বেআইনি বাণিজ্যিক নির্মাণ ভাঙার কাজ এক মাসের মধ্যেই ফের শুরু হবে বলে দাবি করলেন বিল্ডিং বিভাগের নতুন মেয়র পারিষদ সঞ্জয় পাঠক। সোমবার দায়িত্ব নেওয়ার পরে তিনি জানান, যাবতীয় নথি খতিয়ে দেখার এক মাসের মধ্যে ওই অভিযান ফের শুরু হবে। ওই ঘোষণার পরেই পুরসভার অন্দরেই কর্মী-অফিসারদের একাংশে শুরু হয়েছে আলোচনা। কারণ, বেআইনি নির্মাণের তালিকা তৈরি করে তা ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। কাজও শুরু হয়েছিল। তিনটি ভবন ভাঙাও হয়। প্রভাবশালী মহলের চাপে ওই অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। যেখানে সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছে, সেখানে ফের খতিয়ে দেখা মানে অভিযান পিছিয়ে দেওয়া কি না, তা নিয়েই চলছে নানা জল্পনা।
বস্তুত, বেআইনি বাণিজ্যিক ভবন ভাঙা নিয়ে শহরে হইচই হওয়ায় পুর কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরেই অস্বস্তিতে রয়েছেন। কংগ্রেসের অন্দরের খবর, তখনই মেয়র পারিষদ সীমা সাহাকে সরানোর প্রস্তুতি শুরু হয়। ফলে, পুরসভায় জল্পনা শুরু হয়, নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া মানেই পুর-অভিযান অন্তত এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হবে। এমনকী, অভিযোগ ওঠে, পুরসভায় দাঁড়িয়ে কয়েকজন প্রোমোটর আর কোনও বেআইনি নির্মাণ এখনই ভাঙা হবে না বলে দাবি করেছেন। পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের মুন্সি নুরুল ইসলামও মেয়র পারিষদ বদল করে মুখ রক্ষার উপায় খোঁজা হচ্ছে বলে কটাক্ষ করেন। এর পরেই শুক্রবার মেয়র পারিষদ সীমা দেবীকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় সঞ্জয় পাঠককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সঞ্জয়বাবু ছিলেন বস্তি উন্নয়নের দায়িত্বে। এদিন সঞ্জয়বাবু দায়িত্ব গ্রহণ করে অফিসার-কর্মী-ইঞ্জিনিয়রদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি জানিয়ে দেন, শহরে অবৈধ নির্মাণ নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও উঠেছে। এ বার থেকে দফতরের নামে কোনও বদনাম তিনি সহ্য করবেন না। মেয়র পারিষদের নির্দেশে ‘কর্মই ধর্ম’ এবং ‘সততার সঙ্গে কাজ করতে হবে’ এই কথা লিখে দফতরে ঢোকার মুখে টাঙিয়ে দিতে কর্মীরা টাঙিয়ে দেন। সঞ্জয়বাবু বলেন, “শহরে অবৈধ নির্মাণ নিয়ে নানা অভিযোগ উঠছে। দায়িত্ব গ্রহণ করে সেগুলির ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছি। অনেকে বলছেন অবৈধ নির্মাণের যে সমস্ত অভিযোগ রয়েছে তা ‘হিমঘর’-এ যাবে। তা হবে না। এক মাসের মধ্যেই সেগুলির বিরুদ্ধে যাতে ব্যবস্থা নিতে পারি সে জন্য সচেষ্ট হব।” শহরের কোথাও কোনও অবৈধ নির্মাণ এবং বিল্ডিং বিভাগের কাজকর্ম নিয়ে কারও প্রশ্ন থাকলে তা জানাতে পুরসভায় ‘অভিযোগ বাক্স’ থাকবে বলেও জানিয়েছেন। যেখানে অবৈধ বাণিজ্যিক নির্মাণ ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শেঠ শ্রীলাল মার্কেটে আদর্শ মহাবিদ্যালয় ভবনকে বাণিজ্যিক ভবনে পরিবর্তন কারর কাজও প্রাক্তন মেয়ার পারিষদ সীমা দেবী বন্ধ করে দিয়েছেন। নকশা অনুমোদন ছড়াই ১১টি বাণিজ্যিক ভবনের অবৈধ নির্মাণ-এর বিষয়টি পুর কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছেন। শহরে ছোট বড় অন্তত ২৫০ টি অবৈধ বণিজ্যিক নির্মাণের অভিযোগের কথা স্বীকারও করেন পুর কর্তৃপক্ষ। তালিকাও তৈরি রয়েছে। সেখানে তা কার্যকর করতে এক মাস লাগবে কেন? সেই প্রশ্নে সঞ্জয়বাবুর যুক্তি, “সব দিক খতিয়ে দেখেই এগোতে হবে।” |