শীলার পাল্টা চিঠি কমিশনারের
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দিল্লি পুলিশের চাপানউতোর কিন্তু থামার নাম নিচ্ছে না। তরুণীর গণধর্ষণ ও তার পরপরই দিল্লি জুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরেই মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের সঙ্গে দিল্লি পুলিশের একটা ঠান্ডা যুদ্ধ চলছিল। আর তা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে এক রাশ ক্ষোভ নিয়ে গত কালই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দেকে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত। তার পাল্টা হিসেবে আজ দিল্লির পুলিশ কমিশনার নীরজ কুমার আর একটি চিঠি লিখেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে। মুখ্যমন্ত্রীর সব অভিযোগ তিনি উড়িয়ে দিয়েছেন সেই চিঠিতে।
শীলার অভিযোগ ছিল, ধর্ষিতা তরুণীর জবানবন্দি নেওয়ার সময় বাধা পেয়েছেন সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট ঊষা চতুর্বেদী। দিল্লি পুলিশেরই কিছু উচ্চপদস্থ কর্তার বিরুদ্ধে মূলত ক্ষোভ ছিল শীলার। ঊষাদেবীরও বক্তব্য ছিল, হাসপাতালে হাজির দিল্লি পুলিশের কিছু অফিসার তাঁকে বলেন, তাঁদের তৈরি করা প্রশ্নের ভিত্তিতেই ওই তরুণীর জবানবন্দি নিতে হবে। তিনি রাজি না হওয়ায়, তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করেন ওই অফিসারেরা। কিন্তু পুলিশ কমিশনারের দাবি, তাঁর বিভাগের অফিসাররা জবানবন্দি নেওয়ার সময় কোনও রকম হস্তক্ষেপ করেননি। কালই দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রীর সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে চিঠি লিখে সেই কথাই আরও এক বার মনে করিয়ে দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার।
শিন্দেকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, জবানবন্দির ভিডিও রেকর্ডিং করতে দেয়নি দিল্লি পুলিশ। অভিযোগ কালই অস্বীকার করেছিল পুলিশ। আজ ফের কমিশনার দাবি করেছেন, তরুণীটির বয়ান রেকর্ডের জন্য পুলিশই চাপ দিয়েছিল। তরুণীর অবস্থার কথা মাথায় রেখেই তাঁরা এটা ভেবেছিলেন বলেও জানান নীরজ। কিন্তু তরুণীর পরিবারের চাপেই শেষ পর্যন্ত ভিডিও রেকর্ডিং করা যায়নি বলে জানান তিনি। সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটকে কাজে বাধা দেওয়ার যে অভিযোগ দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে উঠেছে, সে প্রসঙ্গে কমিশনার বলেছেন, “তদন্ত করাটাই পুলিশের কাজ। তরুণী যাতে সুবিচার পান, সেই চেষ্টাই করছি।” তবে পুলিশের বিরুদ্ধে শীলার অভিযোগ নিয়ে চিদম্বরমের বক্তব্য, এক অফিসারকে অভ্যন্তরীণ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বর্তমান অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম জানান, দিল্লি পুলিশ আপাতত কেন্দ্রের অধীনেই থাকবে। তাঁর কথায়, “এখন যে ব্যবস্থা আছে, সেটাই ঠিক। বিশ্বের প্রায় সব দেশের রাজধানীর ক্ষেত্রেই এটাই হয়ে থাকে। যদি কোনও পরিবর্তন প্রয়োজন হয়, আমরা সেটা পরেও করতে পারি। এখন এই সব নিয়ে বিতর্কের সময় নয়। দিল্লির স্বাভাবিক হওয়াটা খুব জরুরি।” চিদম্বরমের আজকের এই মন্তব্যে একটা বিষয় পরিষ্কার। দিল্লি পুলিশকে নিজের অধীনে আনার মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্ন আপাতত দূর অস্ৎ।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দূরত্ব তৈরি হচ্ছে তাঁর দলের সঙ্গেও। কারণ পুলিশ কমিশনারকে সরানোর দাবি আজ কার্যত নস্যাৎ করে দিয়েছেন তাঁরই দলের মুখপাত্র রেণুকা চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী একেবারেই তাঁর দলের থেকে স্বতন্ত্র। মুখ্যমন্ত্রী হলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তাঁর ছেলে সন্দীপ দীক্ষিত যা বলেছেন, (নীরজ কুমারকে সরানোর প্রসঙ্গে) তা-ও এক জন সাংসদ হিসেবেই বলেছেন। দল যদি এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলে তা এআইসিসি-র দফতর থেকেই জানানো হবে।” রেণুকার মতে, শুধু পুলিশ কমিশনারকে সরালেই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। আর এটা তার উপযুক্ত সময়ও নয়। রেণুকার কথায়, “যদি পুলিশ কমিশনারের বদলিই পরিবর্তন আনতে পারে, তা হলে ঠিক আছে, তাঁকে সরিয়ে দিন। কিন্তু বদলি, সাসপেনশন তো পরেও হতে পারে।”
গণধর্ষণের পর থেকেই দিল্লির প্রশাসন আর পুলিশ দু’টি ভাগে বিভক্ত। একে অপরের উপর দায় চাপাতে ব্যস্ত। এর মধ্যে তরুণী এখন কত দ্রুত বিচার পান, সেটাই দেখার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.