শেষমেশ নোটিসই টাঙিয়ে দিলেন রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আপাতত রক্ত সরবরাহের ক্ষেত্রে কোনও রকম পরিষেবাই দেওয়া সম্ভব নয় বলে সোমবার সকালে ওই নোটিসে জানিয়ে দিয়েছেন হাসপাতাল সুপার হিমাদ্রি হালদার। হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে ও ব্লাড ব্যাঙ্ক লাগোয়া দেওয়ালে টাঙানো ওই নোটিসে প্রয়োজনীয় সরবরাহ না থাকায় জরুরি ও জটিল বিষয় ছাড়া কোথাও (হাসপাতাল অথবা নার্সিংহোমে) কোনও ক্ষেত্রেই রক্ত সরবরাহ করা যাবে না।
হাসপাতালের সুপার বলেন, “ঝামেলা এড়াতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে রক্তের প্রয়োজনে বহু লোক আসছেন। তাঁদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের যে কোনও গাফিলতি নেই, তা জানাতেই ওই নোটিস। প্রয়োজনীয় জিনিস পেলেই সমস্যা মিটে যাবে।” |
এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কে আছেন হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরাও। তাঁদের আশঙ্কা পরিষেবা না পেয়ে রোগীর লোকজন যেকোনও দিন তাঁদের উপর চড়াও হতে পারেন। ওই কর্মীরা বলেন, “আমরা বারবার সমস্যা মেটাতে ব্লাড ব্যাঙ্কের বর্ধমান রিজিওন্যাল সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তাঁরা প্রথম দিকে কোনও সদুত্তর দেয়নি।” তাঁরা জানিয়েছেন, এ দিনই স্বাস্থ্য ভবন থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল। মঙ্গলবার বর্ধমানে যেতে বলা হয়েছে। যদিও তাঁদের অভিযোগ, ব্যাগ পেলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রক্ত পরীক্ষা করার জন্য যে নির্দিষ্ট পাঁচ ধরনের কিট দরকার তা দেওয়া হয় না। এ বারও এমনটাই হবে বলেই তাঁরা মনে করছেন। জোড়াতালি দিয়ে সমস্যার সামগ্রিক সমাধান সম্ভব নয় বলেই তাঁরা মনে করেন। তাঁদের দাবি, যে পরিমাণ রক্ত সংগ্রহ করার ব্যাগ দেওয়া হয়, ওই পরিমাণ কিট দেওয়া হলে অনেকটাই সমস্যা মিটবে।
যদিও ব্লাড ব্যাঙ্কের বধর্র্মান রিজিওন্যালের ডিরেক্টর সোমা দত্ত বলেন, “সাময়িক একটা অসুবিধা হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে যেতে বলা হয়েছে।”
এ দিকে মহকুমা হাসপাতালের পরিষেবার এই বেহাল অবস্থা কেন এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সিপিএমের রামপুরহাট ২ জোনাল কমিটি। তাঁরা ইতিমধ্যেই হাসপাতাল সুপার ও রামপুরহাটের মহকুমাশাসককে (ওই হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান) এ নিয়ে একটি স্মারকলিপিও জমা দিয়েছে। সিপিএমের রামপুরহাট ১ জোনাল কমিটির সম্পাদক সঞ্জীব বর্মণ ও রামপুরহাট ১ লোকাল কমিটির সম্পাদক কানাইলাল দাসরা বলেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখের এবং লজ্জার। এই অব্যবস্থার যারা দায়ী তাদের চিহ্নিত করা দরকার।” তাঁদের দাবি, শুধু মহকুমাই নয় আশেপাশের কয়েকটি জেলা ও ঝাড়খণ্ডের বহু মানুষ এই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে এমন চলতে থাকলে রক্তের পরিষেবার অভাবে যেকোনও দিন বড়সড় বিপদ হতে পারে বলেই তাঁদের আশঙ্কা। অবিলম্বে রক্ত সরবরাহে তৈরি হওয়া সমস্যার প্রতিকার চেয়েছেন তাঁরা। |