রাজ্যের গ্রামীণ থানাগুলির লোকবল ও অস্ত্রবল কেমন, জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। তাদের প্রশ্ন, গ্রামীণ থানাগুলিতে কত পুলিশ আছে? তাদের হাতে কী ধরনের অস্ত্র রয়েছে? তাদের সেই অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ আছে কি? একটি জনস্বার্থের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার সরকারি কৌঁসুলির কাছে এই সব তথ্য জানতে চান।
মামলাটি হয় ২০০৯ সালে, বামফ্রন্টের আমলে। যশোবন্ত রক্ষিত নামে এক ব্যক্তি তাঁর আবেদনে বলেন, কলকাতায় অনেক সরকারি ও বেসরকারি স্কুল আছে। সেখানে কয়েক হাজার ছাত্র পড়ে। কিন্তু ওই সব এলাকাতেও যথেষ্ট পুলিশি নজরদারি নেই। আসলে লোকসংখ্যার অনুপাতে সারা রাজ্যেই পুলিশের সংখ্যা কম। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন সরকার আদালতে স্বীকার করে, লোকসংখ্যার অনুপাতে রাজ্যে পুলিশের সংখ্যা সত্যিই কম। সেই ঘাটতি মেটাতে সরকার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সরকারের বক্তব্য ছিল, পুলিশে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে এক বছরেরও বেশি সময় লাগে। ইতিমধ্যে কলকাতা পুলিশে প্রায় তিন হাজার যুবককে নিয়োগ করা হয়েছে। মামলা চলাকালীন আরও তিন হাজার লোককে পুলিশে নিয়োগ করার অনুমতি চায় সরকার। হাইকোর্ট সেই অনুমতি দেয়। মামলাটিও চলতে থাকে। তারই শুনানি হয় এ দিন।
আদালতের বক্তব্য, জঙ্গি হানার ব্যাপারে কেন্দ্র এবং তাদের গোয়েন্দা দফতর বারবার রাজ্যকে সতর্ক করে দিয়েছে। যে-কোনও সময়েই রাজ্যে বড় ধরনের জঙ্গি হামলা হতে পারে। রাজ্যের তিনটি জেলা মাওবাদী প্রভাবিত বলেও ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। এই অবস্থায় রাজ্য কী ব্যবস্থা নিয়েছে, আদালত তা জানতে চায়। সরকারি আইনজীবী তপন মুখোপাধ্যায় একটি রিপোর্ট দিয়ে আদালতে বলেন, রাজ্য সরকার সব রকম ব্যবস্থাই গ্রহণ করেছে। পুলিশকে আধুনিক অস্ত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোথায় কত অস্ত্র দেওয়া হয়েছে, সে-সব চালানোর জন্য কর্মীদের কোনও প্রশিক্ষণ হয়েছে কি না, কারাই বা প্রশিক্ষণ দিয়েছেন, তার কোনও জবাব সরকারি আইনজীবী দিতে পারেননি। এর পরেই রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে এ ব্যাপারে সবিস্তার রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেয় বেঞ্চ।
কেন্দ্রের আইনজীবী ভাস্কর বৈশ্য বলেন, জঙ্গি হামলা কিংবা মাওবাদী আক্রমণ রুখতে রাজ্যকে যথেষ্ট অর্থ ও আধুনিক অস্ত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কী ভাবে তা ব্যবহার করা হয়েছে বা হচ্ছে, তা জানা নেই। বৈশ্য আদালতে জানান, পুলিশবাহিনীকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়ার দায়িত্ব রাজ্যের। তবে ওই কাজে তারা যদি অপারগ হয়, তা হলে কেন্দ্র সেই ব্যবস্থা করতে পারে। |