কেন্দ্র-রাজ্য সেট টপ দ্বন্দ্বে বিপাকে এমএসও
কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ২৭ ডিসেম্বরের মধ্যে সেট টপ বক্স লাগাতেই হবে। কিন্তু এই নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরোধিতায় বিভ্রান্তি বাড়ছে। ওই দিনের মধ্যে অ্যানালগ সিগন্যাল বন্ধ না-করলে মাল্টি সিস্টেম অপারেটরদের (এমএসও) লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্য সরকার তা মানতে চাইছে না। তাদের বক্তব্য, কেন্দ্র যা-ই বলুক না কেন, কলকাতায় ওই দিনের পরে অ্যানালগ সিগন্যাল বন্ধ করা যাবে না।
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সোমবার বলেন, “কয়েক জন এমএসও-কে দিল্লিতে হাইজ্যাক করে নিয়ে গিয়ে জোর করে মুচলেকা লিখিয়ে নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু ব্যবসা করতে হবে তো এখানে। মুচলেকা-ফুচলেকা মানি না।” কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে ‘মাস্তানি’ আখ্যা দিয়ে ফিরহাদের হুঁশিয়ারি, “এর পরিণাম ভাল হবে না।”
রাজ্য ও কেন্দ্রের এই বিরোধের জাঁতাকলে বিপাকে পড়েছেন এমএসও-রা। তাঁদের লাইসেন্স বাতিল হলে সমস্যায় পড়বেন সাধারণ মানুষও। বস্তুত সাধারণ মানুষের ‘ক্ষোভ’-এর কথা বলেই কেন্দ্রের কঠোর সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় নেমেছে রাজ্য সরকার। ফিরহাদ বলেন, “কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের লাইসেন্স বাতিল করার অধিকার আছে বলেই কি জোর খাটাবে? আর এখানে অ্যানালগ সিগন্যাল বন্ধ হয়ে গেলে যদি আইনশৃঙ্খলার সমস্যা দেখা দেয়, সেটা সামলাবে কে? তাই আমরা কোনও সময়সীমা মেনে নেব না।”
কেবল অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠক ববি হাকিমের। —নিজস্ব চিত্র
তা হলে সমস্যা মিটবে কী ভাবে?
ফিরহাদের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা এখানে এসে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করুন। বাস্তব পরিস্থিতি কী, সেটা জানুন। প্রয়োজন হলে তিনি অথবা মুখ্যসচিব দিল্লিতে গিয়েও এই ব্যাপারে আলোচনা করতে পারেন। তা না-করে দিল্লিতে বসে একতরফা জোর খাটানো চলবে না বলে জানান তিনি।
এর আগে, এ দিন দুপুরে মহাকরণে সব এমএসও এবং অপারেটরদের কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেন নগরোন্নয়ন মন্ত্রী। বৈঠকে তিনি ওই প্রতিনিধিদের জানিয়ে দেন, কেন্দ্র যা-ই বলুক, এমএসও-রা অ্যানালগ সিগন্যাল বন্ধ করার চেষ্টা করলে রাজ্য সরকার তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
নগরোন্নয়ন মন্ত্রীর ক্ষোভ, কেন্দ্রীয় সরকার বিদেশের হাতে খুচরো ব্যবসা থেকে শুরু করে বিমা ব্যবসা পর্যন্ত সবই তুলে দিচ্ছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লক্ষ লক্ষ বিদেশি সেট টপ বক্স। কারণ একটি চিনা এবং একটি কোরীয় কোম্পানির সেট টপ বক্সই কেনা হচ্ছে। তাঁর প্রশ্ন, “দেশের এত অর্থ কোন যুক্তিতে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে? এর পিছনে কি কাটমানি খাওয়ার বন্দোবস্ত হয়েছে?”
কেন্দ্র ও রাজ্যের এই কাজিয়ায় সাধারণ মানুষ কী করবেন?
ইন্দু মিত্র নামে সল্টলেকের এক বাসিন্দা জানালেন, তিনি এতটাই বিরক্ত যে, ডিশ টিভি কিনে নেবেন বলে স্থির করে ফেলেছেন। একই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যাদবপুরের অরুণিমা চৌধুরীর মতো আরও অনেকে।
রাজ্য সরকারের এই বিরোধিতায় ব্যবসা হারাচ্ছেন এমএসও-রা। একটি এমএসও সংস্থার বড়কর্তা বলেন, “রাজ্য সরকার এর মধ্যে ঢুকে পড়াতেই গোলমাল শুরু হয়েছে। দিল্লি বা মুম্বইয়ে তো রাজ্য সরকারকে হস্তক্ষেপ করতে হয়নি। এখানে মহাকরণে এক রকম ফতোয়া দেওয়া হচ্ছে। আবার দিল্লি থেকে আমাদের লাইসেন্স বাতিলের হুমকি আসছে। আমরা কোন দিকে যাব?” প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের মতে, সেট টপ বক্স নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা করে নিজেদের পায়েই কুড়ুল মারছে রাজ্য সরকার। কী ভাবে? ওই কর্তা বলেন, রাজ্য প্রতি মাসে এই খাতে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.