কারচুপি শৌচাগার প্রকল্পেও
শিক্ষায় ক্যাডার নিয়েছিলেন সূর্য, নালিশ সুব্রতর
ঞ্চায়েত ভোট সামনেই। তার আগে প্রাক্তন পঞ্চায়েতমন্ত্রী এবং বর্তমানে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের বিরুদ্ধে বাম জমানায় সরকারি দফতরে ক্যাডার নিয়োগের অভিযোগ তুললেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
সুব্রতবাবুর অভিযোগ, বামফ্রন্টের আমলে পঞ্চায়েতমন্ত্রী থাকাকালীন শিশুশিক্ষা কেন্দ্র (এসএসকে) এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র (এমএসকে)-এ কয়েক হাজার পার্টি ক্যাডার নিয়োগ করেছিলেন সূর্যকান্তবাবু। ওই সব কর্মীর বেতনের (প্রায় ৫৫ কোটি টাকা) দায়ভার নতুন সরকারের ঘাড়ে এসে পড়েছে। যে-ভাবে অর্থসঙ্কট ঘনিয়ে এসেছে, তাতে বছরে ৫৫ কোটি টাকার বোঝা টানা মুশকিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পঞ্চায়েতমন্ত্রী বলেন, “আমরা গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে আনতে চাই। তাই বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, একই ভাবে গ্রামাঞ্চলে সব বাড়িতে পাকা শৌচালয় নির্মাণের প্রকল্প ঘিরেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সূর্যকান্তবাবুর আমলেই এ-সব হয়েছে বলে প্রাথমিক রিপোর্ট এসেছে। তাই তদন্তের আওতায় থাকছে এটিও।
অভিযোগের ব্যাপারে পাল্টা সবিস্তার মন্তব্যে যেতে চাননি বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্তবাবু। তিনি শুধু বলেন, “আগেও আমার বিরুদ্ধে এ-সব বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিককে দিয়ে এবং তার পরে সিআইডি তদন্তের কথা বলা হয়েছে। গ্রেফতারের কথা বলা হয়েছে! ওঁদের কিছু করার থাকলে করুন!”
অনুমোদিত শিশুশিক্ষা কেন্দ্র এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের সহায়ক-সহায়িকাদের ভাতার টাকা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। সুব্রতবাবু এ দিন জানান, ওই কর্মীদের নিয়ে তাঁদের কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু সিপিএম ক্ষমতায় থাকাকালীন কেন্দ্রের অনুমোদন না-নিয়েই এই ধরনের কয়েক হাজার প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিল বলে পঞ্চায়েতমন্ত্রীর অভিযোগ। তিনি বলেন, “ওই সব অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সিপিএমের ক্যাডার নিয়োগ করা হয়েছে।” ওই সব ক্যাডারের বিরুদ্ধে তাঁরা কী ধরনের ব্যবস্থা নেবেন? সুব্রতবাবু বলেন, “যাঁরা এ ভাবে নিযুক্ত হয়েছেন, তাঁদের যোগ্যতা যাচাই করা হবে। যাঁরা যোগ্য, তাঁদের রেখে দিতে বলা হবে কেন্দ্রকে। কিন্তু যাঁরা যোগ্য নন, তাঁদের নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।”
পঞ্চায়েতমন্ত্রী আরও জানান, ‘নির্মল গ্রাম’ গড়ার নামে পাকা শৌচালয় নির্মাণ প্রকল্পেও বিস্তর গোলমাল ধরা পড়েছে। হিসেব নিতে গিয়ে এখন দেখা যাচ্ছে, লক্ষ লক্ষ শৌচালয় নাকি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যত শৌচালয় নষ্ট হয়েছে বলে দেখানো হচ্ছে, বাস্তবে তত শৌচালয় তৈরিই হয়নি! আর এই ধরনের কারচুপি সূর্যকান্তবাবুর আমলেই হয়েছে বলে সুব্রতবাবুর অভিযোগ। এই বিষয়েও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বিরোধী শিবিরের মতে, বাম জমানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে সূর্যকান্তবাবুর বিরুদ্ধে তদন্তের ফাইল খোলার হুঁশিয়ারি এর আগেই দিয়েছিলেন বর্তমান সরকারের মন্ত্রীরা। এ বার তার সঙ্গে পঞ্চায়েত যোগ হল। বারাসতের ঘটনাকে ধর্ষণ হিসেবে না-দেখানোর জন্য পুলিশ-প্রশাসনের উপরে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে এবং
বিচার না-পেলে বড় আন্দোলন হবে বলে সোমবার জনসভায় দাঁড়িয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সূর্যকান্তবাবু। তার পরেই সুকৌশলে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আবার সামনে আনল নতুন সরকার।
বাম আমলের আবাসনমন্ত্রী গৌতম দেব, ভূমিমন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা, খাদ্যমন্ত্রী পরেশ অধিকারী ও নরেন দে-র বিরুদ্ধেও আগেই তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য। যদিও তাঁদের কারও বিরুদ্ধেই এখনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.