|
|
|
|
১৭০ বছরে খাসি, জয়ন্তিয়ার পাহাড়ি স্কুল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
নজির! স্কুল তৈরি হওয়ার ১৭০ বছর পরে, প্রথম বার স্কুলের তিন ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিক পাশ করল! সেই আনন্দ উদ্যাপনে গত মঙ্গলবার সোহরা তথা চেরাপুঞ্জির মাওসমাই গ্রামে চলল উৎসব। সম্বর্ধনা দেওয়া হল নজিরগড়া তিনজনকে।
১৮৪২ সালে রেভারেন্ড টমাস জোন্সের পা পড়ে সোহরা মালভূমির বুকে। তখনও বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হত এখানেই। ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল হাতে গোনা কয়েকটি উপজাতি জনপদ। শিক্ষার বালাই নেই। ওয়েল্স-এর মিশনারি জোন্স সেই বছরই মাওসমাইতে গড়ে তোলেন এক প্রাথমিক স্কুল। তৈরি হয় ইতিহাস। কারণ সমগ্র খাসি ও জয়ন্তিয়া পাহাড়ে সেটিই প্রথম বিদ্যালয়। আর সেই বিদ্যালয়ের হাত ধরেই প্রথম রোমান হরফে খাসি ভাষা লিখিত চেহারা খুঁজে পায়।
মাওসমাই পর্যটকদের কাছে বিখ্যাত তার চুনাপাথরের গুহার জন্য। পর্যটকরা আসেন। কিন্তু এই স্কুল দেখতে কেই বা আগ্রহী হবেন? এমন কী রাজ্য সরকারেরও তেমন মাথা ব্যাথা ছিল না। স্কুলের দেখভাল করত মাওসমাই প্রেসবিটেরিয়ান গির্জা। ধীরে ধীরে পুরনো কাঠের কাঠামো বদলে সিমেন্টের দৃঢ়তা এসেছে স্কুল ভবনে। সব খরচই আসে গির্জার তহবিল থেকে।
২০০৬ সালে স্কুলটি উচ্চতর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়েছিল। স্কুলের নাম হয় লারসিং খোংগউইর মেমোরিয়াল প্রেসবিটেরিয়ান সেকেন্ডারি স্কুল। লারসিং খোংগউইর ছিলেন প্রথম খাসি পাদরি। জোন্সের সঙ্গে ওয়েল্স অবধি তিনি গিয়েছিলেন। স্কুল তৈরির পরে মাধ্যমিক পর্যায়ের মর্যাদা পেতে কেটে গিয়েছে ১৬৭টি বছর!
২০০৯ সালে মাধ্যমিক পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার পরে এ বছর স্কুলের দশম শ্রেণির তিন ছাত্রছাত্রী এসএসএলসি পরীক্ষায় বসেছিল। পাইনডাপ শাবং, জেনিফার সিয়েমিয়ং ও সাবিত্রী কাশিয়ার—তিনজনই দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে।
তাদের তিনজলকে সম্বর্ধনা দিতে আসেন মেঘালয়ের মুখ্যসচিব উইনস্টন মার্ক সিমোন পারিয়াত। অনুষ্ঠানে গির্জার পাদরিরা মুখ্যসচিবের কাছে স্কুলের উন্নতিসাধনের জন্য কাতর আবেদন জানান। আজ অবধি স্কুলের শিক্ষকদের বেতনও গির্জাই দিচ্ছে। এলাকাবাসীর আবেদন, রাজ্যের প্রাচীনতম স্কুলগুলির একটি তথা খাসি-জয়ন্তীয়া পাহাড়ের প্রথম স্কুলের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকারের উচিত অবিলম্বে স্কুলটি অধিগ্রহণ করা। সরকারের তরফে অবশ্য এখনও কোনও আশ্বাস পাননি গির্জা তথা স্কুল কর্তৃপক্ষ। |
|
|
|
|
|