|
|
|
|
প্রবন্ধ ১... |
আগে নিজের দেশে আতঙ্ক ঘোচান |
মার্কিন সরকার দেশের অভ্যন্তরে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে অনিচ্ছুক অথবা অপারগ। অথচ এই সরকারই
অন্য
দেশে অস্ত্র
উৎপাদনের উপর খবরদারি করতে সদা ব্যগ্র। কিন্তু মহাশক্তিধর দেশ,
ক’জনের বুকের পাটা আছে যে
চোখে আঙুল দিয়ে এটা ওদের বুঝিয়ে দেবে।
অশোক মিত্র |
হলিউডের ছবিতে যেমন দেখা যায়, ঠিক তেমনি শান্ত সুন্দর পরিবেশ, ছিমছাম ঘরবাড়ি, ঝকঝকে দোকানপাট, মসৃণ বাঁধানো পথ, মসৃণতর গাড়ি সেই পথ ধরে গড়িয়ে চলে। দূরে গির্জার ধ্বনি, হয়তো বা পাখির কলকাকলি। এক ঝাঁক পাখি উড়েও গেল হয়তো-বা। স্কুল ছুটি হয়েছে। এক দঙ্গল কচি-কাঁচা বাড়িমুখো। হাসছে, খেলছে, চেঁচাচ্ছে। সমস্ত কিছু জুড়ে সমৃদ্ধি ও নিশ্চিন্ততার আভাস। মার্কিন দেশে এমন শান্ততা-বিজড়িত হাজার হাজার ছোট ছোট শহর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। হলিউডের ছবিতে দেখলে যেমন মনে হয় পৃথিবীতে যেন কোনও চিন্তা নেই, উদ্বেগ নেই, শুধু খুশির হাওয়া, শুধু প্রাচুর্য-ভরা পূর্ণতার আনন্দ।
কিন্তু যা মনে হয়, বাস্তবে তো তা নয়! হঠাৎ এক বন্দুকবাজ, কোন গভীর অসুখে সে ভুগছে নিজেও জানে না, সমাজের প্রতি, পরিপার্শ্বের প্রতি এক অজ্ঞেয়, দুর্জ্ঞেয় অভিযোগ সে বহুদিন ধরে পুষে রেখেছে, এই প্রশান্ত সকালে তা বিস্ফোরণের আকার নিল। হাতে অত্যাধুনিক মারণযন্ত্র, তার কুঠুরি থেকে সে বেরিয়ে পড়ল। মিনিট পনেরো-কুড়ি ইতস্তত এলোমেলো বিচরণ করে হঠাৎ তার চোখে পড়ল সামনে শহরের একমাত্র স্কুল, স্কুলের ঘরবাড়ি। দামি, অতি স্বচ্ছ কাচের দেওয়াল ভেদ করে ভেতরকার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। ছেলেমেয়েরা কেউ কেউ ক্লাসঘরে, কেউ-বা খোলা মাঠে শিক্ষিকাকে অনুসরণ করে ব্যায়ামচর্চা করছে, ঠিক পাশে একটি আয়ত বাস্কেটবল খেলার প্রাঙ্গণ। |
|
শোকার্ত বারাক ওবামা; ওয়াশিংটন, ডিসেম্বর ’১২। |
ছবির মতো, শান্ততা। মুহূর্তের মধ্যে তা ভেঙে খান্-খান্। বন্দুকবাজের মারণযন্ত্র থেকে বিদ্যুৎকে-হারিয়ে-দেওয়া গতিতে গুলির পর গুলি বেরিয়ে আসছে। সব মিলিয়ে সম্ভবত মাত্র দু’মিনিট-তিন মিনিট ব্যাপী হত্যার উল্লাস-উৎসব, চিৎকার-কান্না-আর্তনাদ... রক্তের বন্যা, কেউ পালাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে বেঞ্চিতে নিথর, কেউ সিঁড়িতে আলুলায়িত, চিৎকার-আর্তনাদের নিবৃত্তি নেই। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে ঝাঁকে ঝাঁকে অ্যাম্বুল্যান্স-পুলিশবাহিনী দ্বারা চতুর্দিক ঘিরে ফেলার তৎপরতা। একদল রাজপুরুষ বন্দুকবাজকে দেখতে পেয়ে তাকে নিশানা করার চেষ্টা করছে, অন্য দিকে আহত-নিহতদের নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স হাসপাতালমুখো, পুলিশের হুইসল অ্যাম্বুল্যান্সের সাইরেনের যুগলবন্দি। সব ছাপিয়ে আর্তনাদের অর্কেস্ট্রা
