লাউদোহার আমদহি গ্রামে জোড়া খুনের ঘটনায় প্রায় দেড় দিন পেরিয়ে গেলেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে বলে জানান আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব। তিনি জানান, অভিযুক্তেরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সোমবার রাতে কাঁকসা থানা এলাকাতেও অভিযান চালানো হয়েছে। অন্য দিকে, লাউদোহায় শেখ সেলিম খুনের ঘটনায় অধরা ৬ অভিযুক্তের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিল দুর্গাপুর আদালত।
সোমবার সকালে আমদহি গ্রামে মোটরবাইকে চড়ে আসা কিছু দুষ্কৃতী সৈয়দ আহমেদ ওরফে শেখ লালুকে গুলি করে পালিয়ে যায়। তার কিছু ক্ষণ পরেই গ্রামের অন্য দিকে ধান ঝাড়াইয়ের কাজ করার সময়ে গুলিতে খুন হন মনসুর আলি ওরফে শেখ মন্টু। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছিল, এলাকায় কয়লা কারবার নিয়ে গোষ্ঠী-রেষারেষিতেই এমন ঘটনা। শেখ লালুর পরিবারের তরফে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের নামে অভিযোগ দায়ের হলেও শেখ মন্টুর বাড়ির লোকজন কয়েক জন অজ্ঞাতপরিচয়ের পাশাপাশি জিয়াউল, সফিকুল, জাকির ও নুরুল নামে চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তাদের মধ্যে প্রথম দু’জন শেখ সেলিম খুনেও অভিযুক্ত।
মঙ্গলবারই দুর্গাপুর আদালত সেলিম-খুনে অভিযুক্ত ৬ জনের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক তৃণমূল নেতা-সহ ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু বাকি ৬ জনের হদিস পায়নি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন যে ৬ জনের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তারা হল শেখ সাজাহান, শেখ সফিকুল, শেখ জিয়াউল, শেখ ভোম্বল, শেখ লাল্টু ও শেখ বুবনে। বৃহস্পতিবার এলাকায় গিয়ে মাইকে আদালতের নির্দেশের কথা ঘোষণা করা হবে। তিন দিনের মধ্যে অভিযুক্তেরা আত্মসমর্পণ না করে তা হলে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানান এডিসিপি (পূর্ব)।
ফরিদপুর (লাউদোহা) থানার মাধাইগঞ্জে ২৫ অক্টোবর বাড়ির কাছে গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান শেখ সেলিম। পর দিন কৈলাসপুর থেকে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ জহিরুল শেখ ও নাসিমুদ্দিন শেখ নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জানায়, সেলিমের প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ আমিনের সহযোগী শেখ সাজাহান ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত। এই সাজাহান এখনও অধরা।
দিন তিনেক পরে কাঁকসার মলানদিঘির জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে পুলিশ শেখ জনিউল ও শেখ সাকিবুল নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, জেরায় তারা খুনের ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের কাছেই পুলিশ এই ঘটনায় শেখ রমজান ও শেখ মোতালি নামে দু’জনের কথা জানতে পারে। তাদেরও গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, তারা আবার শেখ জিয়াউল ও শেখ লাল্টু নামে দু’জন ঘটনায় জড়িত বলে জানায়। এই দু’জন এখনও অধরা। যে দুষ্কৃতী সেলিমকে লক্ষ করে কার্বাইন থেকে গুলি ছোড়ে বলে অভিযোগ, সেই শেখ ভোম্বলও এবং তার সঙ্গে থাকা শেখ সফিকুলও ধরা পড়েনি। এ ছাড়া তদন্তে শেখ বুবনে বলে এক জনে নাম উঠে এসেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এডিসিপি (পূর্ব) জানান, বৃহস্পতিবার এলাকায় গিয়ে মাইকে আদালতের নির্দেশের কথা ঘোষণা করা হবে। তিন দিনের মধ্যে অভিযুক্তেরা আত্মসমর্পণ না করে তা হলে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে। |