তোলাবাজি নিয়ে আইএনটিটিইউসি-র দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের অভিযোগ ছিলই। বুধবার জনসমক্ষে দু’পক্ষের মারপিটে অশান্ত হয়ে উঠল গোটা আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ড এলাকা। এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ মিনি ও বড় বাসের তৃণমূল প্রভাবিত দুই ইউনিয়নের সমর্থকদের লাঠি-রড হাতে ছুটোছুটি দেখে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ঘন্টা চারেকের জন্য বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “ভুল বোঝাবুঝি থেকেই সমস্যা হয়েছিল। সেটা মিটে গিয়েছে।”
তৃণমূলের সূত্রের খবর, গণ্ডগোলের সূত্রপাত মঙ্গলবার তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে। ওই দিন আসানসোল শিল্পাঞ্চলের সমস্ত রুটের মিনিবাসে তৃণমূলের পতাকা লাগানো হলেও একটি বাসের কর্মী তা খুলে দেন। তার প্রতিবাদে এ দিন বেশ কয়েকটি রুটে মিনি চলাচল বন্ধ করে দেয় আইএনটিটিইউসি-র মিনিবাস কর্মী সংগঠন। সেটির সদস্যেরা বাসস্ট্যান্ডে ঢুকে বড় বাস চলাচলেও বাধা দেন বলে অভিযোগ। মুহূর্তে গোটা চত্বর রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। লাঠি-রড হাতে একে অপরের দিকে ধেয়ে যাওয়া ছাড়াও এলোপাথাড়ি ছোড়া হতে থাকে ইট-পাথর।
বড় বাস সংগঠনের নেতা সঞ্জয় সিংহের অভিযোগ, “দূরপাল্লার যাত্রীদের কথা ভেবে আমরা বাস বন্ধ রাখার বিরোধিতা করেছিলাম। কিন্তু মিনিবাস সংগঠনের সম্পাদক রাজু অহলুওয়ালিয়ার নেতৃত্বে এক দল দুষ্কৃতী আমায় মারধর কছে।” রাজুবাবু অবশ্য দাবি করেন, “পতাকার অবমাননার প্রতিবাদে বাসস্ট্যান্ডে মিছিল করছিলাম। সেই সময়ে সঞ্জয় সিংহ দুষ্কৃতীদের নিয়ে হামলা চালায়। আমরা কাউকে মারধর করিনি।”
স্থানীয় সূত্রের খবর, অশান্তির নেপথ্যে রয়েছে বাসমালিকদের থেকে তোলাবাজি এবং প্রভাব বিস্তারের লড়াই। সিটুর আসানসোল মহকুমা সভাপতি পার্থ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “তৃণমূলের কিছু ভুঁইফোঁড় নেতা সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছেন। খরচ তুলতে বিপুল তোলাবাজি করা হচ্ছে।” সরাসরি এ ব্যাপারে মুখ না খুললেও মিনিবাস মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায়ের ক্ষোভ, “নানা অজুহাতে প্রায়ই বাসে পতাকা লাগানো হচ্ছে। কথায়-কথায় গণ্ডগোল। এতে বাসকর্মীদের ক্ষতি নেই। তাঁরা দিনের মজুরি ঠিকই পেয়ে যান। বিপাকে আমরা আর সাধারণ যাত্রীরা।” দুই ইউনিয়নই অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। |