বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি |
নির্বিচারে গাছ কাটার অভিযোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ‘বনবীথি’ সাফ হয়ে গিয়েছে, জানতেন না উপাচার্য। যখন জানলেন তখন সমস্ত গাছ, ঝোপঝাড় কেটে ফেলা হয়েছে। আবর্জনা দিয়ে অনেকটাই ভরাট হয়েছে নিচু জলাজমি। এত দিন যে জায়গা ছিল বেজি, ভাম, শিয়াল ও নানা পাখির নিরাপদ আস্তানা, অভিযোগ সেই জায়গা এখন কার্যত ফাঁকা মাঠ।
বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির (বেসু) ঘটনা। কলকাতা-সহ আশপাশের বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় বেসু বেশি সবুজ। সেখানেই জঙ্গল কাটায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে বেসুতেই। গোপাল রায় নামে এক শিক্ষক বলেন, “অধ্যাপকেরা পাখির ছবি তুলতেন। আর পাখি আসবে না।” বেসুর কর্মী নিমাই জাঠি বলেন, “যেখানে পরিবেশ বিজ্ঞান পড়ানো হয়, সেখানে গাছ কাটা, জলাভূমি ভরাট হবে ভাবিনি।” |
অভিযোগ, বেসুর প্রশাসনিক ভবনের দক্ষিণে কয়েক বিঘা জুড়ে থাকা প্রাকৃতিক জঙ্গল রাতারাতি কেটে আবর্জনা ফেলে ভরাট করা চলে কয়েক দিন। সোমবারেই উপাচার্য অজয়কুমার রায়ের সঙ্গে দেখা করে এ নিয়ে প্রতিবাদ জানায় বেসুর শিক্ষক সংগঠন বেসুটা। মঙ্গলবার, বেসুটার সভাপতি অপূর্ব দত্ত জানান, উপাচার্য বলেন তিনি এই ঘটনা জানতেন না। পরে জানেন রেজিস্ট্রারের নির্দেশে পূর্ত দফতরের কর্মীরা নির্বিচারে গাছ কেটেছেন। তখন কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। আরও বলেন, “উপাচার্য কী নির্দেশ দিয়েছেন জানি না, এ দিনও পে-লোডার ও লরি দিয়ে কাজ চলছে।” ঘটনাস্থলে যান পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানালে তদন্ত শুরু হয়। সুভাষবাবু এবং বেসুটার প্রতিনিধিরা উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের সঙ্গে দেখা করে বৈঠকের পরে কাজ বন্ধ হয়।
এ দিন বনবীথিতে দেখা যায় লরি ও পে-লোডার দাঁড়িয়ে। সুভাষবাবু বলেন, “এই জলাজমিতে বানের গঙ্গার জল ঢুকত, জঙ্গলে বন্য প্রাণীরা ঘুরত।’’
কার নির্দেশে কেন এ ভাবে বনবীথি কাটা হল? উপাচার্য বলেন, “ঘটনাটা জানতাম না। পরে জেনেছি রেজিস্ট্রারের ইচ্ছা ওই জায়গা পরিষ্কার করে চাষবাস হবে। তাই তিনি পরিষ্কার করান। তবে এত গাছ কাটা ঠিক হয়নি। জেনেই কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।” রেজিস্ট্রার বিমান মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঝোপঝাড়ের জন্য ক্যাম্পাসে সাপের উৎপাত হচ্ছিল। তাই সাফাই দরকার ছিল। এ নিয়ে বৈঠকের প্রয়োজন হয়নি।” বিমানবাবু দাবি, জায়গা ভরাট হচ্ছে না, জায়গার অভাবে বেসুর ভিতরের আবর্জনা ফেলা হয়। |