শিল্পাঞ্চলে সহায়ক শিল্পের উন্নতির প্রসারে একটি শিল্প-বাণিজ্য মেলা ও প্রদর্শনী আয়োজিত হল আসানসোলের লোকো মাঠে। মেলার মূল উদ্যোক্তা ভারত সরকারের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও অতিক্ষুদ্র শিল্প দফতর (এমএসএমই)। শনিবার আসানসোল বণিকসভা আয়োজিত এই মেলার উদ্বোধন করেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক। প্রদর্শনী চলবে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এমএসএমই-এর উপঅধিকর্তা কৃষ্ণদাস ভট্টাচার্য জানান, মূলত এই শিল্পাঞ্চলের ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র সহায়ক শিল্পপতিদের তৈরি দ্রব্যের গুণগত মানোন্নয়নের উদ্দেশেই এই উদ্যোগ। কী ভাবে এই উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব? জবাবে কৃষ্ণদাসবাবু জানান, এই শিল্পাঞ্চলে ইস্কো, ইসিএল, রেল-সহ একাধিক ভারী রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের পাশাপাশি একাধিক বেসরকারি ইস্পাত ও অন্য শিল্প রয়েছে। এই সংস্থাগুলি নিজেদের প্রয়োজনে ছোটখাটো যন্ত্রাংশ ও উপাদান ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র সহায়ক শিল্প সংস্থার কাছ থেকে কিনে থাকে। সম্প্রতি এমএসএমই-এর কর্তারা শিল্পাঞ্চলের একাধিক জায়গা ঘুরে জানতে পারেন, এই সব সহায়ক যন্ত্রাংশ ও উপাদানের বেশির ভাগই ভারী শিল্পপতিরা বাইরে থেকে কিনে আনছেন। কারণ এখানকার ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদের এই বিষয়ে জ্ঞান না থাকার জন্য তাঁরা সেগুলি তৈরি করতে পারছেন না। আবার স্থানীয় বাজারে সে সব জিনিস না মেলায় ভারী শিল্পপতিরা সেগুলি বাইরে থেকেই কিনছেন। |
কৃষ্ণদাসবাবু আরও জানান, এখানকার ভারী শিল্পপতিদের সঙ্গে ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদের এক জায়গায় বসিয়ে আলোচনা করলে তাঁরা সহজেই উভয় পক্ষের প্রয়োজন মেটাতে পারবেন। কৃষ্ণদাসবাবু বলেন, “এই প্রদর্শনী করে আমরা সেই সেতুবন্ধনের ব্যবস্থা করেছি। ভারী শিল্পপতিরা তাঁদের সহায়ক যন্ত্রাংশের নমুনা হাজির করিয়েছেন। আর ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীরা সে সব দেখে ভারী শিল্পপতিদের চাহিদা বুঝতে পারছেন।” কৃষ্ণদাসবাবু আরও জানান, এ সব দ্রব্য তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া থেকে বাজারিকরণ, সব ক্ষেত্রেই তাঁরা সাহায্য করবেন বলে জানান।
আসানসোল বণিকসভার সভাপতি সুব্রত দত্ত জানান, এলাকার ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদের চাহিদা মেটাতে এই প্রথম শিল্প ও বাণিজ্য মেলার আয়োজন করেছেন তাঁরা। সুব্রতবাবু বলেন, “প্রয়োজনে ইচ্ছুক শিল্পোদ্যোগীদের চাহিদা মতো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব।” শিল্পোদ্যোগী রণজিৎ দাস ও দয়াল পালরা হতাশার সুরে বলেন, “সরকারি ও ব্যাঙ্ক ঋণের আবেদন করেও পাইনি। ফলে শিল্প চালানোই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।” শিল্পোদ্যোগীদের এই সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন এমএসএমই-এর উপঅধিকর্তা কৃষ্ণদাস ভট্টাচার্য। তিনি এ বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। |