খানিক বাদে বন্দুকবাজ হয়তো আত্মঘাতী হয়, নয় ধরা পড়ে, নয় আপাতত পালিয়ে যায় কোথাও। এক দিন দু’দিন বাদে পুলিশ তার আত্মগোপনের স্থান ঘেরাও করে। তার মারণাস্ত্রের রেস্ত ফুরিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত বন্দুকবাজ গুলির ফুলঝুরি ছিটোয়, খানিক সময় বাদে পুলিশের গুলিতে তার শরীর ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়, কিংবা সে হঠাৎ দু-হাত ঊর্ধ্বে তুলে আত্মসমর্পণ করে।
মার্কিন দেশের কানেটিকাট রাজ্যের নিউ টাউন নামক একটি অতি ছোট্ট শহরের এ-মাসের ঘটনা। সেখানে যে বীভৎস শিশুমেধ লীলা চলল, তা তো কোনও বিরল গোছের ব্যাপার নয়। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই, অন্তত প্রতি মাসেই ওই মস্ত ধনী দেশের কোথাও-না-কোথাও এমনতর ঘটনা ঘটে চলেছে। স্যান্ডি হুক স্কুলে এত বেশি সংখ্যক নিষ্পাপ শিশুর মৃত্যু দেশ জুড়ে গভীর বিষণ্ণতা ছড়িয়েছে, গোটা মার্কিন মুলুক শোকাচ্ছন্ন, কান্নার এক মহাসমুদ্র। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দু’চোখ বেয়ে দরদর করে জলের প্রস্রবণ। এমন দৃশ্য তো সচরাচর দেখা যায় না, টেলিভিশন চ্যানেলে খবরের কাগজে বার বার করে তাই প্রদর্শিত বা মুদ্রিত হচ্ছে। জাতির সার্বিক শোকে প্রলেপ লাগিয়ে প্রেসিডেন্ট ওবামা শপথ নিয়েছেন মার্কিন দেশে এমন মর্মন্তুদ ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, সাধ্যের প্রত্যন্তে গিয়ে সেই চেষ্টা করবেন তিনি।
আবেগের মুহূর্তে এ ধরনের প্রতিশ্রুতি হামেশাই করা হয়। কিন্তু ওবামা নিজেও জানেন সমস্যাটি কত জটিল। বছরের পর বছর ধরে নিঃসঙ্গ বিকৃতমন বন্দুকবাজেরা এ ধরনের হত্যালীলা সাধন করে গেছে, প্রতিবারই দেশ জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে, চিন্তাবিদরা তর্কবিতর্কে প্রবৃত্ত হয়েছেন, প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে তন্নিষ্ঠ আলোচনা শুরু হয়েছে। কিন্তু কেঁচে গণ্ডূষ, কোনও সমাধানের সূত্র মেলেনি। একটা সময় বাদে আলোচনা-বিতর্ক স্বতই সম্পূর্ণ স্তব্ধ। ফের এক নিঃসঙ্গ-যুবক হঠাৎ হত্যাযজ্ঞে মেতেছে, পুনরায় জাতীয় শোক উদ্যাপন, ফের প্রতিজ্ঞা-প্রতিশ্রুতির বন্যা। আখেরে কিছুই হয়নি, হতে পারেনি।
সমস্যার আকর মার্কিন সংবিধানের একটি বিশেষ সূত্র: প্রত্যেক নাগরিকের আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র রাখার অধিকার আছে। প্রযুক্তি এগিয়েছে, অস্ত্রনির্মাণ প্রযুক্তিও দ্রুত উন্নততর হয়েছে। এখন এমন মোক্ষম বন্দুকও পাওয়া যায়, যা পাঁচ-দশ সেকেন্ডে পঞ্চাশ-একশো জন মানুষের জীবন কেড়ে নিতে পারে এবং সেই মারণাস্ত্র যে-কেউ দোকান থেকে কিনে ঘরে মজুত রাখতে পারে। অপরাধী বা অপরাধপ্রবণ ব্যক্তিদের পক্ষে পছন্দমত অস্ত্রের জোগান কোনও সমস্যাই নয়। অস্ত্রের জোগান বেড়েছে, চাহিদাও বেড়েছে সমান পরিমাণে। খুন-জখমের, ডাকাতি-রাহাজানির ইতিবৃত্তও তাল মিলিয়ে বিস্তৃততর। সমাজ-বিচ্ছিন্ন বেপরোয়া বন্দুকবাজদের অঢেল সুবিধার কথা না-হয় ছেড়েই দিলাম। এ সব বিষয় নিয়ে প্রচুর জল ঘোলা হয়েছে, কিন্তু অস্ত্র কেনাবেচার উপর কোনও আইনি নিয়ন্ত্রণ চালু করা সম্ভব হয়নি। অস্ত্রনির্মাতা তথা অস্ত্রব্যবসায়ীদের জোট মার্কিন দেশে অতীব পরাক্রমশালী, অনেক রাজনৈতিক নেতা তাদের কেনা গোলাম, সংবিধানের নিদান তাদের রক্ষাকবচ। |
