|
|
|
|
বড়ো যুবক খুনের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
‘গুপ্তহত্যা’র অভিযোগ সেনাবাহিনী অস্বীকার করলেও, বাক্সার ওই ঘটনা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। সরকারের শরিক বিপিএফ প্রধান তথা বড়োল্যান্ড স্বশাসিত পরিষদের মাথা হাগ্রামা মহিলারি অবশ্য দাবি করছেন, রাজ্যপালের নির্দেশেই নিরীহ বড়ো যুবকদের হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে সেনাবাহিনী। তবে ঘটনাটিকে ‘গুপ্তহত্যা’ বলতে নারাজ গগৈ।
২১ ডিসেম্বর বাক্সার নয়নপুর থেকে, রাজকুমার রাভা, রাজীব বসুমাতারি, খুমদৌন বসুমাতারি নামে তিন যুবককে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন সামরিক পোশাকে থাকা কয়েকজন ব্যক্তি। ২৩ ডিসেম্বর, রাজকুমার অপহরণকারীদের খপ্পর থেকে পালিয়ে এসে অভিযোগ করেন, সেনাবাহিনী তাঁদের জঙ্গলে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে বেআইনি অস্ত্রের সন্ধান জানতে চেয়ে তাঁদের বেধড়ক মারা হয়। অন্য দুই যুবককে জওয়ানরা হত্যা করে। তাঁকেও মৃত ভেবে জঙ্গলে ফেলে রেখে যায়। রাজকুমারের কথামতো তল্লাশি চালিয়ে দলংপারের জঙ্গলে রাজীবের দেহ উদ্ধার হয়। রবিবার মানসের কাহিঘাটে এক যুবকের দগ্ধ মৃতদেহ পাওয়া যায়। সন্দেহ করা হচ্ছে সেটি খুমদৌনের দেহ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শনিবার দুপুরে সেনাবাহিনীর জওয়ানরা দু’টি গাড়িতে জঙ্গলে এসেছিলেন। এক কাঠুরের কাছ থেকে তাঁরা ৩০০ টাকার কাঠও কেনেন। জঙ্গলের আশেপাশের গ্রামবাসীদের সন্দেহ, খুমদৌনের দেহ পোড়ানোর জন্যই ওই কাঠ কেনা হয়েছিল।
ঘটনার জেরে, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমেছেন স্থানীয় জনতা ও বিপিএফ। এর আগে, ১৯ নভেম্বর,কোকরাঝাড়ের টাকামপুরে দুই এনডিএফবি জঙ্গিকে গুলির লড়াইতে হত্যা করার দাবি জানিয়েছিল সেনাবাহিনী। সে ঘটনাতেও সংগ্রামপন্থী এনডিএফবি অভিযোগ করে, দুই নিরস্ত্র সদস্য বি গোগুয়াম ও এম উরাইলাংকে বেশ কিছুদিন আগেই সেনাবাহিনী গ্রেফতার করেছিল। পরে, তাঁদের গুলি করে হত্যা করা হয়।
হাগ্রামা বলেন, “বিটিএডি এলাকায় ঘরে ঘরে গোপন অস্ত্রের সন্ধানে তল্লাশি চালাবার নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যপাল জানকীবল্লভ পটনায়ক। তার পরেই, বড়োভূমিতে সেনা অত্যাচার ও গুপ্তহত্যার ঘটনা শুরু হয়েছে।” ঘটনাটি নিয়ে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার পাশাপাশি বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে হাগ্রামা। তিনি এই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল শিন্দের সঙ্গেও দেখা করবেন।
বাক্সার ঘটনাটিকে গুপ্তহত্যা বলতে অবশ্য নারাজ মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। দিল্লি থেকে তিনি জানান, গুপ্তহত্যা বলতে সাধারণত বোঝায় যে হত্যায় সরকার জড়িত। এ ক্ষেত্রে, সরকার বা পুলিশ কিছুই জানত না। বিষয়টি নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাক্সার এডিসি গাংলারি মাইকেল তদন্ত করবেন।
সেনাবাহিনীর তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী ২১ ডিসেম্বর বাক্সার নয়নপুর থেকে কোনও যুবককেই তুলে নিয়ে যায়নি। তবে, জনতার দাবি মেনে ও ঘটনার গুরুত্ব বুঝে সেনাবাহিনীর তরফেও ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন কোনও সেনা রেজিমেন্ট ওই এলাকায় অভিযান চালায়নি। জওয়ানরা মানবিধার সম্পর্কে সচেতন। এইধরনের হঠকারী কাজ তারা করবে না। জংলা পোশাক পরা মানেই সেনা জওয়ান নয়। যখন বড়োভূমিতে শান্তি ফিরে আসছে, সেনাবাহিনীর ‘সদ্ভাবনা অভিযানে’ মানুষ উপকৃত হচ্ছেন, তখনই সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করতে কোনও একটি চক্র ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। |
|
|
 |
|
|