পণ্যবাহী গাড়িতে পিকনিক করার হিড়িক চলছেই ডুয়ার্স জুড়ে। গত সোমবার পিকআপ ভ্যান খাদে পড়ে সামসিং এর কাছে লালিগুরাসে ছয় স্কুলপড়ুয়ার মৃত্যু হয়। সোমবার সন্ধ্যায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক জন মারা যাওয়ার মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে পাঁচ। তারপরেও মালবাহী গাড়িতে পিকনিক যাওয়ার ঘটনায় বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়েনি। নতুন বছরের প্রথম দিনে মালবাজারের মংপং থেকে মূর্তিখোলা সর্বত্রই পিকআপ ভ্যান জাতীয় হুডখোলা গাড়িতে নিকনিকের দলগুলি দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গেল। |
গাড়ির মালিকদের একাংশ জানিয়েছেন, পণ্যবাহী গাড়িতে যাত্রী পরিবহণ করার সময় দুর্ঘটনা ঘটলে বিমার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় না। পুলিশের পক্ষ থেকেও গাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু তারপরেও পিকনিকের আয়োজনে পিক-আপ ভ্যানই অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার বছরের প্রথম দিনে ফালাকাটা থেকে চালসা এলাকায় পিকনিক করতে আসা একটি দলের সদস্যরা জানান, যাত্রীবাহী ছোট বাস তেলের খরচ ছাড়াই ৩ হাজার টাকা ভাড়া চায়। সেখানে মাত্র দেড় হাজার টাকাতেই পিকআপ ভ্যান ভাড়া পাওয়া যায়। পিকনিকের সরঞ্জাম সমেত অন্তত ২০ জন সহজেই তাতে চড়ে যাওয়া যায়। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকি মহাপাত্র বলেন, “জেলা জুড়ে মালবাহী গাড়িতে পিকনিক যাওয়া রুখতে নজরদারি শুরু হয়েছে। তবে বাসিন্দাদের সচেতনতাই সবার আগে।” সার্বিক সচেতনতা ছাড়া পিকআপ ভ্যানে চড়া রোখা যাবে না বলে মনে করেন জেলা তৃণমূল সভাপতি চন্দন ভৌমিকও। দলের পক্ষ থেকে সচেতনতা বাড়াবার কাজ করা হবে বলেও তিনি জানান। নাগরাকাটার কংগ্রেস বিধায়ক যোশেফ মুন্ডা বলেন “সোমবারের পিকনিকের দলটি যদি কোনও যাত্রীবাহী গাড়িতে থাকত তাহলে দুর্ঘটনা এতটা ব্যাপক আকার ধারণ করত না বলেই মনে হচ্ছে।” জলপাইগুড়ি জেলা সিপিএম নেতা সলিল আচার্য জানান, দলের তরফে মালবাহী গাড়িতে পিকনিক করতে যাওয়ার বিরুদ্ধে প্রচার করা হবে।
এর মধ্যে লালিগুরাসে নাগরাকাটার পড়ুয়াদের পিকনিকের গাড়ি খাদে পড়ার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে পাঁচ হয়েছে। ঘটনাস্থলে মারা যায় চার জন। সোমবার সন্ধ্যায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সুশীলা ছেত্রী (১৬)র মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার সকালে নাগরাকাটায় মৃতদের শেষকৃত্য করা হয়। নাগরাকাটার বিধায়ক মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানান। ওই ঘটনায় জখম আরও চারজন বর্তমানে মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। |