|
গাজায় ইজরায়েলি হানার বলি; নভেম্বর ’১২। |
বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলে রক্ষণশীলতা অত্যন্ত প্রকট, কে জানে দেড়শো বছরেরও পুরনো গৃহযুদ্ধের পরাজয়ের গ্লানি এখনও কোনও কোনও উত্তরসূরির মানসপ্রবাহে কাজ করে যাচ্ছে, স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচিতে চায় রে। যথেচ্ছ অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহের, দোকান থেকে যে-কোনও সময় যত খুশি যে-কোনও ধরনের বন্দুক কেনার অধিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা কারও কারও বিচারে স্বাধীনতা হারানোর সমার্থক। এই নাগরিককুল যথেষ্ট শক্তিধর, বিভিন্ন সংবেদনশীল নির্বাচন কেন্দ্রে তাদের সমর্থন না মিললে নির্বাচনে সফলতা দুরূহ। তাই রাজনীতির ওপরমহলে কী ভাবা হচ্ছে তা নিয়ে আঞ্চলিক স্তরের উপনেতারা ততটা ভাবিত নন। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পক্ষে কোনও বিধায়ক সওয়াল করলে পরের নির্বাচনে তার জয়ী হওয়াই মুশকিল এই বিবেচনাই তাঁদের চেতনা সর্বদা আচ্ছন্ন করে। সংবিধানের জয় হোক, তাঁদের আত্মরক্ষার অধিকার অক্ষয় থাকুক।
মার্কিন প্রশাসন তাই অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে জোরজুলুম চালাতে অক্ষম, দেশে অস্ত্রনিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়, রক্তাক্ত বধ্যভূমি রচনা করতে বদ্ধপরিকর উন্মাদ বন্দুকবাজদের প্রতিহত করার ক্ষমতা রাষ্ট্রের হাতে নেই, দেশের ছোট ছোট গ্রাম বা শহরের পারিজাতসুলভ শান্ততা মাঝে মাঝে ব্যাহত হতেই থাকবে, নিধন-অধ্যায় অন্তে সমগ্র জাতি নিহত শিশুদের জন্য শোকাকুল হবে।
এখানেই নির্দয় কৌতুক, মার্কিন সরকার দেশের অভ্যন্তরে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে অনিচ্ছুক অথবা অপারগ। অথচ এই সরকারই অন্য দেশে অস্ত্র উৎপাদনের উপর খবরদারি করতে সদা ব্যগ্র। বিশেষ করে ইরান দেশটা যাতে পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদন প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণায় বেশি দূর না এগোতে পারে, সেই উদ্দেশ্যে মার্কিন সরকার অন্যান্য দেশের উপর পর্যন্ত চাপ তৈরি করে চলেছে: ইরান সরকার অস্ত্র-সংবরণের নির্দেশ মানছে না, তাকে শাস্তি দিতে হবে। আসুন, সবাই মার্কিন সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করুন, ইরানের সঙ্গে সর্বপ্রকার আর্থিক বিনিময় প্রতিবিনিময় থেকে বিরত থাকুন, ইরান থেকে তেল কেনা বন্ধ করুন, ইরানকে ভাতে মারুন। দেশের অভ্যন্তরে আতঙ্ক ঘোচানোর মুরোদ বা উৎসাহ নেই, বিদেশিদের উপর হম্বিতম্বি, এ এক কিম্ভূত আচরণিক স্ব-বিরোধিতা! কিন্তু মহাশক্তিধর দেশ, ক’জনের বুকের পাটা আছে যে চোখে আঙুল দিয়ে এটা ওদের বুঝিয়ে দেবে।
