বন্ধ্যাকরণের অস্ত্রোপচারের পরে দুই মহিলার মৃত্যুর ঘটনার সোমবার তদন্তে আসানসোলে এলেন স্বাস্থ্য দফতরের অতিরিক্ত অধিকর্তা (পরিবার পরিকল্পনা) তন্ময় মুখোপাধ্যায়। সে দিনের ঘটনা নিয়ে তাঁকে সবিস্তার রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আসানসোল স্বাস্থ্যজেলার মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক অরিতা সেন চট্টোরাজ। অস্ত্রোপচারের সময়ে বহিরাগত এক চিকিৎসকের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থাকার ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শুক্রবার বারাবনির কেলেজোড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বন্ধ্যাকরণের অস্ত্রোপচারের সময় দু’জন অসুস্থ হন। তাঁদের আসানসোল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ হয়। এর পরে সে দিন অস্ত্রোপচার হওয়া আরও ৩৭ জনের বাড়িতে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে একটি চিকিৎসক দল। রবিবার এক জনের শারীরিক পরিস্থিতির সামান্য অবনতি হলে তাঁকে আসানসোল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, এখন তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।
ওই অস্ত্রোপচারের দিন এক বহিরাগত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সরকারি শিবিরে অস্ত্রোপচারের সময়ে কী ভাবে এক জন বহিরাগত চিকিৎসক থাকলেন, তা নিয়ে সরব হয়েছে সিপিএম এবং তৃণমূল। বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ মিনু দেবনাথের দাবি, “আমরা কেউ জানতাম না, এক বহিরাগত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসককে অস্ত্রোপচারের কাজে রাখা হয়েছে। কী ভাবে এমন হল, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে জানতে চেয়েছি।” তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সিপিএমের আসানসোল জোনাল কমিটির সম্পাদক পার্থ মুখোপাধ্যায় ও বারাবনির যুব তৃণমূল নেতা পাপ্পু উপাধ্যায়ও।
সে দিনের বন্ধ্যাকরণ শিবিরের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক তথা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আসিফ সিরাজ বহিরাগত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের হাজির থাকার কথা স্বীকার করেন। তাঁর বক্তব্য, “ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রাক্তন এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসককে আমরা সহযোগিতা করার কাজে রেখেছিলাম। তবে তিনি নিজে অস্ত্রোপচার করেননি। অস্ত্রোপচারের আগে ও পরে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করছিলেন।” এই ধরনের শিবিরে স্বাস্থ্যপরীক্ষার কাজে বহিরাগত অনভিজ্ঞ চিকিৎসককে রাখা অনুচিত কি না, সে প্রশ্নে আসিফ সিরাজ বলেন, ‘‘হ্যাঁ, এটি বেনিয়ম হয়েছে।’’
শিবিরে বহিরাগত চিকিৎসক থাকার কথা তাঁর জানা ছিল না দাবি করে মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক অরিতা সেন চট্টোরাজ বলেন, “এমন হলে তা অবশ্যই বেনিয়ম। এই সব বিষয়ই অতিরিক্ত অধিকর্তা খতিয়ে দেখবেন।” |