ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির ঘটনায় পুলিশের উপরে সাধারণ মানুষের আস্থা যে ক্রমশই কমছে, ফের তার প্রমাণ মিলল কসবায়। বুধবার রাতে কসবার কুমোরপাড়ায় চার বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তার শাস্তি চেয়ে এলাকার লোকজন রাসবিহারী কানেক্টর অবরোধ এবং কসবা থানা ঘেরাও করেন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, অভিযুক্তকে তাঁদের হাতে তুলে দিতে হবে। নইলে পুলিশকে লিখিত ভাবে জানাতে হবে, তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রাত সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অবরোধ চললেও পুলিশ থানার গেট বন্ধ করে নীরব দর্শকের ভূমিকা নিয়েছিল। অবরোধের জেরে গড়িয়াহাট রোড, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ এবং ইএম বাইপাসের একাংশে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অবরোধের খবর সঙ্গে সঙ্গে টিভিতে সম্প্রচারের দাবিতে জনতা আচমকাই হামলা চালায় সংবাদমাধ্যমের উপরে। সংবাদমাধ্যমের ছ’টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। হামলায় জখম হন কয়েক জন। এক চিত্রসাংবাদিককে বেধড়ক মারধর করা হয়। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। পুলিশ তখনও নিষ্ক্রিয়ই ছিল। |
ঠিক কী ঘটেছিল?
পুলিশি সূত্রের খবর, কুমোরপাড়ায় একটি বাড়িতে বাবা-মা ও দিদার সঙ্গে থাকে ওই শিশুটি। তাদের ভাড়া-বাড়ির পাশেই সুব্রত দাস নামে স্থানীয় এক যুবকের একটি কোচিং সেন্টার। রাতে সেখানেই থাকেন ওই যুবক। কোচিং সেন্টারে মাঝেমধ্যেই আসত তাঁর মাসতুতো ভাই দেবব্রত দাস ওরফে টোটন। অভিযোগ, বছর তিরিশের দেবব্রত ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ওই শিশুটিকে সেখানে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। পরে শিশুটির মা বিষয়টি জানতে পারলে সুব্রত চিকিৎসার জন্য এক হাজার টাকা দিয়ে ব্যাপারটা চেপে যেতে বলেছিলেন বলে শিশুটির পরিবারের অভিযোগ। কিন্তু ক্রমশ শিশুটির শরীর খারাপ হতে থাকায় বুধবার বিকেলে তার মা স্থানীয় বিষয়টি জানান স্থানীয় বাসিন্দাদের। তার পরেই তিনি কিছু লোককে নিয়ে থানায় অভিযোগ জানান। পুলিশ অভিযুক্ত দেবব্রতকে গ্রেফতার করে।
এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আমরা থানায় আসি। কিন্তু পুলিশ আমাদের থানা থেকে বার করে দেয়।” ক্ষিপ্ত জনতা রাস্তায় গিয়ে অবরোধে বসে এবং থানা ঘেরাও করে। দাবি তোলে, ধৃতকে তাদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হোক। তারাই তার ব্যবস্থা করবে।
থানা সেই দাবি না-মানায় জনতা বলতে থাকে, অভিযুক্তের কী শাস্তি হবে, পুলিশ তা লিখে দিক। সংবাদমাধ্যম পৌঁছলে জনতা তাদের উপরে হামলে পড়ে। |