সংঘাত এড়াতে
ত্রিপুরার বনেই হাতি সংরক্ষণের উদ্যোগ
নির্বিচার বৃক্ষচ্ছেদন ও চোরাশিকারিদের দাপটে অস্তিত্বের সঙ্কটে ত্রিপুরার হস্তিকুল। হাতির নিজস্ব বিচরণভূমি ক্রমশই সঙ্কুচিত হচ্ছে বনাঞ্চল গ্রাস করে মনুষ্য বসতি স্থাপনের প্রবণতায়। এর জেরে খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে হাতির পাল। মানুষ-হাতির সংঘর্ষে বিপন্ন দুই তরফই।
বুনো হাতির তাণ্ডবে সাধারণ মানুষের জীবন ও সম্পত্তিহানিও রাজ্য প্রশাসন ও বন দফতরের মাথা ব্যথার কারণ। এই সব সমস্যার সমাধানে তাই রাজ্য সরকার শুধু হাতিদের জন্য দু’টি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হচ্ছে।
রাজ্যের বনমন্ত্রী জিতেন চৌধুরী সম্প্রতি নিজেই জানান হাতি বাঁচাতে এই পরিকল্পনার কথা। বনাঞ্চলেই বুনো হাতিদের জন্য এই সংরক্ষণের ব্যবস্থা করছে রাজ্যের বন দফতর। মূলত লংতরাই ভ্যালি, আঠারোমুড়া, জম্পুই পাহাড় অঞ্চলে বন্য হাতির বসবাস। হাতিরা যাতে বনে নিজস্ব আস্তানা ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে গ্রামবাসীদের ক্ষয়ক্ষতি না করে সে দিকে লক্ষ্য রেখেই স্থির হয়েছে, প্রাকৃতিক বনাঞ্চলেই আপাতত হাতি সংরক্ষণে দু’টি এলাকা গড়ে তোলা হবে।
একটি গোমতী জেলার অমরপুর মহকুমার গান্ধারীতে। এ জন্য জমিও চিহ্নিত হয়েছে। অন্যটি ধলাই জেলার আঠারোমুড়া রেঞ্জে। আঠারোমুড়ায় স্থান বাছাইয়ের কাজ চলছে।
ব্রিটিশ সার্ভেয়ার জন হান্টারের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এক সময় ত্রিপুরায় হাতির সংখ্যা ছিল মানুষের থেকে বেশি। কিন্তু দেশ ভাগের পর, বিশেষত বিগত কয়েক দশকে রাজ্যের জঙ্গলগুলিতে হাতির সংখ্যা কমে গিয়েছে বিপুল হারে। গোমতী নদীর উপরে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার কারণে হাতিরা তাদের নিজস্র বিচরণভুমি হারিয়ে চলে যেতে থাকে অন্যত্র। খাদ্যের অভাব, চোরাশিকারির উৎপাত এ সব কারণেও হাতির দল ত্রিপুরার বনাঞ্চল ছেড়ে পড়শি রাজ্য মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, অসমের গভীর জঙ্গলেও পাড়ি দিচ্ছে। ২০০২ সালে হাতির সংখ্যা ছিল ৩৮। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এখন সংখ্যাটা ৫৯।
বনমন্ত্রী জানান, হাতির সংখ্যা যাতে বাড়ে, চোরাশিকারির হাতে যাতে তারা প্রাণ না হারায়, সে জন্য রাজ্যের বন দফতর বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হচ্ছে। ঠিক ‘অভায়রণ্য’ নয়, তবে ‘প্রাকৃতিক বনাঞ্চলে’ই হাতি সংরক্ষণের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এ কাজে বনাঞ্চল সংলগ্ন অ্ধিবাসীদের সঙ্গে আলোচনাও জরুরি।
উল্লেখ্য, পাহাড়ে জুম চাষের কারণে আকছার বনভূমি সাফ হয়ে যাচ্ছে। এই প্রবণতা রোধে জুমিয়াদের জন্য বিকল্প সুযোগ-সুবিধাদানের কথাও ওঠে। এক বনকর্তা জানান, বন্য হাতি সংরক্ষণে জুমিয়াদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। জিতেনবাবু আশা, ত্রিপুরায় বন্য হাতি সংরক্ষণ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে পাহাড় সংলগ্ন গ্রামে প্রাণহানির সংখ্যা হ্রাস পাবে, শস্যের ক্ষয়ক্ষতিও কমবে। এড়ানো যাবে মানুষের সঙ্গে হাতির সংঘাতও।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.