|
|
|
|
গ্রামে-গ্রামে কৃষক কমিটি সমর্থন ফিরে পেতে মরিয়া বামেরা |
বরুণ দে • কেশিয়াড়ি |
সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের ঘটনার পর কৃষকদের একটা বড় অংশ সিপিএমের থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। ফলে গ্রামীণ ভোটব্যাঙ্কে ধস নামে, যার প্রভাব পড়ে গত বিধানসভা নির্বাচনে। কিন্তু আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে হারানো জমি পুনরুদ্ধারে এই অংশের সমর্থন পেতেই তৎপর হয়েছে সিপিএম। আর তাই কৃষকসভাকে সামনের সারিতে রেখে এগোতে চাইছেন দলীয় নেতৃত্ব। বুধবার কেশিয়াড়ির এক জনসভায় সেই ইঙ্গিতই দিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র, দীপক সরকারেরা। গ্রামের কৃষক কমিটিগুলোকে দুর্গ বানানোর ডাক দিলেন তাঁরা।
এ দিন সূর্যকান্তবাবু বলেন, “গ্রামে গ্রামে কৃষক কমিটি গড়ে তুলুন। এমন দুর্গ বানান, যাতে কালনাগিনী ঢোকার পথ না পায়।” পাশাপাশি, সাধারণ মানুষের সঙ্গে বন্ধুর মতো মেশার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “মানুষ ওদের উপর বিরক্ত। তবে যাঁরা সরে গিয়েছিলেন, তাঁরা আপনাআপনি ফিরে আসবেন না। তাদের বোঝাতে হবে, আমাদের উপরও আস্থা রাখা যায়। মানুষকে যদি বন্ধু করতে পারেন, তবেই বিশ্বাস অর্জন করা সম্ভব।” |
|
সমাবেশে সূর্যকান্ত মিশ্র। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
দীপকবাবুর কথায়, “সতর্ক থাকবে হবে। কৃষকসভার গ্রাম কমিটিগুলোকে দুর্গে পরিণত করতে হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে আক্রমণ তত বাড়বে। তবে আমরা আমাদের ঘাঁটি রক্ষা করব।” গ্রামে গ্রামে কৃষক কমিটি গড়ে সেগুলি দুর্গ বানানোর এই ডাককে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলও। তাদের মতে, কৃষকদের যে অংশ সিপিএমের থেকে দূরে সরে এসেছিলেন, পঞ্চায়েতের আগে সেই সমর্থন পেতেই কৃষক সংগঠনকে সামনে রেখে এগোনোর কৌশল।
পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়িতে শুরু হওয়া সিপিএমের কৃষক সংগঠন কৃষকসভার ৩৬তম জেলা সম্মেলন উপলক্ষে স্থানীয় জগন্নাথ মন্দির মাঠে বুধবার এক জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল। ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার, কৃষকসভার জেলা সম্পাদক হরেকৃষ্ণ সামন্ত প্রমুখ। সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কৃষকদের সমস্যার কথাই বেশি করে তুলে ধরেন নেতৃত্ব। বোঝানোর চেষ্টা করেন, বামপন্থীরা দুর্বল হলে কৃষকদের সমস্যা আরও প্রকট হবে। তাই কৃষকদের স্বার্থেই বামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি জরুরি।
এ দিন সূর্যকান্তবাবু বলেন, “কৃষি ও কৃষকদের জীবনে এত বড় দুর্যোগ কখনও আসেনি। চাষে লাভ নেই। কেন্দ্র ধানের দাম ঠিক করেছে। আগে আমরা কেন্দ্রের ঠিক করা দামের উপর ৫০ টাকা করে বোনাস দিতাম। রাজ্য সরকার তাও তুলে দিয়েছে।” কৃষকেরা কেন্দ্রের ঠিক করা ধানের দাম কুইন্টাল পিছু ১২৫০ টাকা করে পাচ্ছেন না বলেও দাবি করেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর দাবি, “সকলেই ৮৫০-৯০০ টাকায় ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।” কেরোসিন তেল বা রান্নার গ্যাসের দাম বাড়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনাও করেন তিনি।
|
|
|
|
|
|