|
|
|
|
‘অপহৃত’ দুই ভারতীয়কে ফেরাতে দাবি, বিক্ষোভ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হাতে ‘অপহৃত’ দুই ভারতীয় বাসিন্দাকে উদ্ধারের দাবিতে আন্দোলনে নামলেন এলাকার গ্রামবাসীরা। সোমবার দুপুরে শীতলখুচি বিডিও অফিসে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি লিখিতভাবে উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন পুটিয়া বারমাসিয়ার বাসিন্দারা। এ দিন কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক সুদীপ মিত্রের দেখা করেন সাংসদ নৃপেন রায়। ১-২ দিনের মধ্যে ওই বাসিন্দাদের উদ্ধার করা না হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়ার কথা তিনি জানিয়েছেন। পাশাপাশি, শীতলখুচির বিধায়ক তথা রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মনও মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছেন। সাংসদ নৃপেনবাবু বলেন, “এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। দু-এক দিনের মধ্যে কাজ না হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সব জানাব।” আর বনমন্ত্রী হিতেনবাবু বলেছেন, “কয়েকদিন দেখব, নইলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব।”
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার শীতলখুচির পুটিয়া বারমাসিয়া এলাকার বাসিন্দা মনোরঞ্জন রায় ও নগেন বর্মন কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে জমিতে চাষের কাজ করতে যান। সেই সময় ওই দু’জনকে বাংলাদেশের একদল দুষ্কৃতী অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ। রবিবার বিষয়টি জানিয়ে শীতলখুচি থানায় মিসিং ডায়েরি করা হয়। অভিযোগ জানানো হয় বিএসএফের কাছেও। তারপরেও ওই দু’জন উদ্ধার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দা ও প্রতিবেশীরা এ দিন বিডিও অফিসে বিক্ষোভ দেখান। এলাকার বাসিন্দা তথা লালবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য মহাদেব বর্মন বলেন, “দুই বাসিন্দাকে উদ্ধারের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না বলেই বিক্ষোভ হয়েছে। বিডিওকে লিখিতভাবে জানানোও হয়েছে।” শীতলখুচির বিডিও সুধাংশু পাইক বলেন, “বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরাই অপহরণ করেছেন বলে বাসিন্দারা বলছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তাদের জানানো হয়েছে।”
বিএসএফ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ভারতীয় বাসিন্দা সাধারণ কৃষক। অপরাধমূলক কাজের অভিযোগও কখনও তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠেনি। লালবাজার সীমান্ত চৌকিতে গত রবিবার দু’দেশের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে ফ্ল্যাগ মিটিং হলেও সমাধান সূত্র মেলেনি। দুই ভারতীয়কে মহিলাদের হেনস্তা করার অভিযোগে বাংলাদেশ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। দু’জনই এখন লালমণিরহাট জেলে আছেন। এক বিএসএফ কর্তার কথায়, বাংলাদেশের আমজুল এলাকার বাসিন্দা গরু পাচার চক্রের পান্ডাকে গত সপ্তাহে বিএসএফ জওয়ানেরা হাতেনাতে ধরেন। ওই ঘটনার জেরে পাল্টা চাপের কৌশল করেই ভারতের বাসিন্দা ওই দুই কৃষককে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, ঘটনার জেরে আতঙ্কিত সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে চাষ করতে যাচ্ছেন না। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে বিএসএফের গুয়াহাটি সেক্টরের আইজি পিকে বহালও কোচবিহারে আসছেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক সুদীপবাবু বলেন, “বিএসএফ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে কী ভাবে ওই দুই জনকে ফিরিয়ে আনা যায় সেই চেষ্টা চলছে।” তবে জেলা পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল অবশ্য বলেছেন, “আমাদের কাছে অপহরণের অভিযোগ হয়নি। নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছে। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|