অস্থায়ী কর্মীদের ধর্মঘটে অচল রাঁচি চিড়িয়াখানা |
বাঘের জায়গায় বাঘের দেখা নেই। ভালুক রয়েছে ঘরের ভিতর। হাতিও রয়েছে ঘরের ভিতর। অনেক ডাকাডাকিতেও বাইরে এল না। নতুন বছরের প্রথম দিনে রাঁচির বীরসা মুন্ডা বায়োলজিক্যাল পার্ক বা চিড়িয়াখানায় এসে কার্যত হতাশ হয়ে ফিরলেন দর্শকরা। সেখানকার
অস্থায়ী কর্মীদের অবস্থান বিক্ষোভের জেরে ঘর ছেড়ে দর্শকদের সামনে আসতেই পারল না চিড়িয়াখানার পশুপাখিরা। কয়েকটি এমু পাখি আর হাঁস দেখেই শেষ পর্যন্ত চিড়িয়াখানা ছাড়তে হল সকলকে।
চাকরিতে স্থায়ীকরণের জন্য অনেকদিন ধরেই কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন চিড়িয়াখানার অস্থায়ী কর্মীরা। কিন্তু এ পর্যন্ত ঝাড়খন্ড সরকারের পক্ষ থেকে সে বিষয়ে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ অস্থায়ী কর্মীদের। ফলে আজ, নতুন বছরের শুরুতেই তাঁরা কাজ বন্ধ রেখে অবস্থান বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত নেন। আর তার জেরেই অচল হয়ে পড়ে চিড়িয়াখানার জন্তু-জানোয়ারদের দেখভালের কাজকর্ম। আসলে ওঁরাই তো চিড়িয়াখানার জীবজন্তুদের খাঁচার ভিতর থেকে বাইরে বার করেন। আবার বিকেলে ঘরে ঢোকান। |
চিড়িয়াখানার রেঞ্জার জয়প্রকাশ ভগত জানান, অস্থায়ী কর্মীদের দাবি নিয়ে বন দফতরের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। সকাল থেকেই রেঞ্জার এবং অন্যান্য আধিকারিকরা অস্থায়ী কর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। কিন্তু অবস্থানকারীরা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের আবেদনে সাড়া দেননি। রেঞ্জার বলেন, “এ ভাবে কাজ বন্ধ রেখে কিছু হবে না। আর অস্থায়ী কর্মীদের কাজ আমরা অন্যান্য লোকজনকে দিয়ে চালিয়ে নেব।” যদিও বছরের প্রথম দিনটিতে তা করতে পারেননি তাঁরা। রেঞ্জার জয়প্রকাশ মুখে যাই বলুন না কেন দুপুর গড়িয়ে যাওয়ার পরেও কিন্তু কর্মীদের অভাবে পশুদের ঘরের বাইরে বার করা যায়নি। হতাশ করেছেন চিড়িয়াখানার পর্যটকদের।
এমনিতে রাঁচির চিড়িয়াখানা অনেকটাই অভয়ারণ্যের মতো। বাঘ, ভালুক, চিতার মতো প্রাণীগুলির ঘরের বাইরে এতটাই খোলা জায়গা থাকে যেখানে ওইসব পশু-প্রাণীরা অবাধে ঘুরতে পারে। আর তাই দেখতেই রাঁচি, রামগড়, কাঁকে, হাজারিবাগের মতো জায়গা থেকে দর্শকরা। বিশেষত ছোটরা ছুটে আসে এই চিড়িয়াখানায়। কিন্তু এ দিন সবাইকেই হতাশ হয়ে ফিরতে হল।
প্রতিদিন খাঁচার ভিতর থেকে বাঘ বের করার দায়িত্বে থাকা কর্মী কোলহা কিংবা হাতির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা মহিন্দর সিংহরা জানান, তাঁদের চাকরির স্থায়ীকরণের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষ না নিলে তাঁরা কাজে যোগ দেবেন না। তবে ঘরের ভিতর ওইসব পশু-প্রাণীদের পরিচর্যার কাজ অবশ্য চলেছে বলেই জানানো হয়েছে চিড়িয়াখানার পক্ষ থেকে। |