|
|
|
|
হাসপাতালে ঠাঁই পেল রাস্তায় পড়ে থাকা শিশু |
কিংশুক গুপ্ত • ঝাড়গ্রাম |
বছর খানেক হল মহকুমা থেকে জেলা হাসপাতালে ‘উন্নীত’ হয়েছে ঝাড়গ্রামের সরকারি হাসপাতালটি। অপ্রতুল শয্যা, চিকিৎসক, নার্স, কর্মী-সহ পরিকাঠামোগত নানা অভাব রয়েছে। তবে তাঁদের মানবিকতায় যে কোনও খামতি নেই তা বুঝিয়ে দিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রাস্তায় পড়ে থাকা একটি মরণাপন্ন অজ্ঞাতপরিচয় শিশুকে তুলে এনে পরম মমতায় চিকিৎসা ও সেবা যত্ন করছেন চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীরা। তীব্র অপুষ্টির শিকার ওই শিশুটি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছে বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। রাজ্যে যেখানে সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে প্রায়ই আমানবিক আচরণের অভিযোগ ওঠে, সেখানে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এই ‘মানবিক মুখ’ ব্যতিক্রমী অবশ্যই। শিশুটির পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তাই শিশুটিকে ‘অনাম’ নামেই ডাকছেন চিকিৎসক-নার্সরা। হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত রবিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের লাগোয়া রাস্তার ধারে ছেঁড়া কাঁথা মুড়ি দেওয়া বছর তিনেকের শিশুটি শীতে কুঁকড়ে পড়ে কাঁদছিল। পথ চলতি অনেকেই শিশুটিকে দেখেছেন, কিন্তু সকলেই পাশ কাটিয়ে চলে গিয়েছেন। ব্যতিক্রম হাসপাতালের জিডিএ সম্বিত ঘোষ। |
|
উদ্ধার হওয়া শিশুটি। ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
সম্বিতবাবু বলেন, “বছর তিনেকের শীর্ণ শিশুটির সারা শরীরে ঘা। দেখতে পেয়েই সুপারকে খবর দিই।” এরপর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সুদীপ কাঁড়ার, নার্সিং-সুপার যুথিকা দে ও সম্বিতবাবু শিশুটিকে তুলে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। শিশুটিকে সর্বক্ষণ দেখভালের জন্য একজন অ্যাটেনডেন্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসক জয়দেব মাহাতো, প্রসূন ঘোষেরা শিশুটিকে জামাকাপড় ও গরম পোশাক কিনে দিয়েছেন। নিয়ম করে শিশুটিকে সুষম খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। খবর পেয়ে রবিবার রাতেই হাসপাতালে গিয়ে শিশুটিকে দেখে এসেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী। তিনি বলেন, “এই ভাবেই মানবিক মুখ নিয়ে আমাদের সেবার হাত বাড়াতে হবে।” হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সুদীপ কাঁড়ার বলেন, “শিশুটি তীব্র অপুষ্টির শিকার। চিকিৎসার পর আপাতত শিশুটির শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল। তবে শিশুটি কথা বলতে পারছে না। শিশুটি সুস্থ হলে সরকারি ভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।” শিশুটির সম্পর্কে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশকে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। |
|
|
|
|
|