বেসরকারি বাসের বর্ধিত ভাড়া নাকি সংশোধিত ভাড়া— কোনটি ঠিক তা নিয়ে বিভ্রান্তি অব্যাহত। অন্তত নবদ্বীর ও তাকে ঘিরে চলাচল করা বেসরকারি বাসের যাত্রীরা নিত্য এ সমস্যায় ভুগছেন। বাসকর্মীদের সঙ্গে বচসা প্রায় নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। এর জেরে বেশ কয়েকটি রুটে বেসরকারি বাস মালিকেরা রুটে বাস নামাতেই চাইছেন না। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির জেরে সরকার ১ নভেম্বর বেসরকারি বাসে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। বর্ধিত ভাড়া অনুয়ায়ী প্রথম ৬ কিলোমিটারের জন্য ৬ টাকা ভাড়া নির্ধারণ হয়। এ ছাড়াও পরবর্তী কিলোমিটার পিছু ৫৫ পয়সা করে বেড়েছিল ভাড়া। এর ফলে আগের থেকে এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছি বাস ভাড়া। রাজ্য জুড়ে তৈরি হয় অসন্তোষ। তারই জেরে ১৬ নভেম্বর রাজ্য পরিবহণ দফতর সংশোধিত ভাড়া তালিকা প্রকাশ করে। সংশোধিত হার অনুসারে প্রথম ৪ কিলোমিটারের জন্য ৫ টাকা ও পরবর্তী কিলোমিটার প্রতি ৫০ পয়সা হারে ভাড়া বাড়ার কথা বলা হয়।
কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ, বাসকর্মীরা ১ নভেম্বরের বর্ধিত ভাড়াই নিয়ে চলেছেন। নবদ্বীপ-কৃষ্ণনগর ভায়া গৌরাঙ্গ সেতু রুটের নিত্যযাত্রী তথা নবদ্বীপ ট্রাভেলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দিলীপ দাস বলেন, “পুরোনো হারে নবদ্বীপ বুড়োশিবতলা থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত ভাড়া ছিল ১১ টাকা। বর্ধিত হার অনুয়ায়ী সেই ভাড়া হয় ১৪ টাকা। কিন্তু ভাড়া সংশোধনের পরেও পয়লা নভেম্বর বেনে যাওয়া ভানা আর কমেনি। এই নিয়েই নিত্য সমস্যা হচ্ছে।”
বাসকর্মীদের পাল্টা বক্তব্য, আমাদের কাছে কোনও সংশোধিত ভাড়ার তালিকাই আসেনি। মালিকরা যা ভাড়া নিতে বলছেন আমরা তাই নিচ্ছি। নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির অন্যতম কর্মকর্তা অসীম দত্ত বলেন, “শুনেছি নতুন করে ভাড়ার হার সংশোধন করা হয়েছে। কিন্তু সেই তালিকা তাদের হাতে আসেনি। তবে বাস মালিকদের দাবি, সংশোধিত ভাড়া মেনে বাস চালালে লোকসান নিশ্চিত। জেলা নিত্য বাসযাত্রী সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত দে বলেন, “মালিক চান না সরকার নির্ধারিত কম ভাড়ায় যাত্রীরা যাতায়াত করুক। তাই নতুন তালিকা গোপন রেখে যাত্রী হয়রান করা হচ্ছে।” নদিয়ার রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অফিসার মলয় রায় বলেন, “নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে সমস্ত বাস মালিক সমিতির কাছে সংশোধিত ভাড়ার তালিকা পাঠানো হয়েছে। তাও বর্ধিত হারে ভাড়া আদায়ের নালিশ পাচ্ছি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।” কিন্তু বাস মালিকেরা লোকসানে বাস চালাবেন কেন? সরকারি তরফে উত্তর মেলেনি। |