এসএফআই সমর্থক দুই ছাত্র কেন ছুটির সময়ে কলেজে ঢুকেছিল, তার জবাবদিহি চেয়ে প্রায় আট ঘণ্টা কুলটি কলেজের অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে রাখল টিএমসিপি। তার আগে এসএফআই এবং টিএমসিপি সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক গণ্ডগোলও হয়। আগামী ১৮ জানুয়ারি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগে এই ঘটনায় উত্তেজনার পারদ চড়ল।
কলেজ সূত্রের খবর, ইন্টারনেট থেকে বি কম পরীক্ষার ফলাফল জানতে ৩১ জানুয়ারি এক শিক্ষাকর্মী কলেজে গিয়ে কম্পিউটার চালিয়েছিলেন। সেই সময়ে দুই ছাত্রও সেখানে গিয়ে হাজির হয়। পরে টিএমসিপি সমর্থকেরা দেখতে পেয়ে ধাওয়া করলে তারা পালায়। এ দিন কলেজের মাঠে ছাত্রছাত্রীদের ঠিকানা সংবলিত কিছু নথি পাওয়া যায়। এর পরেই টিএমসিপি দাবি করে, ওই দুই ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক আছে। তাতেই গণ্ডগোল বাধে।
তৃণমূলের দাবি, ছুটির সময়ে কলেজে ঢোকা ওই দুই ছাত্র ‘বহিরাগত’। কেননা পরীক্ষা দিয়ে ফেলায় তাঁরা ইতিমধ্যেই ‘প্রাক্তন’। কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছিল, বড়দিনের ছুটি চলাকালীন কোনও বহিরাগত কলেজ চত্বরে ঢুকতে পারবে না। সেই নির্দেশ লঙ্ঘন করায় ওই দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলে ছাত্র সংসদে ক্ষমতাসীন টিএমসিপি। |
পড়ুয়াদের ঘেরাটোপে। বুধবার বিকেলে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
এসএফআই পাল্টা দাবি করে, চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়ে দিলেই কেউ বহিরাগত হয়ে যায় না। ওই দুই ছাত্রও তা নন। সকালে তারা অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে নিজেদের দাবি জানাতে গেলে গণ্ডগোল বেধে যায়।
এসএফআইয়ের কুলটি লোকাল কমিটির সভাপতি সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ, তাঁদের সমর্থকেরা অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকতে গেলে টিএমসিপি বাধা দেয়। এই নিয়ে মারামারি বেধে যায়। তাঁর কথা, “ওই দুই ছাত্র এ বারই পরীক্ষা দিয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কোন যুক্তিতে তাঁদের বহিরাগত বলা হচ্ছে, তা জানতেই আঅমরা অধ্যক্ষের কাছে গিয়েছিলাম। আমাদের দুই সদস্যকে বেধড়ক মারধর করা হয়। অশান্তি না বাড়িয়ে আমরা কলেজের বাইরে বেড়িয়ে আসি।” কুলটির টিএমসিপি নেতা যতীন গুপ্ত পাল্টা বলেন, “আমরা এসএফআইকে বাধা দিইনি। কলেজের মাঠে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পড়ে থাকার বিষয়ে কথা বলতে আমরা অধ্যক্ষের কাছে যাচ্ছিলাম। সেই সময়ে ওরাই আমাদের উপর চড়াও হয়।” পুলিশ গিয়ে তখনকার মতো পরিস্থিতি সামাল দেয়।
এর পরেই, দুপুর ১২টা নাগাদ অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে টিএমসিপি। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সইফ খান অবশ্য বলেন, “আমরা ঘেরাও করিনি। সংযত অবস্থান করেছি। আমাদের দাবি, দুই বহিরাগত ছাত্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। কলেজের নথি যে কর্মীর তত্ত্বাবধানে ছিল, তাঁকেও শো-কজ করতে হবে।” অধ্যক্ষ লক্ষ্মীনারায়ণ নিয়োগী জানান, কলেজের কোন নথি কী ভাবে বাইরে গিয়ে পড়েছিল, সে ব্যাপারে তাঁরা খোঁজখবর নিচ্ছেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁর এবং কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্যদের আশ্বাস পাওয়ার পরে রাত ৮টা নাগাদ ঘেরাও ওঠে। |