|
|
|
|
দেড় বছরে বদলে যাবে ফুলবাড়ি, আশ্বাস গৌতমের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ফুলবাড়ি |
কংগ্রেসকে পাশে নিয়েই ফুলবাড়ি বিস্তীর্ণ এলাকায় উন্নয়নের কাজের প্রতিশ্রুতি দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। সোমবার দুপুরে ফুলবাড়ির ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের গ্রাম লক্ষ্মীস্থান এলাকায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পাকা রাস্তা তৈরির কাজের সূচনা করেন মন্ত্রী। রাজ্যের জোট ভাঙলেও অনুষ্ঠান মঞ্চে এলাকার কংগ্রেস এবং তৃণমূল নেতাদের একসঙ্গে নিয়েই ওই ঘোষণা করেছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “উন্নয়নের কাজে নতুন সরকার রাজনীতি করে না। বাম আমলে ওই সব হত। গত ৩৪ বছরে কিছু হয়নি। শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়িকে নিয়ে যমজ শহর তৈরি হবে। সেখানে মাঝের ফুলবাড়ি এলাকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। রাস্তা, বিদ্যুৎ, স্কুল, স্বাস্থ্য, পানীয় জল সব ক্ষেত্রেই আমরা প্রকল্প হাতে নিয়েছি। ফুলবাড়িতেই মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় হচ্ছে। আগামী দেড় বছরের মধ্যে ফুলবাড়ির চেহারা পাল্টে যাবে।”
উল্লেখ্য, ফুলবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতটি কংগ্রেস-তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে রয়েছে। ১৪ আসনের পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের ৬টি, তৃণমূলের ৫টি, সিপিএমের ২টি এবং বিজেপি’র ১টি আসন রয়েছে। গত বছর ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্র থেকে জিতে মন্ত্রী হয়েছেন গৌতমবাবু। আগামী বছরের শুরুতেই পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথায়। সেখানে আর কংগ্রেস-তৃণমূল জোট হবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে এলাকার দুই দলের নেতারাই। কিন্তু এখনও পঞ্চায়েতে জোট যখন রয়েছে, তাই একযোগে উন্নয়নের কাজ করতে কোনও বাধা নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি ব্লক কংগ্রেস সভাপতি দেবাশিস প্রামাণিক বলেন, “আগামী নির্বাচনে কী হবে তা পরে ঠিক হবে। এখানে আমরা স্থানীয়ভাবে জোট করে এখনও আছি। আর তাতেই আমাদের দায়িত্ব মানুষের উন্নয়নের কাজ করা। মন্ত্রী গৌতমবাবু আমাদের সর্বতোভাবে সাহায্য করছেন। নানা কাজও হচ্ছে।” ফুলবাড়ি-২ তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মতিন রায়ের গলাতেও একই সুর কার্যত শোনা গিয়েছে। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটের রণনীতি পরে ঠিক হবে। আর উন্নয়ন নিয়ে আমরা কোনও রাজনীতি করি না।”
লক্ষ্মীস্থান প্রাথমিক স্কুল থেকে জিয়াগঞ্জ ৩১-ডি জাতীয় সড়ক এবং রূপচন্দ্রগঞ্জ থেকে জটিয়াখালি অবধি প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার আওতায় প্রায় ৫ কিলোমিটার ওই রাস্তাটি তৈরির কাজ হচ্ছে। প্রায় ১ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রাস্তাটি এক বছরের মধ্যে শেষ হবে। এলাকাটি থেকে সীমান্তের দূরত্ব মেরেকেটে ২০০ মিটার। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্বাধীনতার পর থেকে কোনও দিন এলাকায় পাকা রাস্তা ছিল না। অথচ এলাকার চারটি গ্রাম রয়েছে। সব মিলিয়ে কয়েক হাজার বাসিন্দাদের জাতীয় সড়ক হয়ে ফুলবাড়ি যেতে এই রাস্তাটি ব্যবহার করতে হয়। বর্ষার জলকাদায় বেশি সমস্যায় পড়তে হয়।
এ দিন লক্ষ্মীস্থান প্রাথমিক স্কুলের মাঠে মঞ্চ তৈরি করে মাইক লাগিয়ে অনুষ্ঠানটি হয়। এলাকার একাংশ বাসিন্দা স্কুল খুলে অনুষ্ঠান করা ঠিক হয়নি বলে অভিযোগ করেন। তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রধান শিক্ষক তপন চক্রবর্তী জানান, স্কুলের পরীক্ষা গত সপ্তাহেই শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন হাই স্কুলের ভর্তির ফর্ম বিলি, পূরণের প্রক্রিয়া ইত্যাদি শুরু হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীরা গ্রামেরই বলে এসেছে। এই সপ্তাহে রেজাল্টও দেওয়া হবে। শিক্ষকেরা এসেছেন। তাই স্কুল খোলা। তিনি বলেন, “ক্লাস বন্ধ করে অনুষ্ঠানের মত কোনও বিষয় নেই। আমাদের অনুমতি নিয়েই অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছিল।”
কংগ্রেস-তৃণমূল নেতা উন্নয়ন নিয়ে রাজনীতি করা হয় না বলেও সিপিএম অবশ্য উল্টো অভিযোগ তুলেছে। ফুলবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা আনারুল ইসলাম বলেন, “আমন্ত্রণ আমাদের জানানো হয়। কিন্তু জনসভা হবে বলে এলাকার প্রচার করা হয়। আর উন্নয়ন নিয়ে ওঁরা রাজনীতিই করছে। তাই আমরা অনুষ্ঠানে যাইনি।” |
|
|
|
|
|