বছরের প্রথম দিনেই সাইকেলে চেপে ঝাড়খণ্ডের দেওঘর এলাকায় রওনা দিলেন কালনার তেরো জন যুবক। উদ্দেশ্য, এই শহরের পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি সম্পর্কে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়ানো। মঙ্গলবার সকালে শহরের ১০৮ শিবমন্দির চত্বর থেকে যাত্রা তাঁরা শুরু করেন।
ওই যুবকদের দাবি, জেলার মধ্যে কালনা মহকুমার একটি প্রাচীন ঐতিহ্য রয়েছে। পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনেও এই মহকুমা সমৃদ্ধ। সাইকেল যাত্রার পথে, তাঁরা সাধারণ মানুষকে সেটাই জানাবেন তাঁরা। মহকুমার দ্রষ্টব্য স্থানগুলিতে যাওয়ার রাস্তাও বাতলে দেবেন তাঁরা।
গত পাঁচ বছর ধরে কালনা শহরকে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরার এমন চেষ্টা করছে এই দলটি। কালনা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তরুণদের নিয়ে তৈরি করা হয়েছে দলটি। সদস্যেরা জানান, ২০১১ সালে একই উদ্দেশ্যে সুন্দরবনে যায় তারা। পরের বার গিয়েছিল নেপাল। এ বারের সফরের জন্য তাঁরা সঙ্গে নিয়েছেন কয়েক হাজার লিফলেট, কালনার পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন সম্পর্কিত বইপত্র, সিডি ইত্যাদি। দলের সদস্যদের দাবি, প্রচুর পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনে ভরপুর এই মহকুমা। কিন্তু প্রচারের অভাবে বহু মানুষই তা জানেন না। তাদের জানাতেই ৩৮০ কিলোমিটার যাত্রাপথে এক পাতার লিফলেট বিলি করবেন তাঁরা। কালনার শ্রীচৈতন্যের স্মৃতি বিজড়িত মহাপ্রভু বাড়ি, বর্ধমানের মহারাজার সমাধিক্ষেত্র-সহ বিভিন্ন দ্রষ্টব্য স্থানের উল্লেখ রয়েছে ওই লিফলেটে। জায়গাগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণও রয়েছে সেখানে। |
যাত্রা শুরু। কালনা ১০৮ শিব মন্দির চত্বরে মঙ্গলবারের নিজস্ব চিত্র। |
ওই দলের সদস্য কমল হালদার, উত্তম সরকার, অরুণকুমার সরকার, অমর পালেদের বক্তব্য, “পর্যটকদের থাকার জন্য হোটেল, যোগাযোগের নম্বরও আমরা লিফলেটে দিয়েছি। মুখেও বিষয়টি প্রচার করা হবে। পর্যটক টানতে দ্রষ্টব্যস্থানগুলির ছবিও এ বার সঙ্গে থাকছে আমাদের। জনবহুল এলাকায় ছবিগুলি দেখানো হবে।” তেরো সদস্যের ওই দলের দলপতি মুকুন্দলাল বালার কথায়, “কালনায় এত দেখার জায়গা থাকতেও আশানুরূপ পর্যটক আসেন না। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকদের টানতেই টানা কয়েক বছর ধরে চলছে এই সাইকেল র্যালি।” তিনি জানান, প্রচার দলটি বর্ধমান, দুর্গাপুর, আসানসোল হয়ে ঝাড়খন্ডে পৌঁছবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সব ঠিকঠাক চললে দলের সদস্যেরা ১২ জানুয়ারি শহরে পৌঁছবে।
দলের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানাতে এ দিন সকালে শিবমন্দির চত্বরে হাজির হয়েছিলেন কালনার বিধায়ক তথা পুরসভার চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ কুণ্ডু, চার নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনন্দ দত্ত, প্রাক্তন পুরপ্রধান গৌরাঙ্গ গোস্বামী-সহ অনেকে। পুরসভার তরফে দলের সদস্যদের হাতে একটি করে শীতের জ্যাকেট তুলে দেওয়া হয়। চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “কালনাকে পর্যটন কেন্দ্র করে গড়ে তুলতে সরকারি চেষ্টা চলছে। আশা করছি, এই দলটির বিশেষ উদ্যোগও তাতে সাহায্য করবে।” |