ঠিকা শ্রমিক-নিরাপত্তাকর্মী খণ্ডযুদ্ধে উত্তপ্ত জামশেদপুর
ঠিকা শ্রমিক ও নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে গোলমালের জেরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল জামশেদপুরে টাটা স্টিলের কারখানা চত্বর। ঠিকা শ্রমিকেরা কারখানার ভিতরে গাড়ি ভাঙচুর করেন ও মোটরবাইকে আগুন লাগিয়ে দেন বলে অভিযোগ। তাঁদের ছোড়া পাথরের ঘায়ে জখম হন টাটা স্টিলের নিরাপত্তাকর্মীরা। তাঁরাও আত্মরক্ষায় ছররা বন্দুক থেকে গুলি ছোড়েন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। ঘটনায় দু’পক্ষেরই অনেকে আহত হন। ঘটনার ছবি তুলতে গিয়ে গুলি লেগে মারাত্মক জখম হন মদনকুমার সাউ নামে এক চিত্র সাংবাদিকও। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি মোটর বাইক।
স্থানীয় বর্মা মাইনস থানার পুলিশ জানাচ্ছে, গোটা ঘটনায় ছ’জন গুরুতর জখম হয়েছেন। সকাল ন’টার কিছু আগে টাটা স্টিলের বর্মা মাইনস গেটের কাছে গোলমালের সূত্রপাত। কারখানায় দিন কয়েক হল নতুন নিয়ম চালু হয়েছে যে, কারখানার ভিতরে কোনও শ্রমিক সাইকেল নিয়ে ঢুকতে পারবেন না। কাজের জায়গায় যেতে হবে কারখানার নিজস্ব বাসে চেপে। এ দিন সকালে ঠিকা শ্রমিকরা কারখানার ভিতরে সাইকেল নিয়ে ঢুকতে গেলে নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁদের বাধা দেন। এর পরেই দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে। পরে তা তুমুল গোলমালের চেহারা নেয়।
পাথর ছুঁড়ছেন বিক্ষুব্ধ এক ঠিকা শ্রমিক। ছবি: পার্থ চক্রবর্তী।
টাটা স্টিলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সুরক্ষার কারণে বারবার সংস্থার পক্ষ থেকে কর্মীদের কারখানার ভিতরে বাস ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। কারখানার গুরুত্বপূর্ণ গেটগুলিতে পার্কিং লট গড়া হয়েছে। সেখানে মোটরবাইক কিংবা সাইকেল পার্ক করে কারখানার ভিতরে চলাচলকারী বাস ব্যবহার করেই নিজেদের কাজের জায়গায় পৌঁছতে পারেন কর্মীরা।
কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, নিরাপত্তাকর্মীরা ওই ঠিকা শ্রমিকদের কারখানার ভিতরে সাইকেল না-নিয়ে ঢুকতে অনুরোধ করলেও কিন্তু শ্রমিকরা সে কথা শুনতে চাননি। জোর করে সাইকেল নিয়ে ভিতরে ঢুকতে গেলে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে তাঁদের প্রথমে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। উত্তেজিত শ্রমিকরা নিরাপত্তাকর্মীদের ওপরে চড়াও হন। নিরাপত্তা কর্মীদের ওপরে তাঁরা কারখানার গেটের বাইরে থেকে রীতিমতো পাথর বৃষ্টি করতে থাকেন। পাথরের আঘাতে নিরাপত্তাকর্মীদের কয়েকজন আহত হয়েছেন।
টাটা স্টিলের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, দুষ্কৃতীরা কারখানার গেট ভেঙে আর পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢুকে পড়ে। নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। হঠাৎই দুষ্কৃতীরা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। কুড়ি জন নিরাপত্তাকর্মী আহত হন। তারা গাড়ির ভাঙচুর করা শুরু করে। অনেকগুলি মোটরবাইকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আত্মরক্ষা করতে আর দুষ্কৃতীদের ওপরে নিয়ন্ত্রণ আনতে গিয়ে ছররা বন্দুক চালান নিরাপত্তাকর্মীরা।
নিরাপত্তাকর্মীরা কেন বন্দুক চালালেন প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। বিষয়টি যে ঠিক হয়নি তাও মানছে ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলা তথা জামশেদপুরের পুলিশ। জেলা পুলিশের সিনিয়র সুপারেনটেনড্যান্ট অখিলেশ ঝা বলেন, “টাটা স্টিলের ওই নিরাপত্তাকর্মীদের বিরুদ্ধেও মামলা হবে। কেন গুলি চলল, দেখা হচ্ছে।”
টাটা স্টিলের ওই বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, এই ঘটনার প্রভাব পড়েনি কারখানার কাজকর্মের উপর। ভবিষ্যতে যাতে এ রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না-ঘটে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংস্থা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.