এনসিসি বিভাগের অফিসার (এএনও) নিয়োগের দাবিতে ঘাটাল কলেজ বন্ধ রেখে আন্দোলনে নামলেন ওই বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা। সোমবার কলেজের অধ্যক্ষের দফতর-সহ সংশ্লিষ্ট সমস্ত বিভাগের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন বিক্ষুব্ধরা। এর জেরে কলেজে আর পঠনপাঠন হয়নি এদিন। আভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন পরীক্ষাও স্থগিত হয়ে গিয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ এনসিসি-র অফিসার নিয়োগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীরা।
ঘাটাল কলেজে ওই বিভাগটি এনসিসি-র ৪৫ নম্বর ব্যাটেলিয়নের অধীন। দীর্ঘ ছ’বছর ধরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এই কলেজে এনসিসি বিভাগের জন্য অ্যাসোসিয়েট কোনও অফিসার নেই। নিয়মানুযায়ী, কলেজে ওই বিভাগটির জন্য নির্দিষ্ট এক জন এএনও প্রয়োজন। তাঁকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কলেজের শিক্ষক হতে হবে, বয়স চল্লিশের মধ্যে। ইচ্ছুক শিক্ষককে এনসিসি-র পক্ষ থেকেই তিন মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বাড়তি দায়িত্ব নেওয়ার জন্য একটা ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কলেজের কেউ এএনও হতে রাজি নন। কলেজের পরিচালন কমিটির তরফে ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই বলেন, “আমরা বহু বার শিক্ষকদের বলেছি। কিন্তু কেউই এগিয়ে আসেননি।” |
এ দিক, দীর্ঘ দিন ধরেই কলেজ কর্তৃপক্ষকে অফিসার নিয়োগের জন্য বলছে ৪৫ নম্বর ব্যাটেলিয়ন। কাজ না হওয়ায় পুজোর আগে এনসিসি বিভাগটি তুলে দেওয়ার কথা তারা বললে কলেজে ওই বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা আন্দোলনে নামেন। তখন কলেজ কর্তৃপক্ষ এক শিক্ষকের অনুপস্থিতিতেই তাঁর নাম ঠিক করে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু তিনি পরে দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করলে জট রয়েই যায়।
সম্প্রতি ঘাটাল কলেজে ওই বিভাগটিকে সাসপেন্ড ঘোষণা করে এনসিসি। নিয়ম মতো, আর ৪৫ দিনের মধ্যে অফিসার নিয়োগ না-হলে বিভাগটি বন্ধ হয়ে যাবে। অথচ, জন্মলগ্ন থেকেই ওই বিভাগটি চালু রয়েছে কলেজে। প্রায় ২০ হাজার ছাত্র-ছাত্রী ঘাটাল কলেজ থেকে এনসিসি করেছেন। ওই সার্টিফিকেটের সৌজন্যে অনেকে চাকরিও পেয়েছেন। এখন কলেজের মোট ২০০ জন ছাত্র-ছাত্রী বিভাগটির সঙ্গে যুক্ত। আচমকাই বিভাগটি বন্ধ হতে বসেছে শুনে মাথায় হাত পড়েছে তাঁদের। তাই সোমবার কলেজের সব বিভাগ বন্ধ রেখে আন্দোলনে নেমেছেন ছাত্র-ছাত্রীরা।
তাঁদের অভিযোগ, কলেজ কর্তৃপক্ষ এনসিসি বিভাগটিকে গুরুত্ব না দেওয়ায় এই অবস্থা। কলেজের অধ্যক্ষ ভোলানাথ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “কোনও শিক্ষক এএনও হতে রাজি না হওয়ায় সমস্যা হয়েছে। এই নিয়ে একটা জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সাসপেন্ড তুলতে দ্রুত এক জন শিক্ষককে অফিসার হিসাবে নিয়োগ করা হবে।” দ্রুত অফিসার নিয়োগের ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীও। |