|
|
|
|
পঞ্চায়েতে বাম প্রার্থী বাছাই ব্লকেই |
অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে শরিকরা কে কটি আসনে প্রার্থী দেবেন তা নিয়ে জেলা নেতাদের ‘মাথা না গলানোর’ পরামর্শ দিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা বামফ্রন্ট। দলীয় সূত্রের খবর, রবিবার জলপাইগুড়ি জেলা বামফ্রন্টের বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আসন বিলি নিয়ে জেলার প্রতিটি ব্লকে শরিক দলের নেতাদের মধ্যে বৈঠক হবে। ব্লকের নেতারাই ওই বৈঠক করবেন। বৈঠকে শরিক দল বা ফ্রন্টের জেলার প্রতিনিধি উপস্থিত থাকলেও বৈঠকে তাদের মুখ না খোলার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। জেলা বামফ্রন্টের এক শীর্ষ নেতা জানান, প্রার্থী বাছাই নিয়ে ব্লক পর্যায়ে যাতে শরিকরা সহমত হতে পারেন, সে জন্যই ওই রূপরেখা তৈরি হয়েছে।
দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, সত্তরের দশক থেকেই জলপাইগুড়ি জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে কোনদিনও একজোট হয়ে ভোটে লড়েনি বাম শরিক দলগুলি। আসন বিলি নিয়ে কাজিয়ায় প্রতিবারই ঐক্য ভেস্তে যায়। এ বার রাজ্যের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে পরিস্থিতি পাল্টেছে বলে মনে করছেন বামফ্রন্টের সব শরিক দলের রাজ্য নেতারাই। সে কারণেই রাজ্যস্তর থেকেই এবার সব জেলাতে ফ্রন্ট গড়ে ভোট করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সিদ্ধান্তকে কার্যকর করতেই রবিবার বৈঠকে বসে জলপাইগুড়ি বামফ্রন্ট।
সিপিএম সূত্রের দাবি, জেলার বেশির ভাগ গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি ফ্রন্ট তথা সিপিএমের দখলে রয়েছে। সে কারণে রাজ্য বা কেন্দ্রে যাই হোক না কেন জেলার নীচু স্তরে কংগ্রেস ও তৃণমূলের বুথ স্তরের নেতা কর্মীরা নিজেদের মধ্যে বাম বিরোধী জোট গড়ে তোলার চেষ্টা শুরু করেছেন। এই পরিস্থিতিতে ফ্রন্টে ঐক্য না হলে নির্বাচনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না সিপিএম নেতারা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুলিশ প্রশাসনকে সঙ্গে ব্যাপক সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করবে শাসক দল। তবে মানুষ আমাদের পাশে রয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফ্রন্টগত ভাবে লড়াই চালাব। সেই মত আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ব্লকে ব্লকে বামফ্রন্টের বৈঠক শুরু হবে।”
ব্লক পর্যায়ের বামফ্রন্ট বৈঠকে যে কটি আসন নিয়ে মতবিরোধ মিটবে না, সে ক্ষেত্রে শরিকদের মধ্যে জেলা স্তরে দ্বিপাক্ষিক বা ত্রিপাক্ষিক আলোচনা হবে। ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রবাল রাহা বলেন, “ফ্রন্টের বৈঠকে ব্লক স্তরের বৈঠকগুলির দিনক্ষণ স্থির হয়েছে। জেলায় বামফ্রন্টগত ভাবেই লড়াই হবে। বৈঠকে মনে করা হয়েছে, ব্লকের নেতাদেরই দায়িত্ব দিলে ভাল ফল মিলবে।” আরএসপির জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রকাশ রায় জানান, এ বারই প্রথম ব্লক স্তরে বামফ্রন্টের আসন সমঝোতা নিয়ে বৈঠক হবে। তাঁর মতে, “এতে নিচু তলার মতামত প্রাধান্য যেমন পাবে, তেমনই আসন নিয়ে ক্ষোভ-অভিমানও কমবে। আমরা চাই অঞ্চল স্তর থেকেই এই আলোচনা হোক। বৈঠকগুলিতে জেলার প্রতিনিধিরা পর্যবেক্ষক থাকলেও কোনও মতামত দেবেন না। তাতে সুষ্ঠুভাবে আসন সমঝোতা হবে বলে মনে হয়।” |
|
|
|
|
|