নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
গত বছর বড়দিনে আগেকার পাঁচ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিল শীত। এ বারেও দিনে-রাতে কনকনে ঠান্ডাই বাড়িয়ে দিচ্ছে বড়দিনের ‘উষ্ণতা’। আজ, মঙ্গলবার বড়দিনে উত্তুরে হাওয়া কৃপণতা করবে না বলেই আবহাওয়া দফতরের আশ্বাস।
এক ধাক্কায় দিনের তাপমাত্রার বিরাট পতন রবিবার হাড়ে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছিল। বড়দিনের আগের দিন, সোমবার সেই পরিস্থিতির কিছুটা বদল হলেও দিনের বেলাতেই মালুম হয়েছে উত্তুরে হাওয়ার দাপট। বেলা গড়িয়ে বিকেল গড়াতেই বেড়েছে তার দাপাদাপি। হাওয়া অফিসের খবর, কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বহু জেলাই কনকনে ঠান্ডার দখলে। কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম।
তবে শীতের বাড়বৃদ্ধির মূলে আছে দিনের নিম্নমুখী তাপমাত্রা। সোমবার মহানগরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের চেয়ে আট ডিগ্রি কম। তবে এ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সর্বাধিক পতন মালদহে। সেখানে ১২ ডিগ্রি কমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দাঁড়ায় ১৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। |
পারদ পতন |
কলকাতা ১৩.৩ (-১)
শ্রীনিকেতন ১০.৮ (-১)
বাঁকুড়া ১০.১ (-২)
মালদহ ১১.৭ (-১)
কোচবিহার ৭.৫ (-৩)
জলপাইগুড়ি ৯.৪ (-২)
বর্ধমান ১০.৮ (-২)
মেদিনীপুর ১২.৫ (-১) |
|
আবহবিদদের ব্যাখ্যা, মেঘ থাকায় যথেষ্ট সূর্যের আলো ভূপৃষ্ঠে পৌঁছতে পারছে না। তাই দিনের তাপমাত্রা কম থাকছে। জারিজুরি বাড়ছে ঠান্ডার। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “বড়দিনেও পরিস্থিতি এমনটাই থাকবে। তাপমাত্রার বিশেষ হেরফের হওয়ার সম্ভাবনা নেই। দিনে-রাতে ঠান্ডা থাকবে।”
আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, সোমবার দক্ষিণবঙ্গে সব থেকে কম তাপমাত্রা ছিল পুরুলিয়ায়। সেখানে শৈত্যপ্রবাহ চলছে। উত্তরবঙ্গের সমতল এলাকায় সব থেকে ঠান্ডা ছিল কোচবিহারে, ৭.৫ ডিগ্রি। রবিবারের মতো সোমবারেও দিনের বেলায় পুরোদস্তুর শীতবস্ত্রে শরীর মুড়ে বেরোতে হয়েছে। পারদ নামছে বিহার-ঝাড়খণ্ডেও। পটনায় এ দিন সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ১৭ এবং ৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাঁচির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সাত ডিগ্রির কাছাকাছি।
শীতের সঙ্গে দাপট চলছে কুয়াশারও। আবহবিদেরা জানান, বাংলাদেশ ও সংলগ্ন উত্তরবঙ্গে ঘূর্ণাবর্ত থাকায় বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প ঢুকেছে। ঠান্ডা হাওয়ার সংস্পর্শে এসে তা কুয়াশা তৈরি করছে। বিহার ও উত্তরবঙ্গের অনেক জায়গাই এ দিন সকালে ঘন কুয়াশায় ঢেকে গিয়েছিল। কুয়াশা থেকে রেহাই পায়নি দক্ষিণবঙ্গও। উত্তর ভারতের প্রবল কুয়াশায় পূর্ব রেলের উত্তরমুখী দূরপাল্লার ট্রেনগুলি গড়ে ১৫ ঘণ্টা দেরিতে চলছে। হাওড়া ও শিয়ালদহ রাজধানী, পূর্বা এক্সপ্রেস ছাড়াও আরও ১৭টি দূরপাল্লার ট্রেন রবিবার থেকেই দেরিতে চলছে। রবিবারের হাওড়ামুখী রাজধানী এক্সপ্রেস সোমবার হাওড়ায় পৌঁছয় প্রায় ১৩ ঘণ্টা দেরিতে। রেলকর্তারা জানান, ঘন কুয়াশায় চালকেরা সিগন্যাল দেখতে পাচ্ছেন না। ট্রেন থমকে যাচ্ছে। কুয়াশার দাপটে দিল্লিতে বিমান চলাচলও ব্যাহত হয়েছে। হাওয়া অফিস জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টা বাংলায় এবং অন্যান্য রাজ্যে কুয়াশা হবে।
|