সেতু চাই, খাদ্যমন্ত্রীকেই আর্জি গ্রামবাসীর
তিনি খাদ্যমন্ত্রী। জেলায় এসেছেন সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনার সূচনা করতে। সড়ক বা সেতু সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান তাঁর দফতরের হাতে নেই। তবু মন্ত্রী তো! তাই তাঁকেই সামনে পেয়ে নদীতে সেতু না থাকার ক্ষোভ উগরে দিলেন বান্দোয়ানের পাহাড়কোল, পচাপানি, লুকাপানি, আসনবনি গ্রামের মহিলারা।
সোমবার খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জঙ্গলমহলের বোরো ও বান্দোয়ান ব্লকের চাষিদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার জন্য চারটি কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ওই চারটি কেন্দ্রের একটি বান্দোয়ানের দুয়ারসিনিতে। অন্য তিনটি বোরো থানা এলাকায়। পাশাপাশি বোরো থানার বারি গ্রামের একটি চালকল এবং শুশুনিয়া আদিবাসী ল্যাম্পস-এ (লার্জ সাইজড এগ্রিকালচারাল মাল্টিপারপস কো-অপারেটিভ সোসাইটি) গিয়ে তিনি চাষিদের হাতে ধান কেনার চেক তুলে দেন। এক সময়ের মাওবাদী উপদ্রুত ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া দুয়ারসিনিতে খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের আর এক মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। প্রত্যাশিত ভাবেই দুয়ারসিনিতে মন্ত্রীদের বক্তব্যে মাওবাদী প্রসঙ্গের কথা উঠেছে। জ্যোতিপ্রিয়বাবু ও শান্তিরামবাবুর কথায়, “আগে খবরের কাগজ খুললেই বান্দোয়ানে মাওবাদী নাশকতার কথা থাকত। আগের সরকার প্রচুর ভুল করেছে। এখন বান্দোয়ানের মানুষ শান্তিতে আছেন।”
ধান পরীক্ষা করে দেখছেন খাদ্যমন্ত্রী। ছবি: প্রদীপ মাহাতো।
রক্ষী-নিবাস হবে, এই সন্দেহে মাওবাদীরা ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে দুয়ারসিনিতে রাজ্য পুলিশের নির্মীয়মাণ ভবন ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে উড়িয়ে দিয়েছিল। এ দিন ওই ভাঙাচোরা ভবনের চত্বরেই ধান কেনার সূচনা করতে যাওয়া খাদ্যমন্ত্রীকে হাতের কাছে পেয়ে গ্রামের মহিলারা তাঁদের ক্ষোভের কথা জানালেন। ক্ষীরাবালা সিং, রসনা সিং, রমলা সিংরা মন্ত্রীর বক্তব্যের মাঝখানেই উঠে পড়ে বিলেন, “আমরা দুয়ারসিনির ও-পারে পচাপানি, আসনবনি, লুকাপানি, পাহাড়কোল গ্রামের বাসিন্দা। সাতগুড়ুং নদীতে জল থাকায় আষাঢ় থেকে ভাদ্র মাস বান্দোয়ান বাজারে যেতে পারি না। সামান্য নুন তেলের জোগাড় করতেও হিমশিম খেতে হয়।”
সব শুনে এ বিষয়ে বিভাগীয় মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু। গ্রামবাসীরা অবশ্য বলেন, “কে কী বিভাগ দেখেন, জানি না। এক সঙ্গে জোড়া মন্ত্রীকে পেয়েছি। সমস্যার কথা জানাব না!”
দুয়ারসিনিতে পা রেখেই খাদ্যমন্ত্রী বাসিন্দাদের কাছে জানতে চান, দু’টাকা কেজি দরে চাল তাঁরা পান কি না বা রেশন কার্ড আছে কি না। কারও সমস্যা থাকলে বিডিও-র মাধ্যমে অভিযোগ জানাতে বলেন খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “যে আধিকারিকের ত্রুটিতে চাল পাননি অথবা রেশন কার্ড হয়নি, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” দুই মন্ত্রীই এক সুরে জানিয়েছেন, ফড়েরা যাতে অভাবী বিক্রির সুযোগ নিতে না পারে, সে জন্য রাজ্যের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে অন্তত একটি করে ধান কেনার কেন্দ্র গড়ার চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্য সরকার। চলতি বছরে ধানের সহায়ক মূল্য কুইন্টাল প্রতি ১২৫০ টাকা করে রাখা হয়েছে।
এ দিন বিকেলে পুরুলিয়া সার্কিট হাউসে জেলা চালকল মালিক সংগঠন এবং রেশন ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি ও দফতরের কর্তাদের সঙ্গে দুই মন্ত্রী বৈঠক করেন। গণবণ্টন ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। খাদ্যমন্ত্রী উপস্থিত প্রতিনিধিদের বলেন, ধান কেনার প্রক্রিয়ার পাশাপাশি দরিদ্র কৃষকদের চিহ্নিত করে বিশেষ শিবিরের মাধ্যমেও ধান কিনতে হবে। আগামী জানুয়ারিতে বাঘমুণ্ডি দিয়ে এই ধরনের শিবির শুরু হবে জেলায়। গরিব কৃষকদের চিহ্নিতকরণের কাজ করবে ব্লক অফিস ও খাদ্য দফতর। যে-সব এলাকায় এখনও অনেকের রেশন কার্ড হয়নি, সেখানেও ১৫-৩০ জানুয়ারি বিশেষ শিবির করে কার্ড দেওয়ার নির্দেশ দেন খাদ্যমন্ত্রী।

(সহ প্রতিবেদন: প্রশান্ত পাল)



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.