে নতুন বছরের প্রথম দিনেই এই কাণ্ড মনে করিয়ে দিচ্ছে কলকাতার বাপি সেনের আত্মদানের ঘটনা। রাঁচির ওই সাহসী যুবকের নাম শ্রীকান্ত ভরদ্বাজ। ঘটনাকে ঘিরে বুধবার সকাল থেকে তোলপাড় রাঁচি শহর। পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধেও কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। দিল্লি কাণ্ডের রেশ মিলিয়ে যাওয়ার আগেই রাঁচিতে এমন ঘটনায় তোলপাড় রাঁচি। এখানেও মহিলারা কতটা নিরাপদ সে প্রশ্নও উঠছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধ গণধর্ষণের চেষ্টার মামলা রুজু করেছে পুলিশ। স্থানীয় এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
স্থানীয় বরিয়াতু থানার পুলিশ জানাচ্ছে, রিম্পস ক্যাম্পাসে ওই ঘটনা ঘটেছে। সেখানকার স্বামী সদানন্দ কলোনির
শ্রীকান্ত ভরদ্বাজ
এক গৃহবধূকে গণর্ষণের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। মহিলার অভিযোগ, কয়েকজন যুবক তাঁদের বাড়ির কাছে একটি জায়গায় পিকনিক করছিল। মত্ত অবস্থায় ওই যুবকেরা মাঝেমধ্যেই ওই গৃহবধূর বাড়িতে আসছিল জল চাইতে। কয়েকবার জল দেওয়ার পর তিনি জল দিতে অস্বীকার করায় ওই যুবকেরা ওই মহিলার ওপরে চড়াও হয়। ওই মহিলার ঘরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করার চেষ্টা চলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই যুবকরা ঘরে ঢুকে পড়ায় মহিলা চিৎকার করতে থাকেন। তখন রিম্পস কলোনির বাসিন্দা শ্রীকান্ত-সহ স্থানীয় কয়েকজন যুবক মত্ত যুবকদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। প্রথমে ওই যুবকেরা ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু কিছু পরেই তারা দল ভারী করে ফিরে আসে। লাঠি, লোহার রড, চেন দিয়ে তারা শ্রীকান্ত-সহ রিম্পস কলোনির লোকজনকে প্রচণ্ড মারধর করে। শ্রীকান্ত, মৃত্যুঞ্জয় কুমার, ওমপ্রকাশ পাণ্ডে ও সুরজ সিংহ নামে চার জন মারাত্মক জখম হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে এ দিন রাতে হাসপাতালেই মারা যান শ্রীকান্ত।
এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে চরম নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালে ভর্তি ওমপ্রকাশ পাণ্ডের অভিযোগ, “ গোলমালের সময় পুলিশকে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ আসেনি।” ঘটনার প্রায় দেড় ঘন্টা পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। রাঁচি জেলার পুলিশ সুপার (শহর) বিপুল শুক্লর সাফাই, ‘‘পুলিশ স্বেচ্ছায় দেরি করেনি। পুলিশকে ঘটনাস্থলের ঠিক ঠিকানা দেওয়া হয়নি। জায়গা খুঁজে যেতে খানিকটা দেরি হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দিল্লির ঘটনার পরে জনরোষের মুখে পড়তে হয়েছিল কংগ্রেসকে। ঝাড়খণ্ডে শাসক দল বিজেপির রাজ্য সভাপতি দীনেশানন্দ গোস্বামী বলেন,“ খুব সাংঘাতিক ঘটনা। দোষীদের অবশ্য কড়া শাস্তি হবে। তবে পুলিশেরও যদি কোনও গাফিলতি থাকে তবে তারও তদন্ত হওয়া উচিত।”
এই ঘটনায় পুলিশের আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল বলে মনে করছে ঝাড়খণ্ড সরকারের প্রধান শরিক দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চাও। দলের মুখপাত্র তথা সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বাপী সেনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “পুলিশের ভূমিকা কলকাতার ওই সার্জেন্টের মতোই হওয়া উচিত। আমরা সরকারে থেকেও বলছি রিম্পস কলোনির ঘটনায় পুলিশের দেরি করে পৌঁছনো ঠিক হয়নি। ”
অন্য দিকে মঙ্গলবার বছর শুরুর দিনেই ধানবাদের সরাইঢেলাতে পাটলিপুত্র মেডিক্যাল কলেজের কয়েক জন নার্সিং-এর ছাত্রীকে কটুক্তি করে এক যুবক। ওই যুবক সিআইসেফ এর জওয়ান বলেই প্রাথমিকভাবে ধারণা পুলিশের। ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন ওই ছাত্রীরা জেলার পুলিশ সুপারের কাছে ডেপুটেশন দেন। এমনকি নিরাপত্তার দাবিতে এদিন হাসপাতালে কাজেও যোগ দেননি।
ছাত্রীরা হস্টেল থেকে নাইট ডিউটিতে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। তাঁরা ওই যুবককে তাড়া করতেই সে রাস্তার ধারে সিআইসেফ ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করতে নেমে ওই ক্যাম্পাসের ভিতর থেকে একটি মোবাইল, একটি মদের বোতল ও একটি চিরুনি উদ্ধার করে। যা থেকে তাঁদের প্রাথমিক অনুমান ওই যুবক সিআইসেফের জওয়ান। যদিও ওই যুবককে এখনও ধরা যায়নি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.