নিজস্ব সংবাদদাতা • তারাপীঠ |
এলাকায় পরপর মন্দিরে চুরির ঘটনায় অবশেষে নড়েচড়ে বসল পুলিশ। রবিবার বিকালে এলাকার বিভিন্ন মন্দিরের সেবাইতদের নিয়ে তারাপীঠ পুলিশ ফাঁড়িতে একটি আলোচনাসভা করল মহকুমা পুলিশ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মাড়গ্রাম থানার ওসি তরুণ চট্টরাজ ও তারাপীঠ পুলিশ ফাঁড়ির আধিকারিকেরা। ওই সভায় সেবাইতদের উদ্দেশে বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “আলোচনায় মন্দির চত্বরে নৈশপ্রহরী নিয়োগ করা-সহ বেশ কিছু ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।” পুলিশ সূত্রে খবর, সভায় সেবাইতদের উদ্দেশে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। রাতের দিকে প্রণামীর টাকা ও মন্দিরের বিগ্রহের গয়না (যেগুলি খোলা সহজ) খুলে নিরাপদ জায়গায় রাখতে যেমন পরামশর্র্ দেওয়া হয়েছে, তেমনই যে গয়নাগুলি প্রত্যেক দিন খুলে রাখা সম্ভব নয়, সেগুলির ক্ষেত্রে পুলিশকে দৈনন্দিন রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। মন্দিরের মূল প্রবেশ দ্বার-সহ অন্য দরজাগুলিতে বিপদসঙ্কেত সূচক ঘণ্টা লাগানোর অনুরোধ করা হয়েছে। ওই ঘণ্টা কী ভাবে ব্যবহার করতে হবে তা সভায় একটি বেসরকারি সংস্থার সাহায্যে হাতে কলমে দেখিয়েও দিয়েছে পুলিশ।
ওই আলোচনাসভার পর সেবাইতদের মধ্যে অবশ্য মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ পুলিশের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। আবার অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন গাঁটের কড়ি খরচ করে আমাদেরই যদি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হয়, তা হলে পুলিশ-প্রশাসনের কাজ কি? তারাপীঠের তারামাতা মন্দির সমিতির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। এর আগে এ রকম উদ্যোগ কেউ নেয়নি।” যদিও কামাক্ষ্যা বগলামাতা মন্দিরের সেবাইত তাপস রায়ের মত, “এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের পক্ষে নৈশপ্রহরী নিয়োগ বা বিপদসঙ্কেত রাখার আর্থিক সঙ্গতি নেই। এ বিষয়ে আমাদের পাশাপাশি পুলিশকেই আরও বেশি সক্রিয় হতে হবে।” তবে দু’জনেই ফাঁড়ির বদলে তারাপীঠে পৃথক থানার দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ থানা থাকলে এলাকায় অপরাধ অনেকটাই কমবে এ বিষয়ে দু’জনেই একমত।
প্রসঙ্গত, এ বছর সামগ্রিক ভাবে পুরো জেলা জুড়েই মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটেই চলেছে। শুধু মাত্র চলতি মাসেই তারাপীঠ এলাকায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে চারটি মন্দিরে চুরি হয়েছে। বিগ্রহের গয়না ও প্রণামীর বাক্সের টাকা নিয়ে চোরেরা চম্পট দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত সব ঘটনাতেই কাউকে গ্রেফতার বা চুরি যাওয়া সামগ্রী উদ্ধার, কোনওটাই করতে পারেনি পুলিশ। |