লাল জামা, লাল টুপি। খুদে সান্তা ছুটে বেড়াচ্ছে শপিং মলের লাউঞ্জের এধার-ওধার। ক্যামেরায় সেটাই ধরে রাখতে ব্যস্ত বাবা-মা। সোমবার, বড়দিনের আগের দিন এমন খুশির আমেজেই কাটল দুপুর থেকে রাত। শপিং মল থেকে রেস্তোরাঁ— সর্বত্রই একই ছবি। আজ, বড়দিনেও যে ছবি পাল্টাবে না একটুও। কোথাও বসবে গানের আসর, কোথাও বা খানাপিনা।
দিন কয়েক আগে থেকেই ক্রিসমাস ট্রি, গিফ্ট বক্স, জিঙ্গল বেল-এর সঙ্গে রঙিন আলোয় সেজেছে শহরের শপিং মলগুলো। উৎসবের মেজাজে কোথাও কেনাকাটায় ক্রিসমাস গিফট, কোথাও বাহারি মোমবাতি, কেক, পোশাক, গৃহসজ্জার বিভিন্ন জিনিসে বিশেষ ছাড়। আর ক্রেতাদের ভিড়ে? কলেজপড়ুয়া থেকে মধ্যবয়সী, সদ্যবিবাহিত, প্রবাসী বাঙালি, বাদ নেই কেউই। ক্রিসমাস ইভে স্রেফ আড্ডা মারতেই প্রিয়জনের হাত ধরে হাজির। সান্তার লাল টুপি মাথায় কলেজপড়ুয়া সুদক্ষিণা মুখোপাধ্যায় ও সুনন্দ ভৌমিক অপেক্ষা করছিলেন বন্ধুদের জন্য। বললেন, “অনেক বন্ধুই আসবে। তবে মাথায় এই টুপি পরা মাস্ট।”
প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড থেকে বাইপাসের ধারের শপিং মল— বিকেলের ছবিটা এক্কেবারে এক। আনোয়ার শাহ রোডের মলে বন্ধুদের সঙ্গে দল বেঁধে হাজির কলেজপড়ুয়া অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। |
ক্রিসমাস ইভের প্ল্যান? সহাস্য জবাব, “চুটিয়ে আড্ডা মারা আর খাওয়া-দাওয়া।” তার মধ্যেই উত্তরবঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান সেরে ফেলেছেন ডানকুনির আট বন্ধু। তাঁদেরই এক জন, অনুপম বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “আজ শপিং মলে আসার উদ্দেশ্যটাই হল বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান করা। তাই সবাই মিলে চলে এলাম।” বাইপাসের ধারের মলেও সামনের লাউঞ্জে গান গাইছিল একটা দল। রেস্তোরাঁয় মিলছে বিশেষ কেক। খাওয়া-দাওয়া, কেনাকাটার পাশাপাশি মাল্টিপ্লেক্সেও টিকিটের লম্বা লাইন।
খুশিতে মাতোয়ারা কচিকাঁচারাও। তা না হলে কি বাবা-মায়ের কোলে চেপে ঢাকুরিয়া থেকে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের মলে পৌঁছে যায় এক বছর এক মাসের অণ্ণা? তার বাবা বিমল জয়সোয়াল জানালেন, সান্তাক্লজ সাজিয়ে মেয়েকে আনার মূল উদ্দেশ্যই হল সান্তার সুন্দর সুন্দর স্ট্যাচুর সামনে দাঁড়িয়ে তার ছবি তোলা।
মোজার মধ্যে সান্তার দেওয়া উপহার লুকিয়ে ছোটদের চমকে দেওয়ার খেলায় মেতেছেন বড়রা। বেহালার হৃদি নাগ রায় এসেছিলেন ন’বছরের ছেলেকে নিয়ে গিফ্ট কিনতে। বললেন, “ছেলেকে নিয়ে এলেও ও কিন্তু জানে না কী কিনেছি।” |