নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
তৃণমূলের খাসতালুকে টক্কর দিয়েই এ বার অস্তিত্ব জাহির করতে চাইছে কংগ্রেস! এ জন্য পার্ক স্ট্রিট কাণ্ড, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি কিংবা ত্রিফলা-কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে রাজ্যে ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থার বাড়বাড়ন্তকে
হাতিয়ার করতে চাইছেন অধীর চৌধুরী, দীপা দাশমুন্সিরা।
পঞ্চায়েত ভোটের আগেই বহুবিধ বিষয়ে তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে কংগ্রেসকে তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটিতে গিয়ে প্রচারে নামার পরামর্শ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা দলের মুর্শিদাবাদ জেলার সভাপতি অধীর। তাঁর ব্যাখ্যা, একটা সময়ে যেখানে তৃণমূলের জায়গা নয়, সেখানেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছুটে যেতেন। কংগ্রেসকে সেই পথেই চলতে হবে। পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি উপলক্ষ্যে
সোমবার প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সভায় প্রদীপ ভট্টাচার্য, মানস ভুঁইয়ার পাশাপাশি এআইসিসি-র শাকিল আহমেদ, রামচন্দ্র কুন্তিয়ার উপস্থিতিতে অধীর স্পষ্টই বলেন, “দশটা লোক হলেও তৃণমূলের ঘাঁটিতে গিয়ে কংগ্রেসকে সভা করতে হবে। তৃণমূলের ভয়ে লুকিয়ে থাকা মানুষও কংগ্রেসের কথা শুনবেন।” অধীরের দাবি, তৃণমূল এখন অন্তর্দ্বন্দ্বে ব্যস্ত, এই সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। |
শিয়ালদহে কংগ্রেসের কর্মিসভায় দীপা দাশমুন্সি, অধীর চৌধুরী প্রমুখ। - নিজস্ব চিত্র |
আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপাও প্রদেশ নেতৃত্বকে জেলা-জেলায় আন্দোলন সংগঠিত করার আবেদন জানিয়েছেন। ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না-নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কাকে আড়াল করতে চাইছেন, সে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর আক্ষেপ, দিল্লির সরকার গণধর্ষণে অভিযুক্তদের চব্বিশ ঘণ্টায় গ্রেফতার করল, অথচ পার্ক স্ট্রিটের ঘটনায় পুলিশ চার্জশিটও দিতে পারল না! প্রদেশ মহিলা কংগ্রেসের নতুন সভানেত্রী কবিতা রহমানের উদ্দেশে দীপার আহ্বান: নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে দ্রুত পথে নামুন। উল্লেখ্য, রায়গঞ্জে এইম্সের ধাঁচে হাসপাতাল গড়ার দাবিতে জমি দিতে ইচ্ছুক চাষিদের নিয়ে দীপার নেতৃত্বে প্রদেশ কংগ্রেস ১০ জানুয়ারি ‘মহাকরণ অভিযান’ করবে। আর তার আগে, ২৯ ডিসেম্বর ধর্মতলায় রাজ্য সরকারের নানা স্তরে ব্যর্থতার প্রতিবাদে সভা করবে প্রদেশ কংগ্রেস।
বস্তুত লাগাতার আন্দোলনই যে রাজ্যে কংগ্রেসের বিশ্বস্ততা বাড়াতে পারে, সে ব্যাপারে বৈঠকে একমত হন অধিকাংশ নেতা। রাজ্যে কংগ্রেসের অস্তিত্ব জাহির করতে গ্রামে-গঞ্জে ‘আন্দোলনের জোয়ার’ তোলার প্রস্তাব দেন মানসবাবু। অধীর দলীয় নেতৃত্বকে জানান, পঞ্চায়েত ভোটে সব আসনেই কংগ্রেসকে প্রার্থী দিতে হবে। “ক’টা আসনে জিতলাম, সেটা বড় কথা নয়। একটা আসনে একটা ভোট পেলেও কংগ্রেসের অস্তিত্ব বজায় থাকবে। তৃণমূলের বিকল্প হতে পারলে বাংলার ভাল হবে।” মন্তব্য অধীরবাবুর।
এ দিকে মিলনমেলা উদ্বোধনে গিয়ে এ দিনই মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন, বিজেপি, কংগ্রেস,
সিপিএম আবার হারবে। মনমোহন সরকারকে ‘সুদের কারবারি’ বলেও তিনি কটাক্ষ করেছেন।
সরকারি মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এ হেন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপবাবুর অভিযোগ, “মুখমন্ত্রী স্বৈরতন্ত্রীর মতো কথা বলছেন! নিজের দলে তো বটেই, সরকার তথা জনগণের উপরেও উনি যা ভাববেন, তা-ই চাপাতে চাইছেন!” তৃণমূলনেত্রীর স্বৈরতান্ত্রিক আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে দলের সাংসদ-বিধায়কদের অনেকেই কংগ্রেসে ফিরতে চান বলে দাবি অধীর-দীপার। |
ডিএসও-র সম্মেলন জয়নগরে
নিজস্ব সংবাদদাতা • জয়নগর |
এসইউসিআই এর ছাত্র সংগঠন ডিএসওর ৯ম রাজ্য সম্মেলন শুরু হচ্ছে ২৬ ডিসেম্বর। এই বছর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে। ডিএসওর রাজ্য সভাপতি গোপাল সাহু বলেন, “এই সরকারের আমলে শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্য চলছে। গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে।” সভাপতির দাবি, সিপিএম যে পথে চলেছে তৃণমূলও এখন সেই পথেই চলছে। সম্মেলন উপলক্ষে ২৬-২৭ ডিসেম্বর রাজনৈতিক শিক্ষা শিবিরেরও আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। |