নববর্ষে পর্যটক বেড়েছে হাজারদুয়ারিতে
হিম ও কুয়াশা ভরা বর্ষশুরুর সকাল থেকেই হাজারদুয়ারি কাউন্টারের সামনে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। মিউজিয়াম সূত্রে জানা গিয়েছে, ফেলে আসা বছরের শুরুর দিন হাজারদুয়ারি দেখতে ১৬৪১৬ জন ভিড় করেন। এ বার সেখানে পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৬৮২৫ জন। তার মধ্যে ২০ জন বিদেশি পর্যটকও ছিল। সব মিলিয়ে বর্ষবরণের দিন প্রায় লক্ষাধিক পর্যটকের ভিড়ে জমজমাট লালবাগে। হাজারদুয়ারি মিউজিয়াম দেখতে প্রতি বছর পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু সেই তুলনায় পরিকাঠামোর কোনও উন্নয়ন হয়নি বলে অভিযোগ।
জেলা চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি অজয়কুমার সিংহ যেমন প্রশ্ন তুলেছেন, “বহিরাগত পর্যটকের ভিড় বাড়ছে ঠিকই, কিন্তু সেই তুলনায় তাদের সুযোগ-সুবিধা দিতে পারছি কি?”
প্রশাসনিক গাফিলতির কারণেই লালবাগ পর্যটন শিল্পের কোনও উন্নয়ন নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। যেমন ভাগীরথীর পশ্চিম পাড়ে খোশবাগ থেকে রানি ভবানির মন্দির-সহ বিভিন্ন স্মারক ঘুরে দেখার মত পরিবহণ ব্যবস্থা এখনও গড়ে ওঠেনি। কিন্তু প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। সব মিলিয়ে তার প্রভাব পড়ছে জেলার অর্থনীতিতে। পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন বিষয়ে প্রশাসন মুখ ফিরিয়ে থাকলে বহিরাগত পর্যটকরাও লালবাগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে বলেই ব্যবসায়ী মহলের আশঙ্কা। লালবাগ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, “প্রয়োজনীয় শৌচাগারের অভাব রয়েছে। পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থাও নেই। প্রশাসন চেষ্টা করলেও রাজনীতির কচকচানি রয়েছে। পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে জনপ্রতিনিধিদেরও দায় রয়েছে। কিন্তু তাঁদের ভূমিকাও হতাশজনক।”
উপচে পড়া ভিড় হাজারদুয়ারিতে। —নিজস্ব চিত্র।
এদিকে বহিরাগত কোনও পর্যটক লালবাগ স্টেশন থেকে নেমে হোটেলে যাবেন, তার কোনও ব্যবস্থা নেই। স্টেশন চত্বরে রিকশা বা টাঙ্গা রয়েছে। কিন্তু তারা কেউই সঠিক ভাড়া নেয় না। সেই সঙ্গে এক শ্রেণির হোটেলের গুণগত মানও ভাল নয়। পর্যটন মরসুমে ঘরভাড়াও বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায় বলেও অভিযোগ। বহরমপুরের হোটেল মালিক অশেষ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঠিক মত আপ্যায়ন পেলে পর্যটকরা মুর্শিদাবাদে বেড়াতে আসার যে বাড়তি আগ্রহ দেখাবেন, সেই ভাবনা থেকেই শত যোজন দূরে একশ্রেণির ব্যবসায়ীদের অবস্থান। ওই মানসিকতার বদল দরকার।”
গত ডিসেম্বরে হাজারদুয়ারি দেখার জন্য ৯৯ হাজার ৪৬৫ জন পর্যটক টিকিট কেটেছেন বলে জানা গিয়েছে। এদিনও লালবাগে পর্যটকদের চোখে পড়ার মত ভিড়। হাজারদুয়ারি গেটের মুখে লম্বা লাইনে অপেক্ষারত পর্যটকদের মাথার মিছিল। দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা দিশারী ভট্টাচার্য বলেন, “লালবাগে কোনও মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা নেই। ঘুরে দেখারও কিছু নেই। সন্ধ্যার পরে হোটেলের ঘরে টিভি দেখে কাটানোটা খুব বিরক্তির। হাজারদুয়ারিকে ঘিরে লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের ব্যবস্থা থাকলে ভাল হত।”
পর্যটকদের ভিড় থাকা সত্ত্বেও জনবহুল ও ব্যস্ততম শহরের ৮টি মোড়ে এবছর পুরসভা যান নিয়ন্ত্রণ করার ফলে যানজট এড়ানো সম্ভব হয়েছে। লালবাগবাসী এতে খুশি।
কাউন্সিলর বিপ্লব চক্রবর্তী জানান, ডিসেম্বরের শুরু থেকেই পর্যটকদের যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য পুরসভার তরফে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২২ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে। অন্যান্য বছর যানজটে সাধারণ মানুষ নাজেহল হলেও এবার সেই পরিস্থিতি ছিল না। গাড়ি নিয়ে শহরে ঢোকার ক্ষেত্রে লালবাগ স্টেশনের পাশ দিয়ে রেজিস্ট্রি অফিস-চকবাজার হয়ে হাজারদুয়ারি চত্বরে পৌঁছে যাচ্ছে আর বের হওয়ার সময়ে দক্ষিণ দরওয়াজা হয়ে পাঁচরাহা বাজারের রাস্তা দিয়ে তৃতীয় সড়ক ধরে বহরমপুরের রাস্তায় যাবে। তিনি বলেন, “এই যাতায়াতের পথে ৮টি মোড়ে পড়ছে। প্রতিটি মোড়ে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ থাকায় যানজট এড়ানো সম্ভব হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.