৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে বেলডাঙা-১ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিকাঠামো গত নানা সমস্যায় জর্জরিত। মূল ফটক দিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে ভগ্নপ্রায় ভবন। ছাদ ভেঙে পড়ার উপক্রম। ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন বসে আউটডোর। এছাড়াও উপযুক্ত স্বাস্থ্য পরিষেবাও মেলেনা হাসপাতালে। অভিযোগ, সামান্যতেই রোগীদের রেফার করে দেওয়া হয় জেলা হাসপাতালে। ডায়েরিয়া আক্রান্তদের জন্য পৃথক কোনও ব্যবস্থা নেই। সাধারণ রোগীদের সঙ্গেই তাঁদের চিকিৎসা হয়। শিশুদের জন্যও নেই আলাদা ব্যবস্থা। ২৫ শয্যার এই হাসপাতালে পুরুষ বিভাগটি প্রায় অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। রাতে হাসপাতাল চত্বরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। সন্ধ্যা নামতেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যেই শুরু হয় অসামাজিক লোকজনের আনাগোনা। প্রতিদিন গড়ে ৭০০ রোগী এই হাসপাতালে আসেন। রেজিনগর, নওদা ও বেলডাঙার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এখানে রোগীরা আসেন। কিন্তু তাঁরা উপযুক্ত পরিষেবা পান না। আউটডোরে চিকিৎসকের উপস্থিতি নিয়ে রোগীদের অভিযোগের অন্ত নেই। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই হাসপাতালে ৫ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ৪ জন। ১৮ জন জিডিএ স্টাফের জায়গায় রয়েছেন মাত্র ৯ জন। সুইপার রয়েছেন সাকুল্যে ৩ জন। ফলে পরিষেবাগত সমস্যা যে রয়েছে তা মানছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। বেলাডাঙার মির্জাপুরের বাসিন্দা সামসের আলি বলেন, “ডায়েরিয়া আক্রান্ত নাতি ভর্তি করেছিলাম। শয্যার পরিবর্তে তাকে মেঝেতে থাকতে হয়েছিল। ফলে ডায়েরিয়া সারাতে এসে সর্দিতে আক্রান্ত হয় সে।” ঝুনকা গ্রামের সুলেখা বিবির কথায়, “প্রসবের পর সদ্যোজাতকে নিয়ে টানা ৩ দিন আমাকে সাধারণ রোগীদের সঙ্গেই কষ্ট করে কাটাতে হয়েছিল।”
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সাধারণ পেটে যন্ত্রণার চিকিৎসাও হাসপাতালে হয় না। মহলার বাসিন্দা সতীনাথ বিশ্বাস বলেন, “পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে যাই। তৎক্ষনাৎ আমাকে বহরমপুরে রেফার করে দেওয়া হয়।” হাসপাতালেরই এক চিকিৎসক বলেন, “১৯৫৫ সালে তৈরি এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মূল সমস্যা অপ্রতুল কর্মী সংখ্যা। তাই পরিষেবা ঠিকঠাক দেওয়া যাচ্ছে না। তার উপর মেল ওয়ার্ডের ভবনটি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আলোর অভাবের দরুন নিরাপত্তার সমস্যাও রয়েছে। এ ছাড়াও কর্মী আবাসনগুলিরও ভগ্নদশা।” রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র অমিত বিশ্বাস বলেন, “সমস্যা থাকলে আস্তে আস্তে সমাধানের চেষ্টা হবে।” |