এক ঠিকানায় বহু বাড়ি
একাধিক এলপিজি সংযোগ তালিকা নিয়ে বিভ্রান্তি চরমে
নিমতার নদীকূল রোড, এই এক ঠিকানাতেই ইনডেন-এর এলপিজি সংযোগ রয়েছে ৩১টি! ১৪০ সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের ঠিকানায় ইনডেনের গ্যাস সংযোগের সংখ্যা প্রায় ১০০টি! শিলিগুড়ির শুধু রানিডাঙা এবং এসএফ রোড, এই দুই ঠিকানায় সেই সংখ্যা যথাক্রমে ৫০ ও ৪৪টি!
কেন্দ্রের নয়া নিয়মে বছরে ছ’টি ভর্তুকির গ্যাস সিলিন্ডার পেতে হলে একই ঠিকানায় একটি পরিবারে একটির বেশি এলপিজি সংযোগ রাখা যাবে না (তেল সংস্থা আলাদা, যেমন ইনডেন ও এইচপি বা বিপিসিএল হলেও)। এক ঠিকানায় একাধিক সংযোগ থাকলে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে কেওয়াইসি সংক্রান্ত আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। তার মাত্র পাঁচ দিন বাকি থাকলেও গোটা প্রক্রিয়াটি নিয়ে বিভ্রান্তি চরমে। যেমন উপরে উল্লিখিত ঠিকানার মতো অনেক ঠিকানাতেই পরিবার শুধু নয়, বহু বাড়ি সম্পূর্ণ আলাদা হলেও সকলকেই ওই একাধিক সংযোগের তালিকায় রাখা হয়েছে। হয়তো একই ঠিকানার কিছু বাড়িতে একাধিক সংযোগ থাকলেও কিছু বাড়িতে আবার একটিই সংযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে একটি সংযোগ নেওয়া গ্রাহককেও হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
কাদের কেওয়াইসি
একই ঠিকানায় একটি পরিবারে এক নামে বা ভিন্ন নামে একই বা দু’টি আলাদা তেল সংস্থার সংযোগ থাকলে সেই গ্রাহককে কেওয়াইসি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দাবি তেল সংস্থার। তবে এমন কোনও গ্রাহক ওই নির্দেশ না-পেয়ে থাকলে সংস্থাগুলির বক্তব্য, তাঁরা নিজের থেকে কেওয়াইসি জমা দিন।

কাদের নয়

সংস্থাগুলি জানিয়েছে, যাঁদের একটি সংযোগ আছে তাঁদের এখনই কেওয়াইসি জমা দিতেহবে না। সেটি বাধ্যতামূলক নয়। অবশ্য তাঁরা চাইলে তা দিতে পারেন। একই সংযোগেঅবশ্য দু’টি সিলিন্ডার রাখা যাবে।কেন একটি সংযোগ থাকলেও কেওয়াইসি দেওয়ার তালিকায় নাম উঠেছে তেল সংস্থাগুলি মানছে, একটি সংযোগ নেওয়া অনেক গ্রাহকের নামই একাধিক সংযোগের তালিকায় ওঠায় তাঁদের ভোগান্তি হচ্ছে। কিন্তু সংস্থাগুলির দাবি, এ জন্য তারা নয়, দায়ী উপরিউক্ত ওই ধরনের ‘অসম্পূর্ণ’ ঠিকানা। বিশেষ করে শহরতলি ও গ্রামীণ এলাকায় অনেক বাড়িরই আলাদা নম্বর নেই। শুধুমাত্র রাস্তা বা এলাকার ঠিকানার ভিত্তিতেই গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। আবার বস্তি এলাকার ঠিকানা এক হলেও বাড়ি ও পরিবার হয়তো সম্পূর্ণ আলাদা। আবার বাড়িওয়ালা-ভাড়াটিয়ার ঠিকানা এক হলেও তাঁদের দু’জনেরই নাম উঠতে পারে একাধিক সংযোগের ওই তালিকায়।
রয়েছে আরও সমস্যা। বাড়ির নম্বর এ, ই, আই, ও এবং ইউ, এ ধরনের হলে একই এলাকার প্রতিটি বর্ণের ক্ষেত্রেও (ধরা যাক এ বা ই দিয়ে) গ্যাসের সংযোগগুলি একাধিক সংযোগের তালিকায় রাখা হয়েছে। সংস্থাগুলির দাবি, এ ধরনের সমীক্ষায় এটাই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি।
তবে তাদের আশ্বাস, সত্যিই একটি সংযোগ নেওয়া গ্রাহকদের পরিবার বা বাড়ি আলাদা হলে আশঙ্কার কিছু নেই। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আলাদা থাকার প্রমাণ-সহ (যেমন বিদ্যুৎ বিল বা মুচলেকা, যা ডিস্ট্রিবিউটরেরা খতিয়ে দেখবেন) কেওয়াইসি দিলে সংযোগ চালু থাকবে। ভর্তুকির গ্যাস পেতে সমস্যা হবে না।

প্রযুক্তিগত সমস্যা
একাধিক সংযোগের তালিকায় নিজের নাম রয়েছে কি না, তা দেখতে গ্রাহকদের জন্য সংস্থাগুলি তাদের ওয়েবসাইটে আলাদা ব্যবস্থা রেখেছে। সেখানে গ্রাহক নম্বর ও ডিস্ট্রিবিউটরের নাম দিয়ে যে কেউ তা দেখতে পারবেন। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই ওয়েবসাইটে সেই তথ্য মিলছে না বলে অভিযোগ। যদিও সংস্থাগুলির দাবি, এটাও তাদের নয়, ইন্টারনেটের প্রযুক্তিগত সমস্যা।

৩১শের মধ্যে কেওয়াইসি না দিলে কী হবে
সরকারি নিয়মে বছরে একটি সংযোগে ভর্তুকির গ্যাস সিলিন্ডার (১৪.২ কেজি যার দাম প্রায় ৪১৩ টাকা) মিলবে ছ’টি। তার বেশি নিতে হলে দিতে হবে ৯০০ টাকারও বেশি। এগুলি সবই গৃহস্থালির বা ‘ডোমেস্টিক’ কানেকশন। যাঁদের কেওয়াইসি জমা দিতে বলা হয়েছে, তাঁরা তা জমা দিলে ১ জানুয়ারি থেকে ওই দু’টি নিয়মেই গ্যাস পাবেন। কিন্তু ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তা না দিলে ১ জানুয়ারি থেকে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের সংযোগ ডোমেস্টিক-এর বদলে ‘নন-ডোমেস্টিক-এক্সেম্পটেড-কমার্শিয়াল’-এ রূপান্তরিত হবে। এর মানে কী? ‘নন-ডোমেস্টিক-এক্সেম্পটেড-কমার্শিয়াল’ সিলিন্ডারও ১৪.২ কেজি-র, যা মূলত স্কুল, কলেজ ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়। এটি কমার্শিয়াল বা বাণিজ্যিক গ্যাস সিলিন্ডারের চেয়ে ওজনে কম, দামেও কম। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাড়তি কর দিতে হয়, যা ডোমেস্টিক সিলিন্ডারে হয় না। তাই সেই গ্যাসের দাম পড়ে ১,১০০ টাকারও বেশি। ভর্তুকির গ্যাসের একটি সংযোগের পাশাপাশি কেউ অবশ্য ইচ্ছে করলে এ ধরনের আর একটি সংযোগও রাখতে পারেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.