তার চেয়েও বড় স্ব-বিরোধিতার প্রসঙ্গ এখন উত্থাপন করতেই হয়। খ্যাপা বন্দুকবাজের হামলায় শিশুবধ পালা, সমগ্র জাতি শোকাকুল, সন্তানহারাদের পাশে সবাই এসে দাঁড়িয়েছেন, গির্জায় প্রার্থনা চলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। তিনি শোকবিহ্বল, সমগ্র মার্কিন জাতি শোকবিহ্বল। তাঁরা শিশুনিধনের অকারণ নিষ্ঠুরতায় স্তম্ভিত। অথচ উৎকট স্ববিরোধিতা সে দেশের সরকার গোপনে মারণাস্ত্র মজুত করছে এই প্রমাণিত মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার সাঙ্গোপাঙ্গদের নিয়ে ইরাকে আক্রমণ চালাল। মার্কিন বিমানবাহিনী নৃশংস উল্লাসে হাসপাতাল, স্কুলবাড়ি, সাধারণ গৃহস্থ এলাকার ওপর উজাড় করে বোমা নিক্ষেপ করল, শত শত শিশু নিহত হল। নিষ্পাপ শিশু, নির্বোধ শিশু, তারা মার্কিন আক্রোশের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারল না, গোটা ইরাক শোকাকুল। কিন্তু কই, মার্কিন দেশের সাধারণ নাগরিকদের তো সেই শোকে সমব্যথী হতে দেখা গেল না! কয়েক মাস গড়িয়ে যেতেই ফের আফগানিস্তান অভিযান, মার্কিন বিমানবাহিনীর একই ভূমিকা, শত শত অসহায় নিরপরাধ শিশু বোমাবর্ষণে মৃত। মৃত্যুর মিছিল চলেইছে, আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে প্রতিদিন এক বিশেষ ধরনের মার্কিন বোমারু বিমান থেকে যথেচ্ছ বোমা নিক্ষেপের মহান ব্রত পালিত হচ্ছে, শিশুরা মারা পড়ছে, তাদের মায়েরা শোকে উন্মাদিনী। এই জননীকুলের কেউ কেউ আফগান, কেউ কেউ পাকিস্তানি। পরিব্যাপ্ত শোক, শোকের মহাপ্লাবনে পিতৃমাতৃকুল ভেসে যাচ্ছেন। কিন্তু কই, মার্কিন দেশে তো সামান্যতম অনুকম্পার লক্ষণ চোখে পড়ছে না। শুধু মার্কিন দেশে কেন, আমাদের এই বিপুল ভারতবর্ষেও তো আমরা এতটুকু বিচলিত হইনি। ইরাকি শিশু মারা যাচ্ছে যাক না, আফগান শিশু মারা যাচ্ছে যাক না, পাকিস্তানি শিশু বোমার আঘাতে মৃত, তাতে আমাদের কী?
একটি ভয়ঙ্কর সত্যের মুখোমুখি হতে হয়, আমাদের কোমলতর বৃত্তিগুলির ব্যবহার বড় বেশি একপেশে। মার্কিন পিতা-মাতারা তাঁদের সন্তানদের জন্য আকুলিবিকুলি করবেন, আমরা টেলিভিশনে অন্যমনস্ক ভাবে ছবি দেখব! মার্কিন হিংসানলে ইরাকে আফগানিস্তানে হয়তো খুব শিগগিরই ইরানে ও সিরিয়ায়ও নিরীহ শিশুরা নিহত হবে, মার্কিন নাগরিকদের তাতে কিছু যায় আসে না, তাঁদের শোক উথলে উঠবে না। আমাদের-তোমাদের মধ্যবর্তী প্রাচীরটি অনতিক্রম্য। জগৎ জুড়িয়া এক জাতি আছে, সে জাতির নাম মানব জাতি, এই বড়াইয়ের চেয়ে ডাহা মিথ্যে আর কিছু হতে পারে না।
এখন সন্দেহ হয়, গত শতকের ষাটের দশকের শেষের দিকে সত্তরের দশকের গোড়ায় ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রতিবাদে মার্কিন যুবক-যুবতীদের অভ্যুত্থানও হয়তো মানবিকতার আবেগ থেকে উৎসারিত ছিল না, মার্কিন দাপটে একটি গরিব এশীয় দেশের গোবেচারা মানুষজন হাজারে হাজারে মারা যাচ্ছেন, এই বীভৎস মৃত্যুর মিছিল শেষ হোক, সবাই মিলে আমরা জীবনের জয়গান গাই, সম্ভবত এমন কোনও অন্তঃস্থিত অনুভূতির আলোড়ন ছিল না। সেই যুবক-যুবতীরা হয়তো স্রেফ নিজেদের কথাই ভাবছিলেন। দিব্যি তো গল্প করছেন, আড্ডা দিচ্ছেন, হেসে একে অপরের গায়ে ঢলে পড়ছেন। এ সব ছেড়ে-ছুড়ে কেন ওই নচ্ছার এশীয় দেশে বেঘোরে প্রাণ হারাবার ঝুঁকি নেবেন তাঁরা।
এটাই হয়তো সবচেয়ে বড় আশঙ্কা: স্বার্থপরতার বাইরে গিয়ে আচরণ-বিচরণ সম্ভব, সেই বিশ্বাসটুকু পর্যন্ত আমরা হারাতে বসেছি।
|
ছবি: রয়টার্স |
|
|
|
|
|