নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বাম আমলে বঞ্চনা ছিল। নতুন সরকারের আমলেও সেই বঞ্চনা চলছে বলে তৃণমূলের জেলা সভাপতি এবং বিধায়কের সামনে অভিযোগ করলেন লোধা-শবর কল্যাণ সমিতির নেতৃত্ব। প্রকাশ্যেই তৃণমূলের মন্ত্রীদের সমালোচনা করেন তাঁরা। সব শুনে উপস্থিত তৃণমূলের নেতাদের আশ্বাস, লোধাদের উন্নয়নে রাজ্য সরকার সচেষ্ট হয়েছে। তবে কাজ করতে গেলে একটু সময় লাগবে।
মেদিনীপুরের লোধা স্মৃতি ভবনে সোমবার এক সভার আয়োজন করেছিল সমিতি। সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায় এবং শালবনির বিধায়ক তথা যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি শ্রীকান্ত মাহাতো। দুই নেতার সামনেই তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করেন সমিতির নেতৃত্ব। সমিতির সম্পাদক বলাইচন্দ্র নায়েক বলেন, “লোধাদের উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে। তবে কাজ হচ্ছে না। প্রশাসনের একাংশ কর্মী উন্নয়নের অর্থ লুঠ করছেন।” পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদার সমালোচনা করে বলাইবাবুর মন্তব্য, “সুকুমারবাবু কেমন মন্ত্রী জানি না। সমস্যার কথা জানাতে গেলেই বলেন, ‘দেখছি-দেখব’। এ ভাবে আর কতদিন চলবে?” এ প্রসঙ্গে সুকুমার হাঁসদার প্রতিক্রিয়া, “সমিতির পক্ষ থেকে সে ভাবে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। নির্দিষ্ট দাবি জানালে, নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
শাসক দলের দুই নেতাকে কাছে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দেন শিক্ষিত লোধা যুবক-যুবতীরাও। তাঁদের বক্তব্য, কষ্ট করে পড়াশোনা করেও চাকরি জুটছে না। দীনেনবাবু অবশ্য এর জন্য সেই বামফ্রন্ট সরকারকেই দুষছেন। তাঁর কথায়, “বহু মানুষ এখনও দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করেন। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। আমি রাজনীতির কথা বলব না। তবে বাম আমলে সব দিক থেকেই রাজ্য অনেকটা পিছিয়ে গিয়েছে।” আর শ্রীকান্তবাবুর আশ্বাস, “আপনাদের সব দাবি খতিয়ে দেখে নিশ্চিত ভাবেই পদক্ষেপ করা হবে।” পাশাপাশি রাজ্য সরকারের উপর আস্থা রাখারও আহ্বান জানান তৃণমূলের এই দুই নেতা।
তবে শুধু আশ্বাসে যে বরফ গলবে না, তা সমিতির নেতৃত্বের কথাতেই স্পষ্ট। এক নেতার কথায়, “বামফ্রন্ট সরকারের মতোই এখন মা-মাটি-মানুষের সরকার বঞ্চনা করছে।” আর বলাইবাবুর হুঁশিয়ারি, “আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। লোধা সেল চালু করা, লোধাদের বাড়ি তৈরির কাজ দ্রুত শেষ করা-সহ নানা দাবিতে আগামী মাসে ঝাড়গ্রাম থেকেই লাগাতার কর্মসূচি শুরু হবে। জেলাশাসকের দফতরের সামনে ধর্না-বিক্ষোভ কর্মসূচিও হবে।” |